Monday, July 10, 2017

২০ রাকাত তারাবীর হাদীস নিয়ে লা মাযহাবি কথিত শায়খ মুযাফফার বিন মুহসিনের চরম মূর্খতা এবং জালিয়াতি!

শায়খ মুযফফার বিন মুহসিনের তারাবীহ বিষয়ক একটি বই আমাদের হস্তগত হয়েছে। নাম হল ‘তারাবীর রাকাত সংখ্যা, একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ’। আসলে তিনি তাত্ত্বিক শব্দকে অপমান করেছেন। বিশ্লেষণ নামে এমন হাস্যকর ভুল এবং জালিয়াতি করেছেন, যা দেখে হাদীসশাস্ত্রের একজন প্রাথমিক তালিবুল ইলমও অবাক হয়ে যাবে! বিশ রাকাত তারাবীহ বিষয়ক সায়িব ইবনু ইয়াযিদের প্রসিদ্ধ হাদীসকে তিনি জাল প্রমাণিত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রমাণ করতে গিয়ে অনেকগুলো ভুল এবং জালিয়াতি করেছেন।
.
এ সম্পর্কে আজকের লেখায় আলোকপাত করব।
.
প্রথমে হাদীসটি দেখুন, “সায়িব ইবনু ইয়াযিদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ওমর রা. এর যামানায় রামাযান মাসে লোকেরা ২০ রাক‘আত ছালাত আদায় করত।
.
মুযাফফার বিন মুহসিন বলেন: হাদীসটি জাল। এটি তিনটি দোষে দুষ্ট।
.
(তারাবীহর রাকআত সংখ্যা:একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, পৃষ্টা নং, ২৮. আছ ছিরাত প্রকাশনী)
.
প্রথম কথা হল, মুযাফফার বিন মুহসিনই প্রথম, যিনি হাদীসকে জাল বলেছেন! এর আগে কোনো মুহাদ্দিস হাদীসটিকে জাল বলেননি! এমনকি শায়খ নাসীরুদ্দীন আলবানী এবং আল্লামা মুবারকপুরীও না! আসুন, দেখি, হাদীস সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ কি বলেছেন?
.
ইমাম নববী রহ. (৬৭৬হি.) বলেন :
.
ﻭَﻋَﻦ ﺍﻟﺴَّﺎﺋِﺐ ﺑﻦ ﻳﺰِﻳﺪ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑِﻲّ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪ ، ﻗَﺎﻝَ : " ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳﻘﻮﻣُﻮﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﻋﻬﺪ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟْﺨﻄﺎﺏ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪ ﻓِﻲ ﺷﻬﺮ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥ ﺑِﻌﺸْﺮﻳﻦ ﺭَﻛْﻌَﺔ ، ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳﻘﺮﺍﺅﻭﻥ ﺑﺎﻟﻤﺌﻴﻦ ، ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳﺘﻮﻛﺆﻭﻥ ﻋَﻠَﻰ ﻋﺼﻴﻬﻢ ﻓِﻲ ﻋﻬﺪ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥ ﻣﻦ ﺷﺪَّﺓ ﺍﻟْﻘﻴﺎﻡ " ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﻴْﻬَﻘِﻲّ ﺑِﺈِﺳْﻨَﺎﺩ ﺻَﺤِﻴﺢ
.
অর্থাৎ, হাদীসটি ইমাম বায়হাকী রহ. সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
.
(খুলাসাতুল আহকাম, ১/৫৭৬. মুআসিসাতুর রিসালাহ)
.
ইমাম ইরাকী রহ. (৮০৬হি.) বলেন :
.
ﻭﻓﻲ ﺳﻨﻦ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ ﺑﺈﺳﻨﺎﺩ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﻋﻠﻰ ﻋﻬﺪ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻓﻲ ﺷﻬﺮ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺑﻌﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ
.
অর্থাৎ, সায়িব ইবনু ইয়াযিদের হাদীসটি ইমাম বায়হাকী রহ. সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
.
(ত্বারাহুত তাছরীব,৩/৮৮. দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ)
.
হাফেজ বদরুদ্দীন আইনী(৮৫৭হিঃ) রহঃ বলেন,
.
ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ ﺑﺈﺳﻨﺎﺩ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺍﻟﺼﺤﺎﺑﻲ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﻋﻠﻰ ﻋﻬﺪ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﺑﻌﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ
.
অর্থাৎ, সায়িব ইবনু ইয়াযিদের হাদীসটি ইমাম বায়হাকী রহঃ সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
.
(উমদাতুল কারী, ৮/৪৮৫. মাকাবাতুশ শামেলা)
.
হাফেজ ইবনুল মুলাক্কিন রহঃ বলেন,
.
ﻭَﺭَﻭَﻯ ﺍﻟْﺒَﻴْﻬَﻘِﻲّ ﺑِﺈِﺳْﻨَﺎﺩ ﺻَﺤِﻴﺢ ﻋَﻦ ﻋﻤﺮ ‏« ﺃَﻥ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳﻘﻮﻣُﻮﻥَ ﻋَﻠَﻰ ‏( ﻋَﻬﺪﻩ ‏) ﺑِﻌﺸْﺮﻳﻦ ﺭَﻛْﻌَﺔ »
.
অর্থাৎ, হাদীসটি বায়হাকী সহীহ সনদে উমর রাঃ থেকে বর্ননা করেছেন।
.
( আল বাদরুল মুনীর, ৪/৩৫০. দারুল হিজরাহ)
.
এ তালিকা আরো দীর্ঘ হতে পারে। দেখুন কতজন বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। কিন্তু মুযাফফার বিন মুহসিন একেবারে জাল বানিয়ে ফেলেছেন!
.
এবার আসুন, তার উল্লিখিত তিনটি দোষ নিয়ে আলোচনা করি। তিনি বলেন: “প্রথমত এর সনদে আবু আবদুল্লাহ ইবনে ফানজুবী আদ-দায়নুরী নামক রাবী আছে। সে মুহাদ্দিসদের নিকট অপরিচিত। রিজাল শাস্ত্রে এর কোন অস্তিত্ব নেই”।
.
(তারাবীর রাকআত সংখ্যা, ২৯)
.
আমরা দেখি যে, এ হাদীসের আরো সনদ রয়েছে। যে সনদে উক্ত রাবী নেই। উদাহরণ স্বরুপ ইমাম ইবনুল যা’দ রহঃ এর “মুসনাদে” হদীসটি আছে। সে সনদে আবদুল্লাহ ইবনে ফানযুবী নেই। সনদসহ হাদীসটি দেখুন,
.
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻠﻲ ﺃﻧﺎ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺫﺋﺐ ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﻋﻠﻰ ﻋﻬﺪ ﻋﻤﺮ ﻓﻲ ﺷﻬﺮ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺑﻌﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻟﻴﻘﺮﺀﻭﻥ ﺑﺎﻟﻤﺌﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ
.
অর্থাৎ, ইবনুল যা’দ বর্ণনা করেন আলী থেকে, তিনি বর্ণনা করেন ইবনু আবি যি’ব থেকে, তিনি বর্ণনা করেন ইয়াযিদ বিন খুসাইফা থেকে, তিনি বর্ণনা করেন সায়িব ইবনে ইয়াযিদ রাঃ থেকে।
.
(মুসনাদু ইবনুল যা’দ, ২৮২৫. মুআসসিসা নাদের, বায়রুত)
.
এমনভিাবে ইমাম বায়হাকী রহঃ “মা’রেফাতুস সুনানি ওয়াল আছারে” হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। সে সনদেও আবদুল্লাহ ইবনে ফানযুবী নামক রাবী নেই। বায়হাকীর সনদ হল:
.
ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻃﺎﻫﺮ ﺍﻟﻔﻘﻴﻪ ﻗﺎﻝ : ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺍﻟﺒﺼﺮﻱ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺃﺣﻤﺪ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻮﻫﺎﺏ ﻗﺎﻝ : ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺧﺎﻟﺪ ﺑﻦ ﻣﺨﻠﺪ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺟﻌﻔﺮ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﻲ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ، ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﻗﺎﻝ : ‏« ﻛﻨﺎ ﻧﻘﻮﻡ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻥ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺑﻌﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ ﻭﺍﻟﻮﺗﺮ ‏» ﻭﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﺯﻛﺮﻳﺎ ﻗﺎﻝ : ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺍﻟﻄﺮﺍﺋﻔﻲ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺑﻜﻴﺮ ﻗﺎﻝ : ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺎﻟﻚ ﻗﺎﻝ : ﻭﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﻟﻘﻌﻨﺒﻲ ﻓﻴﻤﺎ ﻗﺮﺃ ﻋﻠﻰ ﻣﺎﻟﻚ ، ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺭﻭﻣﺎﻥ ، ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝ : ‏« ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻥ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺑﺜﻼﺙ ﻭﻋﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ »
.
অর্থাৎ,খালেদ বিন মাখলাদ বর্ণনা করেন মুহাম্মাদ বিন জাফর থেকে, তিনি ইয়যিদ বিন খুসাইফা থেকে, তিনি সায়িব ইবনে ইয়াযিদ রাঃ থেকে হাদীস বর্ণনা করেন। (মা’রেফাতুস সুনানি ওয়াল আছার, ১১৪৩. শামেলা)
.
মুযাফফার বিন মুহসিন চতুরতার সাথে এ সনদগুলো এড়িয়ে গেছেন। যদি ইবনে ফানযুবীর কারণে হাদীসট জাল হয়, তাহলে এ সনদগুলোতে ইবনে ফানযুবী নেই! সুতরাং হাদীসটি সহীহ।
.
দ্বিতীয়ত: তিনি বলেছেন: সে মুহাদ্দিসদের নিকট অপরিচিত। রিজাল শাস্ত্রে এর কোন অস্তিত্ব নেই”। এ কথা চরম মূর্খতার প্রমাণ। কারণ আবদুল্লাহ হলেন হাফিজুল হাদীস। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস।
.
দেখুন রিজাল শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ ইমাম যাহাবী (৭৪৮হিঃ) কি বলেন?
.
ﻭﺍﻟﻤﺤﺪﺙ ﺃﺑﻮ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻨﺠﻮﻳﺔ ﺍﻟﺜﻘﻔﻲ ﺍﻟﺪﻳﻨﻮﺭﻱ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﺑﻨﻴﺴﺎﺑﻮﺭ
.
অর্থাৎ, আবু আবদুল্লাহ ইবনে ফানযুয়াহ, আদ দিইনাওয়ারী। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, তিনি ছিলেন হাফিজুল হাদীস। নিশাপুরের অধিবাসী।
.
(তারিখুল ইসলাম, ৩/২৪৪)
.
এবার বলুন, ইমাম যাহাবী যাকে হাফিজুল হাদীস বলেছেন, মুযাফার বিন মুহসিন বলচেন, রিজাল শাস্ত্রে এর কোন অস্থিত্ব নেই! মূর্খতারওতো একটা সীমা থাকা চাই।
.
আল্লামা ইবনুল আছীর জাযারী রহঃ বলেন:
.
ﻋﺮﻑ ﺑﻬﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺑﻦ ﻓﻨﺠﻮﻳﺔ ﺍﻟﻔﻨﺠﻮﺑﻲ ﺍﻟﺪﻳﻨﻮﺭﻱ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ . ﺭﻭﻯ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﻔﺘﺢ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺍﻷﺯﺩﻱ ﺍﻟﻤﻮﺻﻠﻲ ﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺍﻟﻘﻄﻌﻲ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ . ﺭﻭﻯ ﻋﻨﻪ ﺃﺑﻮ ﺇﺳﺤﺎﻕ ﺍﻟﺜﻌﻠﺒﻲ ﻓﺄﻛﺜﺮ ﻓﻲ ﺗﻔﺴﻴﺮﻩ . ﻭﻳﺬﻛﺮﻩ ﻛﺜﻴﺮﺍ ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺍﻟﻔﻨﺠﻮﺑﻲ .
.
ফানযুবী নিসবতে প্রসিদ্ধ হলেন আবু আবদুল্লাহ হুসাইন মুহাম্মাদ বিন ফানযুয়াহ আদ দিইনাওয়াী। তিনি হলেন হাফিজুল হাদীস। তিনি আবুল ফাতহ আল আযদী এবং আবু বকর আল কুতাইয়ী এবং অন্যান্নদের থেকে বর্ণনা করেন।তার থেকে আবু ইসহাক ছা’লাবী বর্ণনা করেছেন। তাফসীরে তিনি তার থেকে অধিক রেওযায়াত করেছেন।
.
(তারাবীর নামায, মুহাদ্দিসে কাবীর আল্লামা হাবীবুর রহমান আযমী, পৃষ্টা নং, ৫৮)
.
আপনি এবার বলুন, এ ধরণের প্রসিদ্ধ হাফেজুল হাদীস সম্পর্কে মুযাফফার বিন মুহসিন কেমন মূর্খতাপূর্ণ বক্তব্য দিলেন..? হয়ত তিনি মূর্খ, অথবা জ্ঞানপাপী কাযযাব!
.
এছাড়া তিনি লিখেছেন আদ –দায়নুরী। যা পরিস্কার ভুল! বিশুদ্ধ হল আদ দিইনাওয়ারী! হরকাত না থাকার কারণে তিনি এমন হাস্যকর ভুল করে ফেললেন! দিইনাওয়ার হল প্রসিদ্ধ একটি শহর। তার দিকে নিসবত করে দিইনাওয়ারী। কিন্তু তিনি লিখেছেন আদ- দায়নুরী! আরবী ভাষা সম্পর্কে কেমন অপরিপক্ক তিনি, তা উলঙ্গভাবে প্রকাশ পেয়েছে এখানে!
.
২য় দোষ সম্পর্কে শায়খ লিখেন: “উক্ত বর্ণনায় ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা নামে একজন মুনকার রাবী আছে। সে ছহীহ হাদীছের বিরোধী হাদীস বর্ণনাকারী। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল এজন্য তাকে মুনকার বলেছেন এবং আল্লামা যাহাবী ওইবনু হাজার আসক্বালানী তা সমর্থন করেছেন”।
.
(তারাবীহর রাকআত সংখ্যা:পৃষ্টা নং,৩০. আছ ছিরাত প্রকাশনী)
.
মাত্র কয়েক লাইনে শায়খ অনেকগুলো মিথ্যাচার এবং জালিয়াতি করেছেন। প্রথম কথা হল ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা বুখারী, মুসলিমের বর্ণনাকারী। ইমাম বুখারী এবং মুসলিম রহঃ ‘সহীহ বুখারী’ এবং ‘সহীহ মুসলীমে’ তার সূত্রে বর্ণিত হাদীস রেওয়ায়াত করেছেন।
.
উদাহরণ স্বরুপ শায়খ যুহাইর নাসের তাহকীককৃত বুখারীর ৪৭০. ১০৭২. ২৩২৩. ২৩২৫ নংহাদীস দেখা যেতে পারে। ইমাম বুখারী রহঃ ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফার সুত্রে বর্ণিত হাদীস রেওয়ায়াত করেছেন। এমনিভাবে শায়খ ফুয়াদ আবদুল বাকী দাঃবাঃ তাহকীককৃত মুসলিম শরীফের ৫৭৭. ১৫৭৬. ২১৫৩. ২৫৭২ নং হাদীস দেখ যেতে পারে।
.
ইমাম মুসলিম রহঃও ইয়যীদ ইবনে খুসাইফার সূত্রে বর্ণিত হাদীস রেওয়ায়াত করেছেন। মুযাফফার বিন মুহসিনের কথা অনুযায়ী যদি ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা সহীহ হাদীসের বিরোদী হাদীস বর্ণনাকারী হয়ে থাকেন, তাহলে ইমাম বুখারী এবং মুসলিম রহঃ কনে তার সূত্রে উল্লেখিত হাদীস বর্ণনা করলেন?
.
তাহলে কি বুখারী, মুসলিমে তার সূত্রে বর্ণিত হাদীসগুলো জাল....?
.
এবার দেখুন, ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা সম্পর্কে জরাহ, তাদীলের ইমামগণ কি বলেন.....?
.
প্রথমে আমি হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী লিখিত “তাহযীবুত তাহযীব’ এর পুরো ইবারত উল্লেখ করছি। তিনি বলেন:
.
ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ﺍﻟﻤﺪﻧﻲ ﺭﻭﻯ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻭﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﻭﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻗﺴﻴﻂ ﻭﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﺛﻮﺑﺎﻥ ﻭﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻛﻌﺐ ﻭﺑﺴﺮ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﻭﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻘﺎﺭﻱ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﻭﻋﻨﻪ ﺍﻟﺠﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﻭﻣﺎﻟﻚ ﻭﺃﺑﻮ ﻋﻠﻘﻤﺔ ﺍﻟﻔﺮﻭﻱ ﻭﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺑﻼﻝ ﻭﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﺑﻦ ﺟﻌﻔﺮ ﻭﺍﻟﺴﻔﻴﺎﻧﺎﻥ ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻭﺭﺩﻱ ﻭﺁﺧﺮﻭﻥ ﻗﺎﻝ ﺍﻷﺛﺮﻡ ﻋﻦ ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺍﺑﻮ ﺣﺎﺗﻢ ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﺛﻘﺔ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻵﺟﺮﻱ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ ﻗﺎﻝ ﺃﺣﻤﺪ ﻣﻨﻜﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻗﺎﻝ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻣﺮﻳﻢ ﻋﻦ ﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ﺛﻘﺔ ﺣﺠﺔ ﻭﻗﺎﻝ ﺑﻦ ﺳﻌﺪ ﻛﺎﻥ ﻋﺎﺑﺪﺍ ﻧﺎﺳﻜﺎ ﻛﺜﻴﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺛﺒﺘﺎ ﻭﺫﻛﺮﻩ ﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﺜﻘﺎﺕ
.
অর্থাৎ, আছরাম ইমাম আহমদ থেকে বর্ণনা করেন, ইমাম আহমদ তাকে ‘ছিকাহ’ বলেছেন। এমনিভাবে ইমাম আবু হাতিম এবং নাসায়ীও তাকে ‘ছিকাহ’ বলেছেন। আবুদাউদ ইমাম আহমদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন। ইমাম ইবনে মায়ীন তাকে ‘ছিকাহ, হুজ্জত’ তথঅ চুড়ান্ত পর্যায়ের গ্রহণযোগ্য রাবী বলেছেন। ইবনে সা’দ বলেন, তিনি বেশি ইবাদাত গুজার এবং হজ পালনকারী। হাদীসের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত এবং গ্রহণযোগ্য। ইবনে হিব্বান রহঃ ছিকাহ বর্ণনাকারীদের জীবনিগ্রন্থ “কিতাবুছ ছিকাতে” তার জীবনি উল্লেখ করেছেন”।
.
(তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৫৫.৩৫৬. দারুল ফিকর, বায়রুত)
.
আমরা দেখলাম ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফাকে ইবনে মায়ীন, আবু হাতিম, নাসায়ী, ইবনে সা’দ এবং ইবনে হিব্বান ছিকাহ বলেছেন। ইমাম আহমদ থেকে বর্ণনা মুখতালিফ।
.
এক বর্ণনায় তিনি তাকে ছিকাহ বলেছেন। অপর বর্ণননায় তিনি তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন। মুযাফফার বিন মুহসিন সবগুলো বাদ দিয়ে শুধু একটি বর্ণনা দ্বারা হাদীসকে জাল বানিয়ে ফেললেন! ইলমের এ কেমন আমানতদারী! এছাড়া ইমাম আহমদের বক্তব্য নকল করতে তিনি চরম অপরিপক্কতার প্রমাণ দিয়েছেন। কারণ ইমাম আহমদ তাকে মুনকার বলেনি। ‘মুনকারুল হাদীস’ বলেছেন।কারণ মুনকার হাদীসের বিশেষণ হয়ে থাকে। বর্ণনকারীর নয়।
.
এরপর তিনি বলেন: এবং আল্লামা যাহাবী ওইবনু হাজার আসক্বালানী তা সমর্থন করেছেন”।
.
আসুন প্রথমে আমরা ইমাম যাহাবীর পূর্ণ বক্তব্য দেখি।তিনি বলেন:
.
ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ . ﻭﻗﺪ ﻳﻨﺴﺐ ﺇﻟﻰ ﺟﺪﻩ ﻓﻴﻘﺎﻝ : ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ . ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ، ﻭﻋﺮﻭﺓ ، ﻭﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻗﺴﻴﻂ . ﻭﻋﻨﻪ ﻣﺎﻟﻚ ، ﻭﻃﺎﺋﻔﺔ . ﻭﺛﻘﻪ ﺃﺣﻤﺪ ﻣﻦ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﺍﻻﺛﺮﻡ ﻋﻨﻪ ، ﻭﺃﺑﻮ ﺣﺎﺗﻢ ، ﻭﺍﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ، ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ . ﻭﺭﻭﻯ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﺃﻥ ﺃﺣﻤﺪ ﻗﺎﻝ : ﻣﻨﻜﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ
.
অর্থাৎ, ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা,আছরামের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ তাকে ছিকাহ বলেছেন। এমনিভাবে আবু হাতিম, ইবনে মায়ীন, নাসায়ী রহঃ তাকে ছিকাহ বলেছেন। আবু দাউদের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
.
(মিযানুল ই’তেদাল, তরজমা নং, ৯৭১৫)
.
আপনি বলুন, ইমাম যাহাবী কোথায় সমর্থন করলেন? যদি নকল করার দ্বারা সমর্থন হয়ে যায়, তাহলে তিনি ইবনে মায়ীন, আবু হাতীম এবং নাসায়ী এবং আছরামের বর্ণনাকেও সমর্থন করেছেন।
.
মুযাফফার বিন মুহসিন কেন পুরো বক্তব্য বাদ দিয়ে শেষেরটা গ্রহণ করলেন...? এমন খেয়ানত করতে আল্লাহর ভয়ে কি তার অন্তরাত্বা কেঁপে উঠেনি....?
.
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানীর পুরো বক্তব্য পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনিও শুধু নকল করেছেন। এখন তার আরো কিছু কিতাবের বক্তব্য দেখি।
.
আসমাউর রিজালের প্রসিদ্ধ কিতাব “তাকরীবুত তাহযীবে” হাফেজ ইবনে হাজার বলেন:
.
ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﺑﻤﻌﺠﻤﺔ ﺛﻢ ﺍﻟﺮﻛﻌﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ﺍﻟﻤﺪﻧﻲ ﻭﻗﺪ ﻳﻨﺴﺐ ﻟﺠﺪﻩ ﺛﻘﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺨﺎﻣﺴﺔ
.
অর্থাৎ, ইয়াযীদ ইবনে আবদুল্লাহ, তিনি হলেন ছিকাহ তথা বিশ্বস্ত এবং গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারী।
.
(তাকরীবুত তাহযীব, তরজমা নং, ৭৭৩৮. শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা দাঃবাঃ তাহকীককৃত)
.
‘লিসানুল মিযানে’ হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী বলেন:
.
ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ﺍﻟﻤﺪﻧﻲ ﻋﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﺑﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﻭﻋﺮﻭﺓ ﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﻭﻋﻨﻪ ﺑﻦ ﺟﺮﻳﺞ ﻭﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺑﻼﻝ ﻭﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﺑﻦ ﺟﻌﻔﺮ ﻭﻃﺎﺋﻔﺔ ﻭﺛﻘﻪ ﺃﺑﻮ ﺣﺎﺗﻢ ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ﻭﺃﺣﻤﺪ
.
অর্থাৎ, ইয়াযীদ ইবনে কুসাইফা, ইমাম আবু হাতিম, নাসায়ী, ইবনে মায়ীন এবং ইমাম আহমদ তাকে ছিকাহ বলেছেন। (লিসানুল মিজান, ৭/৫২৮৮)
.
হাফেজ ইবনে হাজার এখানে আবু দাউদের বর্ণনা উল্লেখ করেননি।
.
এছাড়া ‘তাকরীবে’ তিনি একবাক্যে তাকে ছিকাহ বলেছেন। কিন্তু কথিত শায় মুযাফফার বিন মুহসিন বলেন, হাফেজ ইবনে হাজার ইমাম আহমদের বক্তব্য মুনকারুল হাদীস নাকি সমর্থন করেছেন.....?? মিথ্যার কি চুড়ান্ত পরাকাষ্টা প্রদর্শন!
এখন প্রশ্ন হল, ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফা ছিকাহ রাবী।
.
তাহলে আবু দাউদের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ তাকে কেন ‘মুনকারুল হাদীস’ বললেন.....?
.
এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ। তিনি তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘ফাতহুল বারী’ এর ভূমিকায় বলেন:
.
ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ﻭﻗﺪ ﻳﻨﺴﺐ ﺇﻟﻰ ﺟﺪﻩ ﻗﺎﻝ ﺑﻦ ﻣﻌﻴﻦ ﺛﻘﺔ ﺣﺠﺔ ﻭﻭﺛﻘﻪ ﺃﺣﻤﺪ ﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﺍﻷﺛﺮﻡ ﻭﻛﺬﺍ ﺃﺑﻮ ﺣﺎﺗﻢ ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻭﺑﻦ ﺳﻌﺪ ﻭﺭﻭﻯ ﺃﺑﻮ ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻵﺟﺮﻱ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ ﻋﻦ ﺃﺣﻤﺪ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝ ﻣﻨﻜﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻗﻠﺖ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻠﻔﻈﺔ ﻳﻄﻠﻘﻬﺎ ﺃﺣﻤﺪ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻳﻐﺮﺏ ﻋﻠﻰ ﺃﻗﺮﺍﻧﻪ ﺑﺎﻟﺤﺪﻳﺚ ﻋﺮﻑ ﺫﻟﻚ ﺑﺎﻻﺳﺘﻘﺮﺍﺀ ﻣﻦ ﺣﺎﻟﻪ ﻭﻗﺪ ﺍﺣﺘﺞ ﺑﺎﺑﻦ ﺧﺼﻴﻔﺔ ﻣﺎﻟﻚ ﻭﺍﻷﺋﻤﺔ ﻛﻠﻬﻢ
.
অর্থাৎ, ইয়াযীদ ইবনে খুসাইফাকে ইবনে মায়ীন ছিকাহ এবং হুজ্জাত বলেছেন। আছরামের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম আহমদ তাকে ছিকাহ বলেছেন। এমনিভাবে আবু হাতিম, নাসায়ী এবং ইবনে সা’দ তাকে ছিকাহ বলেছেন। আবু দাউদের বর্ণন অনুযায়ী ইমাম আহমদ তাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
.
হাফেজ ইবনে হাজার বলেন, ইমাম আহমদ ‘মুনকারুল হাদীস’ সে সব রাবীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন, যারা তাদের সাথীদের তুলনায় আশ্চর্যজনক হাদীস বর্ণনা করে। এটা তার অবস্থা পর্যালোচনা দ্বারা বুঝা গেছে। ইবনে খুসাইফা দ্বারা ইমাম মালেক এবং অন্যন্ন সকল ইমাম দলীল দিয়েছেন। অর্থাৎ, তার সূত্রে বর্ণিত হাদীস রেওয়ায়াত করেছেন।
.
( হাদয়ূস সারী, পৃষ্টা নং, ৪৫৩. দারুল মা’রেফা, বায়রুত)
.
এবার আপনি বলুন, এ ধরণের একজন গ্রহণযোগ্য রাবীকে মুযাফফার বিন মুহসিন জাল হাদীস বর্ণনাকারী বানিয়ে ফেললেন....? তাও আবার ইমামদের নামে জঘন্য মিথ্যাচার এবং জালিয়াতি করে....? মনে হয় দুনিয়াতে তিনি একাই গবেষক হয়েছেন....? তার এ চুরিগুলো আর কেউ ধরতে পারবে না.....?
.
শায়খ নামীয় এমন জঘন্য প্রাণীদের থেকে আল্লাহ মুসলিম মিল্লাতকে হেফাজত করুন।
.
মুফতি লোকমান বিন খোরশেদ
.
দেখো, হিদায়েতের মালিক আল্লাহ।
♪♪♪
সহিহ আকিদার সাইনবোর্ড দিয়ে আর কত ধোকাবাজী চলবে....?
.
"আত-তাওহীদ পাবলিকেশন্স" থেকে বুখারী শরীফের বাংলা অনুবাদ করেছে। সেটির ভূমিকায় তারা বলছে, যদিও পূর্বে বুখারী শরীফের বাংলা হয়েছে, কিন্তু মাযহাবের লোকেরা লিখেছে তো! তাই সেখানে তারা অনেক জালিয়াতি করেছে! তাই আমরা শুদ্ধভাবে এটি বাংলা করেছি।
.
প্রিয় পাঠক তাহলে আমরা দেখবো কী আছে তাদের লিখিত বুখারীর অনুবাদে।
.
আত-তাওহিদ পাবলিকেশন্সের সহিহুল বুখারী খণ্ড নং২, পৃ. নং ৩৪৩।
সায়েদ বিন ইয়াজিদ বলেন, আমরা ওমর বিন খাত্তাব (রা.) -সময় বিশ রাকাত তারাবি এবং বিতর পড়তাম।
.
এখন এ হাদীস তাদেরই প্রকাশনীতে ২০ রাকাতের পক্ষে।
.
আর তাদের মতবাদ টিকিয়ে রাখার জন্য নিচে টীকা টেনে স্পষ্ট বলছে এ হাদীস জয়িফ অথাৎ (দুর্বল)। কেনো দুর্বল.....? বলছে সে হাদীসের সনদে (ধারাবাহিকতায়) খালেদ বিন মাখলাদ রয়েছে। তার দোষ কি....?
.
বলছে তার বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়,তদুপরি সে শিয়া ও মিথ্যাবাদী ছিল।
.
প্রিয় পাঠক মহোদয়! দেখুন! বিশ রাকাতের হাদীস জাল বানানোর জন্য খালিদ বিন মাখলাদকে জাল বানিয়েছে.....!
.
আসুন!
.
তাদের বুখারির ১ম নাম্বার খণ্ড, ৪৩ নাম্বার, ১১৩ নাম্বার পৃ. ইমাম বুখারী বলছেন, "হাদ্দাসানা খালিদুবনু মাখলাদিন" অর্থাৎ, আমি খালিদ বিন মাখলাদ থেকে শুনেছি। প্রশ্ন হলো এ হাদীস দ্বয়কে তারা জয়িফ বলে নাই কেনো.....?
.
একজন ব্যাক্তিকে মিথ্যার তাকমা দিয়ে বর্জন করলে সব ক্ষেত্রে সে মিথ্যুক তাই না......?
.
তাহলে, তাদের বঙ্গানুবাদে একজন রাবিকে একটা হাদীসের জন্য মিথ্যুক বলবে; আবার অন্য জায়গায় তার হাদীস গ্রহণ করবে, এটা কি ধোঁকাবাজী নয়......?
.
এসব দাজ্জাল মার্কা জাহিলদের থেকে আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুক। আমিন....


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!