হযরত উমর রা. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. শরীয়ত বিরোধী মাসআলা দিতেন:
জামিয়া সালাফিয়া বেনারস এর গবেষক মুহাম্মাদ রইস নদভী আহলে হাদীস তানবীরুল আফাক নামে একটি কিতাব লিখেছে। এ কিতাবে সে হযরত উমর রা. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা, সম্পর্কে লিখেছে,
অর্থাৎ স্পষ্টত: শরীয়তের নির্দেশনার বিপরীতে এই দু’জন সম্মানিত সাহাবীর অবস্থান আমলযোগ্য ও শরীয়তের দলিল হতে পারে না। এটিও স্পষ্ট যে, বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হলো, এই দুই সাহাবী যেহেতু শরীয়ত বিরোধী বিষয়টি গ্রহণ করেছিলেন, এজন্য তাদেরকে শরীয়তবিরোধী আখ্যায়িত করা হবে। [তানবীরুল আফাক, পৃ.৮৭-৮৮]
নাউযুবিল্লাহ, ছুম্মা নাউযুবিল্লাহ। হযরত উমর রা. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কে বার শরীয়ত বিরোধী আখ্যা দেয়ার মূল মাসআলাটি হলো, একই সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া। পুরো মুসলিম উম্মাহ এ বিষয়ে একমত যে, একই সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত। তথাকথিত গাইরে মুকাল্লিদরা সমগ্র সাহাবা ও মুসলিম উম্মাহের বিরোধীতার করে তিন তালাককে এক তালাক বানিয়েছে। হযরত উমর রা. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. যেহেতু তাদের মতের বিপক্ষে গিয়েছে, এজন্য বার বার তাদেরকে শরীয়ত বিরোধী আখ্যা দিয়েছে, নাউযুবিল্লাহ। এসব লেখা পড়লে সন্দেহ হয়, এটি শিয়াদের লেখা না কি আহলে হাদীসদের?
হযরত উমর রা. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কুরআন ও হাদীস বোঝেননি:
অর্থাৎ কুরআনের দু’টি আয়াত এবং প্রায় পন্চাশটি হাদীসে গোসল ফরজ ব্যক্তির জন্য তায়াম্মুম করে নামায আদায়ের কথা রয়েছে। হযরত উমর ও ইবনে মাসউদ রা. এর সামনে এ আয়াত ও হাদীস পেশ করা হয়েছিলো। তবুও তারা বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হননি। [তানবীরুল আফাক, পৃ.৪১৮]
নাউযুবিল্লাহ। ছুম্মা নাউযুবিল্লাহ। আমরা আগে জানতাম, সাহাবাযে কেরাম সম্পর্কে এধরনের শব্দ ব্যবহার কেবল শিয়ারাই করে থাকে। অথচ এই শিয়াদের সাথে যুক্ত হয়েছে ছোট শিয়ার আরেকটি তথা আহলে হাদীস। হযরত সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ রহ. এর সেনাবাহিনীতে আহলে হাদীস গোষ্ঠী ছোট শিয়া বা ছুটা রাফেজী হিসেবে পরিচিত ছিলো। তাদের লেখনী দেখলে এই বাস্তবতাই কেবল বিমূর্ত হয়ে ওঠে।
হযরত উমর রা. কুরআনের বিধান পরিবর্তন করেছেন:
জামিয়া সালাফিয়া বেনারস এর গবেষক আহলে হাদীস আলেম মুহাম্মাদ রইস নদভী তানবিরুল আফাক কিতাবে হযরত উমর রা, সম্পর্কে লিখেছে,
অর্থাৎ হযরত উমর রা. এর আকাংখ্যা ও ইচ্ছা এটাই ছিলো যে, কুরআনের বিধান অনুযায়ী এক বৈঠকের তিন তালাককে এক তালাক সাব্যস্ত করবেন। কিন্তু মানুষের ভুল পদ্ধতি বন্ধ করার উদ্দেশ্য হযরত উমর রা. নিজের স্বীকৃতি অনুযায়ী কুরআনের বিধানে পরিবর্তন করেছেন। হযরত উমর রা. কুরআনের বিধান এভাবে পরিবর্তন করেছেন যে, এক তালাক তিন তালাক হিসেবে পরিগণিত হয়।
[তানবীরুল আফাক, পৃ.৪৯৮]
সাহাবায়ে কেরাম পবিত্র কুরআনের আয়াত জেনেও এর বিপরীত আমল করতেন:
অর্থাৎ অনেক সাহাবা ও তাবেয়ীন অনেক আয়াত সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং সেগুলো নিয়মিত তেলাওয়াত করা সত্ত্বেও বিভিন্নভাবে এসব আয়াত বিরোধী আমল করতেন। [তানবীরুল আফাক, পৃ.৪৭]
নাউযুবিল্লাহ। সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে কী জঘন্য অপবাদ। এসব নিকৃষ্ট মানসিকতার লোকদের পক্ষেই কেবল সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে এধরনের মিথ্যা অপবাদ দেয়া সম্ভব। এদের দৃষ্টিতে সাহাবায়ে কেরাম কুরআন বিরোধী ছিলেন, তাবেয়ীনগণ কুরআন বিরোধী ছিলেন। বার শ বছরের মুসলিম উম্মাহ মাজহাব অনুসরণের কারণে মুশরিক হয়ে গেছে। শুধুমাত্র ইংরেজদের হাতে সৃষ্ট আহলে হাদীস দলই সত্যের উপর রয়েছে। এদের চেয়ে নিকৃষ্ট আর কে হতে পারে? মহান আল্লাহ তায়ালা যেখানে সাহাবায়ে কেরামের ইমান আনতে বলেছেন, তাদের অনুসারীদের প্রতি নিজের সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেছেন, অথচ এই নব্য সৃষ্ট আহলে হাদীস ফেতনা সেই সাহাবায়ে কেরামকে কুরআন বিরোধী আখ্যা দিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ।
ইবনে মাসউদ রা. সম্পর্কে মুবারকপুরীর জঘন্য বক্তব্য:
তিরমিযী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ তুহফাতুল আহওয়াজীর লেখক আব্দুর রহমান মুবারকপুরী কট্রর আহলে হাদীস ছিলো। সে হযরত ইবনে মাসউদ রা. সম্পর্কে লিখেছে,
অর্থাৎ, আমরা যদি মেনে নেই যে, রফয়ে ইয়াদাইন না করার ব্যাপারে হযরত ইবনে মাসউদ রা. এর হাদীস সহীহ বা হাসান, স্পষ্টত: হযরত ইবনে মাসউদ রা. রফয়ে ইয়াদাইন করার বিষয়টি ভুলে গেছেন, যেমন তিনি অন্যান্য অনেক বিষয় ভুলে গেছেন।
নাউযুবিল্লাহ। ছুম্মা নাউযুবিল্লাহ। এই হলো আহলে হাদীসদের আসল চেহারা। মতের সাথে না মিললে রাসূল স. এর হাদীসদে পায়ের নীচে ফেলে দিবে। সাহাবীকে ভুল সাব্যস্ত করবে। হযরত ইবনে মাসউদ রা. কি মাত্র একটা হাদীস বর্ণনা করেছেন? তিনি কি সব হাদীসে ভুল করেছেন না কি শুধু রফয়ে ইয়াদাইনের হাদীসে? হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. অধিক হাদীস বর্ণনাকারী দশজন সাহাবীর মাঝে অষ্টম। তিনি মোট ৮৪৮ টা হাদীস বর্ণনা করেছেন। হযরত ইবনে মাসউদ রা. এর বর্ণিত সব হাদীসই কি ভুল? বোখারী শরীফে প্রায় আশিটা হাদীস হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত। এসব হাদীসের ক্ষেত্রেও কি বলবেন, তিনি ভুলে গেছেন? তথাকথিত এসব আহলে হাদীসদের বিচারের ভার আল্লাহর নিকট সোপর্দ করছি। সাহাবীদের সম্পর্কে এদের লাগামহীন বক্তব্য শুধু সাহাবীদের মান-সম্মান নষ্ট করে না, বরং পুরো শরীয়তকেই আস্থাহীন ও ভিত্তিহীন করার জন্য যথেষ্ট। একজন নাস্তিক স্বাভাবিকভাবে একথা বলতে পারবে, প্রত্যহ পাচ ওয়াক্ত নামাযের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল যদি ইবনে মাসউদ রা, ভুলে গিয়ে থাকেন, তবে তিনি অন্যান্য বিষয় কীভাবে স্মরণ রেখেছেন?
প্রবৃত্তিপুজারী ও স্বার্থান্ধ যেসব আহলে হাদীস হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর সমালোচনা করে, তাদের উদ্দেশ্য আহলে হাদীসদের ইমাম ইবনে তাইমিয়ার একটি বক্তব্যই যথেষ্ট।
ইবনে তাইমিয়া তার মাজমুউল ফাতাওয়াতে লিখেছে,
অর্থাৎ “হযরত আলী রা. কে সাহাবীদের মাঝে বড় আলেমদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, তিনি হলেন একজন। ইরাকে অবস্থানরত হযরত ইবনে মাসউদ।” ইলমের ক্ষেত্রে হযরত ইবনে মাসউদ রা. ছিলেন, হযরত উমর, হযরত আলী, মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. এর স্তরের। সাহাবীদের মাঝে তিনি ছিলেন প্রথম সারীর সাহাবী। যে হরত ইবনে মাসউদ রা. এর সমালোচনা করে কিংবা হাদীসের ক্ষেত্রে তাকে দুর্বল বলে, সে সব শিয়াদের গোত্রভূক্ত যারা হযরত আবু বরক, উমর ও উসমান রা. এর সমালোচনা করে। হযরত ইবনে মাসউদ রা. এর সামলোচনা সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে তার অজ্ঞতা, তার ধর্মদ্রোহীতা ও মুনাফেকীর প্রকাশ মাত্র।
[মাজমুউল ফাতাওয়া, খ.৪, পৃ.৫৩১]
ইবনে তাইমিয়া রহ. এর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, শিয়াদের গোত্রভুক্ত আহলে হাদীসরাই কেবল ইবনে মাসউদ রা. এর সমালোচনা করার দু:সাহস দেখাতে পারে। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সব ধরনের শিয়া মনোভাবের লোক থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
হযরত মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আস রা. রাষ্ট্রদ্রোহী ছিলো:
আহলে হাদীস আলেম ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদী লুগাতুল হাদীস নামে একটা কিতাব লিখেছে। এই কিতাবে র’ অধ্যায়ের আলোচনায় সে হযরত মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আস সম্পর্কে মারাত্মক জঘন্য ভাষা ব্যবহার করেছে। ওহিদুজ্জামান লিখেছে,
” এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, হযরত মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আস উভয়ে বিদ্রোহী ও অবাধ্য ও নিকৃষ্ট ছিলো। তাদের জীবনী, মর্যাদা ও ফজীলত সংক্রান্ত আলোচনা কখনও শোভনীয় নয়। বরং সাহাবী হওযার দিকে দৃষ্টি রেখে কেবল তাদেরকে গালাগালি থেকে মুক্ত রাখাই যথেষ্ট।”
নাউযুবিল্লাহ। রাসূল স. এর সাহাবীদেরকে অবাধ্য ও নিকৃষ্ট বলেও ক্ষ্যান্ত হয়নি। বরং ওহিদুজ্জামান সাহেবের নিকট তাদের মযাদা বর্ণনাও শোভনীয় নয়। তাদেরকে গালি থেকে পাক রাখার কথা বললেও পূর্বে নিজেই তাদেরকে নিকৃষ্ট (শারীর) ও অবাধ্য (সারকাশ) বলেছে। আমরা পূর্বের আলোচনায় ওহিদুজ্জামানের বক্তব্য উল্লেখ করেছি যে, সে হযরত মুয়াবিয়া রা. কে অভিশপ্ত পর্যন্ত বলেছে। এগুলো আহলে হাদীসদের কাছে গালি নয়। যদি এরা গালাগালি দিতো, না জানি কতো কিছু লিখতো। সাহাবায়ে কেরামকে গালি দিবো না একথা বলে যে এত কিছু বলতে পারে, তাহলে গালি দিলে কী কী বলতো? ওহিদুজ্জামান শুধু এ দুই সাহাবীকেই নিকৃষ্ট বলেনি, অন্যান্য সাহাবী সম্পর্কেও বলেছে, তারা শরীয়ত ও বিবেক উভয়ের কাছে নিকৃষ্ট এজাতীয় কাজ করেছেন। এজন্য কোন সাহাবীকে তারকার সাথে তুলনা করা সমীচিন নয়। সাহাবায়ে কেরাম যেহেতু নিকৃষ্ট কাজ করেছে, একারণে তাদেরকে হেদায়াতের আলোক বর্তিকা মনে করাটাও ওহিদুজ্জামান সাহেবের কাছে শোভনীয় নয়।
সাহাবাগণ নিকৃষ্ট কাজ করেছেন
আহলে হাদীস আলেম ওহিদুজ্জামান সাহেব সাহাবারা তারকা সদৃশ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এ কথার প্রমাণ হিসেবে তিনি লিখেছেন,
” কিছু কিছু সাহাবা এমন কাজ করেছেন, যা শরীযত ও বিবেক উভয়ের দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট"
এভাবে সাহাবাদেরকে বিভিন্ন আক্রমণে জর্জরিত করা হয়েছে। কোথাও তাদেরকে অভিশাপ দেয়া হযেছে, তাদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী ও নিকৃষ্ট বলা হয়েছে। অথচ এসব সাহাবী সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছে, আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট, তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তাদের ব্যাপারেই আল্লাহ তায়ালা হুসনা তথা পরকালে মহা কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ তথাকথিক ছোট শিয়ারা তাদেরকে আল্লাহর ক্রোধের পাত্র বানাতে ব্যস্ত। তাদেরকে অভিশপ্ত বলে তারা মহা তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছে। আল্লাহ পাক আমাদের প্রত্যেকের অন্তরে সাহাবায়ে কেরামের মহব্বত ঢেলে দিন, তাদের অনুসৃত পথে পরিচালিত করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে রা. না বললেও জুলফিকার আলী ভূট্রোকে রাযিয়াল্লাহু বলে সম্মান প্রদর্শন:
ইংরেজদের সময়ে সৃষ্ট আহলে হাদীসদের অন্যতম আলেম হলেন ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদী। তিনি ইন্ডিয়ার আহলে হাদীসদের মাঝে বেশ বিখ্যাত। আহলে হাদীসদের মাঝে তার অনুবাদকৃত সিহাহ সিত্তাহ ব্যাপক প্রচলিত। ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদী আহলে হাদীসদের মাঝে স্বীকৃত একজন আলেম ছিলেন। আহলে হাদীস আলেমদের জীবনীর উপর লেখা চালিস উলামাযে আহলে হাদীস (চল্লিশজন আহলে হাদীস আলেম) কিতাবে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। জনাব ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদীর লেখা একটি কিতাব হলো, কানযুল হাকাইক মিন ফিকহি খাইরিল খালাইক ( (সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর ফিকহের রহস্য ভান্ডার)।
ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদী লিখেছে,
“অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম রা. সম্পর্কে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলা মুস্তাহাব। তবে আবু সুফিয়ান, মুয়াবিয়া, আমর ইবনে আস, মুগীরা ইবনে শু’বা, সামুরা ইবনে জুনদুব এর নামের শেষে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলা মুস্তাহাব নয়। “
অর্থাৎ আহলে হাদীসরা সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে রাজিয়াল্লাহু আনহু বলতে নারাজ। এবার একটা মজার ব্যাপার লক্ষ্য করুন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্রোকে ঠিকই এক আহলে হাদীস আলেম রা. বলেছে। আহলে হাদীস আলেমদের বিভিন্ন ঘটনা সংকলন করে প্রফেসর হাফেজ খুবাইব জাহিদ একটি বই লিখেছেন। বইয়ের নাম, উলামায়ে আহলে হাদীসকে দিল চাস্প ওয়াকিয়াত (আহলে হাদীস আলেমদের চিত্তাকর্ষক ঘটনাবলী)।
এই বইয়ের ১২২ পৃষ্ঠায় জনৈক আহলে হাদীস আলেমের একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার বিবরণ:
অর্থাৎ “পাকিস্তানের জেনারেল জিয়াউল হক একবার আলেমদেরকে ডাকলেন। তিনি ইসলাম শাসনতন্ত্র চালু করার ঘোষণা দিলেন। সেই সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেনারেল সাহেব যখন ইসলামী শাসনতন্ত্র চালুর ঘোষণা দিলেন, তখন আলেমরা মাশায়াল্লাহ বলা শুরু করলো। আামার পাশে বসা এক মৌলবী সাহেব এতো জোরে জাযাকাল্লাহ বলল যে, আমি চেয়ার থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছিলাম। আলেম সাহেব আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কী হলো? আমি বললাম, আমার ভূট্রো রাযিয়াল্লাহ আনহুর কথা মনে পড়েছে। যখন তিনি ছিলেন, তখনও আপনি এতো জোরে জাযাকাল্লাহ বলতেন।”
প্রিয় পাঠক, পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ভুট্রোকে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলতে আহলে হাদীসরা দ্বিধা করে না, অথচ বড় বড় সাহাবীদের সম্পর্কে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলতে গেলে তাদের জবান আড়ষ্ট হয়। এটি কীসের আলামত? সাহাবায়ে কেরামের মহব্বতের নিদর্শন না কি তাদের প্রতি মারাত্মক বিদ্বেষের? আর ভূট্রোর মতো একজন সাধারণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে রাজিয়াল্লাহ আনহু ব্যবহার করে কী মারাত্মকভাবেই না তিনি এর সাথে ঠাট্রা করলেন? সাহাবায়ে কেরামের শানে আমরা যেটাকে অত্যন্ত গর্বের সাথে ব্যবহার করি, তারা এটাকে ব্যবহার করছে ভুট্রোর জন্য। এধরনের সীমাহীন ঠাট্রাকে একজন মুসলমান কীভাবে মেনে নিতে পারে?
আল্লাহ সবাইকে হেদায়াত দান করুন। আমীন।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!