সালের সফরে চলছি-
আমাদের কখনও দেশী জামাতের
সাথে পাঠানো হয়, কখনও বিদেশী
জামাতের সাথে। এর মাঝে একবার
রাজশাহীতে আরব জামাতের সাথে
রোখ হলো। আমরা দু'জন বাংলাদেশি। সদ্য দাওরা শেষ করে সালে বের হয়েছি।
_
জামাতে দু'জন ফিলিস্তিনি, দু'জন
ইসরাঈলী কাতার প্রবাসী মুসলিম,
চারজন জর্ডানের সাথী।
_
জুম্মার দিন, খতিব সাহেব প্রাক খুতবা বয়ানে যেন আমাদের টার্গেট করেছেন। জিহাদ বাদ দিয়ে মসজিদে মসজিদে ঘুরা,বাংলাদেশের মতো একটা মুসলিম
দেশে যা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়।
_
এক পর্যায়ে আরবীতে বলা শুরু করেছেন।
জিহাদ বাদ দিয়ে বাংলাদেশে ঘুরা
নিয়ে তিরস্কার করা শুরু করলেন।
যেখানে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনে
গনহত্যা হচ্ছে, সেখানে দাওয়াতের
নামে বাংলাদেশের মতো একটা
মুসলিম দেশে ঘুরা বিলাসিতা ছাড়া
আর কি!
_
(আসলে) খতিব সাহেব কি জানেন,
জামাতে মজলুম ফিলিস্তিনিও আছেন?
_
ফিলিস্তিনি এক সাথী কিছু বলার
জন্যে উঠে দাঁড়াতে চাচ্ছেন। আমরা
দু'জন তাকে জোর করে নিবৃত্ত করছি।
_
খতিব সাহেবের কটাক্ষপাত তীব্র
হচ্ছে। আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই
খতিব সাহেবের উদ্দেশ্যে জবাব
দেয়া শুরু করলেন।
_
আমাদের দিক তরজমা করার ইশারা করলেন।
ভরাট উচ্চারণে বিশুদ্ধ আরবীতে মসজিদ গমগম করছে। আমার বন্ধু মাওলানা বাংলায়
সাথে সাথে তরজমা করে দিচ্ছেন
_
খতিব সাহেব, আপনি দ্বীনের জন্য কতটুকু কোরবানি দিয়েছেন? কতটুকু নির্যাতন সহ্য করেছেন? কতটি জিহাদে অংশগ্রহন করেছেন?
_
আমরা সাত ভাই। সেই ছোটবেলা
থেকে ইসরাঈলের সাথে মুকাবিলা
করছি। আমার পাঁচভাই ইতিমধ্যেই শহীদ হয়েছে। আমি একবার বন্দী হয়ে দীর্ঘ
একবছর ইসরাঈলের টর্চার সেলে
নির্যাতিত হয়েছি। আমার হাতের নখ
উপড়ে ফেলা হয়েছে। আমার
লজ্জ্বাস্থানে ইলেকট্রিক শক দেয়া
হয়েছে। রাতদিন উলঙ্গ রাখা হয়েছে।
মোটা লোহা দিয়ে পেটানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভাই জুব্বা খুলে
ফেললেন। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন।
মুসল্লীগন কাতার ভেঙ্গে ভিড় করছেন
সে আঘাত দেখার জন্য।
_
খতিব সাহেব! আমার ভাইয়েরা
শাহাদাতের পেয়ালা পান করেছে।
অথচ তারা নামাজ নিয়ে যেতে
পারে নি। মুখে দাঁড়ি নিয়ে যেতে
পারে নি। দ্বীনের উপর চলা কাকে
বলে কোনদিন শেখে নি। আল্লাহ
তায়ালা তাদের ক্ষমা করুন, তাদের
জান্নাত নসীব করুন। যেন দ্বীনের উপর না চলার কারনে তাদের কেয়ামতের
দিন লজ্জ্বিত হতে না হয়।
যুদ্ধ করাই আমাদের নিয়তি। কিন্তু দ্বীন ছাড়া কেবল যুদ্ধও তো সমাধান নয়।
আমিও তাদের মতো ছিলাম। নামাজ
রোযার তোয়াক্কা করতাম না। হঠাৎ
আমার বোধোদয় হলো। দ্বীন শেখার জন্য তাবলীগে এসেছি |
_
আমি দ্বীন মানতে মানতে শহীদ হতে
চাই। আমি নূরানি দাঁড়ি নিয়ে শাহাদতেরর পেয়ালা পান করতে চই। আমি আল্লাহ্ আল্লাহর রাসুলকে লজ্জ্বিত করতে চাই না।
ঐ শাহাদাত দিয়ে আমার কি হবে যে, শাহাদাতের সাথে নামাজের পূঁজি নেই। ঐ জিহাদ কিভাবে জিহাদ হবে, যেখানে দ্বীনের বুনিয়াদী নেই
_
ফিলিস্তিনি ভাই কাঁদছেন। কাঁদছেন
জামাতের সাথীরা। সাথে কাঁদছে পুরো মসজিদ
_
খতিব সাহেব কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তিনি
লা জওয়াব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন। মসজিদ কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি তাকে তিরস্কার
করলেন। আবেগ উথলে উঠেছে মুসল্লীদের।
তারা এই খতিবের পেছনে নামায পড়বেন না।
কমিটির অনুরোধে জুমা পড়াতে এগিয়ে গেলেন অম্য ফিলিস্তিনি আলিম।
_
তাবলীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে
শেষ পর্যন্ত চাকরী হারাতে হয় কিনা
কে জানে!
_
[এরপরও এই দলটিকে নিয়ে একদলের
বিষোদগার থামেই না যেন?? ]
_
আল্লাহ্ আমাদের ক্ষমা করুন, আমিন...!
Monday, May 22, 2017
সম্পর্কিত আরও পড়ুন
বিশ্বখ্যাত মুসলিম মনীষীদের দৃষ্টিতে তাবলিগ জামাতযে সকল নব্য ইসলা÷
আল্লাহর রাস্তায় গিয়ে একটি নেক আমলে ৪৯,০০,০০,০০০ (ঊনপঞ্চাশ কোটি) গুণ বেশি সওয়াব হয়আল্লাহর রাস্তায
একেই বলে দাওয়াত ও তাবলীগ এর মেহনত! তবুও নিন্দুকের নিন্দা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না।আমার মহল্লার মসজ
তাবলীগ জামাতের প্রসিদ্ধ কিতাব “ফাযায়েলে আমালে” বর্ণিত ঘটনাতে কি শিরক আছে?জবাবঃ ( بسم اللّ
বিশ্ব ইজতেমার শত্রুদের জন্য দুঃসংবাদ! কেরে নিজেদের কপালে কুড়াল মারতেছেন?তাবলীগ ও ইজতেমা ÷
এই উম্মতকে দাওয়াত দেয়ার সবচেয়ে বড় পদ্ধতি হল হিকমত ও নম্রতা অবলম্বনকরা।""হজরত মাওলানা ইলù
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!