Tuesday, March 21, 2017

ওযুর ফরয ও সুন্নাত সমূহ

ওযুর ফরয ৪টি
১. সমস্ত মুখ একবার ধৌত করা। (সূরা মায়িদা, আয়াত নং ৬)
২. দুই হাত কনুইসহ একবার ধৌত করা। (ঐ)
৩. মাথার এক চতুর্থাংশ একবার মাসাহ করা। (ঐ)
৪. উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা। (ঐ)
ফায়দা : উপরোক্ত চারটি কাজের কোন একটি না করলে বা এর মধ্যে এক চুল পরিমাণও শুকনা থাকলে উযু সহীহ হবে না।
(প্রমাণ: শামী, ১:৯১/ আল বাহরুর রায়িক, ১:৯/ হিদায়া, ১:১৬)

উযুর সুন্নাত সমূহ
১. উযুর নিয়ত করা অর্থাৎ উযুকারী মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, পবিত্রতা অর্জন করা ও নামায জায়েয হওয়ার জন্য আমি উযু করছি।
(সূরা বায়্যিনাহ, ৫/ বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৬৬৮৯)
২. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে উযু আরম্ভ করা। হাদীসে পাকে আছে, বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ পড়ে উযু করলে যতক্ষণ ঐ উযু থাকবে, ফেরেশতাগণ তার নামে ততক্ষণ অনবরত সাওয়াব লিখতে থাকবে, যদিও সে কোন মুবাহ কাজে লিপ্ত থাকে।(নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং-৭৮/ তাবারানী সাগীর, ১ : ৭৩)
৩. উভয় হাত পৃথকভাবে কব্জিসহ তিনবার ধোয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৫৯)
৪. মিস্‌ওয়াক করা। যদি মিস্‌ওয়াক না থাকে তাহলে আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজা মিস্‌ওয়াক অর্ধ হাতের চেয়ে বেশি লম্বা না হওয়া এবং গাছের ডাল হওয়া মুস্তাহাব। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯২১৬, ১৩৯, ৩৯৯০/ তিরমিযী, হাদীস নং-২৩/ বাইহাকী, হাদীস নং-১৭৪)
৫. তিনবার কুলি করা।
(বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৮৫)
৬. তিনবার নাকে পানি দেয়া এবং নাক সাফ করা। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১০৭৭)
৭. তৎসঙ্গে প্রতিবারই নাক ঝাড়া।
(মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-২৩৬)
৮. প্রত্যেক অঙ্গকে পূর্ণভাবে তিনবার করে ধোয়া।
(বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৫৯)
এর জন্য তিনবারের বেশি পানি নিতে হলে নিবে।
৯. দুই হাতে মুখ ধোয়া এবং মুখমণ্ডল ধোয়ার সময় দাড়ি খিলাল করা।(তিরমিযী, হাদীস নং-৩১)
১০. হাত ও পা ধোয়ার সময় আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা। (তিরমিযী, হাদীস নং-৩৮)
১১. একবার সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ্‌ করা।
(তিরমিযী, হাদীস নং-৩৪)
১২. উভয় কান মাসাহ করা। উল্লেখ্য, কানের ছিদ্রের মধ্যে কনিষ্ঠ আঙ্গুল ঢুকিয়ে এবং ভিতর দিকে অবশিষ্ট অংশে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা মাসাহ করা।
(তিরমিযী, হাদীস নং-৩৩/ আবু দাউদ, হাদীস নং-১৩৫)
১৩. উযুর অঙ্গসমূহ হাত দ্বারা ঘষে-মেজে ধোয়া।
(মুস্তাদরাক, হাদীস নং-৫৭৬/ সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং-১১৮
১৪. এক অঙ্গ ধোয়ার পর অন্য অঙ্গ ধৌত করতে বিলম্ব না করা।
(মুসলিম, হাদীস নং-২৪৩/ আবু দাউদ, হাদীস নং-১৭৩)
১৫. তরতীবের সাথে উযু করা। অর্থাৎ উযুর অঙ্গসমূহ ধোয়ার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। (আবু দাউদ, হাদীস নং-১৩৭)
১৬. ডান দিকের অঙ্গ আগে ধোয়া।
(বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৬৮)
১৭. শীত অথবা অন্য কোন কারণে যখন উযু করতে ইচ্ছে না হয়, তখনও উযুর অঙ্গসমূহ উত্তমরূপে ধুয়ে উযু করা।
(তিরমিযী, হাদীস নং-৫১/ মুসলিম, হাদীস নং-২৫১)
১৮. উযুর মধ্যে নিম্নোক্ত দু‘আটি পড়া :
اَللّهُمَّ اغْفِرْلِي ذَنْبِيْ وَوَسِّعْ لِيْ فِيْ دَارِيْ وَبَارِكْ لِيْ فِيْ رِزْقِيْ.
(আমালুল্‌য়াওমি ওয়াল লাইলাহ লি ইবনিসসুন্নী, হাদীস নং-২৮)
এবং উযু শেষ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া।
(মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-২৩৪)
অতঃপর এ দু‘আ পড়া :
اَللّهُمَّ اجْعَلْنِيْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِيْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنْ .
(তিরমিযী, হাদীস নং-৫৫)
উল্লেখ্য, গোসল এবং তায়াম্মুমের শুরু ও শেষে উযুতে বর্ণিত দু‘আ পড়বে।
বি.দ্র. শুধু এ সব বর্ণনা পড়ার দ্বারা সুন্নাত তরীকায় উযু করা সম্ভব নয়, এ জন্য কোন হাক্কানী আলেম থেকে সব বিষয়গুলো চাক্ষুষভাবে দেখে নিবে। আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হযরত জিবরাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে সকল বিষয় চাক্ষুষভাবে দেখিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। (তিরমিযী, হাদীস নং-১৪৯)


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!