Sunday, March 19, 2017

ইমাম বুখারী কাদের? আমাদের না কথিত আহলে হাদীসদের?

✍🏻লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

👉১০ নং দলিল, আমাদের বর্ণনাভঙ্গি একটি আর কথিত আহলে হাদীসদের বর্ণনাভঙ্গি আরেকটি।

আমরা কোন আলোচনা করলে আলোচনার মাঝে কুরআন হাদীসের সাথে মাঝে মাঝে বুজুর্গানে দ্বীনের বিভিন্ন মন্তব্যও উল্লেখ করি। বলে থাকি- হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এমন বলেছেন, হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ এমন বলেছেন। হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহঃ, রশীদ আহমাদ গঙ্গুহী রহঃ এমনটি বলেছেন। বুযুর্গদের কথা শুনে কথিত আহলে হাদীসরা শোরগোল শুরু করে দেয় যে, তোমরা কথায় কথায় বুযুর্গদের কথা বল কেন?

তো আমরা এবার বুখারী রহঃ এর বর্ণনাভঙ্গি দেখবো, তিনি সরাসরি শুধুমাত্র কুরআন ও হাদীসই বলেন?
নাকি মাঝে মাঝে সনদ ছাড়া বুযুর্গদের কথাও বলেন। যদি আমাদের মত বুখারী রহঃ বুযুর্গদের কথা নকল করে থাকেন, তাহলে ইমাম বুখারী আমাদের হবে, আর যদি ওদের মত বলে  থাকেন, তাহলে ইমাম বুখারী রহঃ কথিত আহলে হাদীসদের সাব্যস্ত হবে।

এবার লক্ষ্য করুন বুখারীতে ইমাম বুখারী রহঃ বুখারীতে অধ্যায় স্থাপন করেছেন-  باب الاغتباط في العلم والحكمةএ বাবের অধীনে ইমাম বুখারী রহঃ কুরআনের কোন আয়াত আনেন নি, কোন হাদীস আনেন নি। তিনি উল্লেখ করেছেন বুযুর্গদের কথা- وقال عمر تفقهوا قبل أن تسودواঅর্থাৎ হযরত ওমর রাঃ বলেন-সর্দার হওয়ার আগে ইলমী গভীরতা অর্জন কর। একথা আমাদের বুযুর্গরাও বলেন। সবচে’ বড় কথা হল ইমাম বুখারী নিজের নির্ধারণকৃত বাবের অধীনে আয়াত বা হাদীস না এনে বুযুর্গের কথা এনেছেন। এটা আমাদের বর্ণনাভঙ্গী। আর কথিত আহলে হাদীসদের বর্ণনাভঙ্গী হল কথায় কথায় কুরআনের আয়াত বা হাদীস উপস্থাপন করতে হবে, বুযুর্গানে দ্বীনের কথা উল্লেখ করা শিরকের নামান্তর। তাহলে ইমাম বুখারী রহঃ এর বর্ণনাভঙ্গী আমাদের মত। কথিত আহলে হাদীসদের মত নয়।

তাই ইমাম বুখারী আমাদের ওদের হয় কি করে?

শুধু এক স্থানে নয়, আরেক স্থানে ইমাম বুখারী রহঃ বাব নির্ধারণ করেছেন-باب الحياء من الإيمانএ বাব নির্ধারণ করার পর তিনি কুরআনের আয়াত বা হাদীস পেশ না করে বুযুর্গদের কথা নকল করে বলেন-

وقال مجاهد لا يتعلم العلم مستحي ولا مستكبر . وقالت عائشة نعم النساء نساء الأنصار لم يمنهعن الحياء أن يتفقهن في الدين

তথা-মুজাহিদ বলেন-প্রশ্ন করতে লজ্জাকারী বা অহংকারী ইলম শিখতে পারে না। আর হযরত আয়শা রাঃ বলেন-হ্যাঁ, আনসারী মহিলারা দ্বীন শিখতে তাদের লজ্জা আটকে রাখে না। {সহীহ বুখারী, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ অধ্যায়}

এখানে লক্ষ্য করুন-ইমাম বুখারী রহঃ বুখারীতে বাব নির্ধারণ করার পর কোন হাদীস না এনে আমাদের বর্ণনাভঙ্গীর মত বড় ও বুযুর্গ  মুজাহিদ ও হযরত আয়শা রাঃ এর মন্তব্য এনেছেন। এটাতো আমাদের পদ্ধতি। কথিত আহলে হাদীসদের নয়।

সুতরাং ইমাম বুখারী ওদের হয় কি করে?

এছাড়া ইমাম বুখারী রহঃ বাব নির্ধারণ করেছেন-باب من خص بالعلم قوما دون قوم كراهية أن لا يفهمواতথা একদলকে কোন

বিষয়ে বিশেষভাবে জানানো আর অন্যদের না জানানো না বুঝার কারণে”। তারপর ইমাম বুখারী রহঃ কুরআনের আয়াত বা হাদীসের পরিবর্তে বুযুর্গের উক্তি নিয়ে এসেছেন-

وقال علي حدثوا الناس بما يعرفون أتحبون أن يكذب الله ورسوله

আর হযরত আলী রাঃ বলেছেন-তোমরা লোকদের সামনে এমন কথা বল যা তারা বুঝে, এমনভাবে বলো না, যাতে লোকেরা আল্লাহ ও তার রাসূলকে অস্বিকার করে বসে।

ইমাম বুখারী নিজের বাবের অধীনে হাদীসও আনেন নি, আয়াতও আনেননি। নিয়ে এসেছেন বুযুর্গের কথা। আর এটি আমাদের পদ্ধতি কথিত আহলে হাদীসদের নয়। তাই ইমাম বুখারী আমাদের, ওদের নয়।

তাছাড়া এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয়-যখন আমাদের বুযুর্গরা বলে থাকেন যে, তাসাউফের উঁচু স্তরের কিছু কথা আছে যা সাধারণ মানুষ বুঝবে না, সাধারণ মানুষের জ্ঞানের বাহিরে, তাই তাদের জন্য পড়া জায়েজ নয়। তখন কথিত আহলে হাদীসরা চিল্লাফাল্লা শুরু করে  দেয় যে, ইলম একজনের জন্য জায়েজ আরেকজনের জন্য না জায়েজ হয় কি করে?

অথচ ঠিক এ কথাটিই হযরত আলী রাঃ বলছেন। সুতরাং আমাদের বযুর্গদের কথা হযরত আলী রাঃ এর কথার অনুকূল। আর সেই সাথে  ইমাম বুখারী রহঃ নিজেই বাব নির্ধারণ করার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন যে, সব কথা সবার জানা উচিত নয়। কিছু বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য  কিছু বিশেষ জ্ঞান, বিশেষ আচরণ আছে যা সবার জন্য বৈধ নয়। তাহলে ইমাম বুখারী রহঃ আমাদের মতকে সাপোর্ট করেন, কথিত আহলে  হাদীসদের মত নয়। তাহলে সাব্যস্ত হল-ইমাম বুখারী আমাদের কথিত আহলে হাদীসদের নয়।

আরো দেখুন-ইমাম বুখারী রহঃ বুখারী শরীফে বাব কায়েম করেছেন-باب الأخذ باليدينতথা মোসাফাহা দুই হাতে করার অধ্যায়।

তারপর তিনি কুরআনের আয়াত বা হাদীস উপস্থাপন না করে বুযুর্গদের আমল উপস্থাপন করে বলেন-

وصافح حماد بن زيد ابن المبارك بيديه তথা হাম্মাদ বিন জায়েদ এবং ইবনুল মুবারক উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন।

এ বক্তব্য উপস্থাপন করার দ্বারা ইমাম বুখারী এটাই বুঝালেন যে, আমাদের বুযুর্গরা দুই হাতে মুসাফাহা করেছেন, তাই আমাদেরও দুই হাতে মুসাফাহা করা উচিত।

দুই হাতে মুসাফাহা আমরা করি। ইমাম বুখারী বাব এনে বুযুর্গদের কথা উল্লেখ করে আমাদের কথাই সাপোর্ট করেছেন।
আর কথিত আহলে হাদীসরা এক হাতে মুসাফাহা করে, তাহলে ইমাম বুখারী ওদের হয় কি করে?
ইমাম বুখারী রহঃ তো আমাদের।

আরো লক্ষ্য করুন-ইমাম বুখারী রহঃ বাব নির্ধারণ করেছেন- باب السجود على الثوب في شدة الحر তথা অত্যধিক গরমের কারণে কাপড়ের উপর সেজদা করার অধ্যায়। এরপর ইমাম বুখারী রহঃ কোন আয়াত বা হাদীস উপস্থাপন না করে বুযুর্গের উক্তি উল্লেখ করেন-

وقال الحسن كان القوم يسجدون على العمامة والقلنسوة ويداه في كمه তথা হাসান বসরী রহঃ বলেন-সাহাবারা পাগড়ী ও

টুপির উপর সেজদা করতেন।

আরো লক্ষ্য করুন-

ইমাম বুখারী রহঃ বাব নির্ধারণ করেছেন- باب التيمم فيالحضر إذا لم يجد الماء وخاف فوت الصلاة তথা মুকিম অবস্থায় যদি পানি না পায়, বা নামায কাযা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তায়াম্মুম করার অধ্যায়। এ অধ্যায় স্থাপন করার পর ইমাম বুখারী রহঃ কোন আয়াত বা হাদীস পেশ না করে সরাসরি বুযুর্গদের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন-

وبه قال عطاء وقال الحسن في المريض عنده الماء ولا يجد من يناوله يتيمم

তথা একথাই বলেন আতা বিন আবী রাবাহ ও হাসান বসরী রহঃ যে, অসুস্থ্য ব্যক্তির কাছে যদি পানি থাকে, কিন্তু এমন কেউ নেই যে, তাকে তা দিবে। তাহলে সে তায়াম্মুম করবে।

তাহলে এখানেও ইমাম বুখারী রহঃ কুরআন বা হাদীসের উদ্ধৃতি রেখে বুযুর্গদের কথাই উদ্ধৃত করলেন, তাহলে আমরা বুযুর্গদের কথা বললে খারাপ কাজ করে থাকলে ইমাম বুখারীকে কি বলবে কথিত আহলে হাদীসরা?

এর মাধ্যমেও সুপ্রমানিত হল ইমাম বুখারী রহঃ আমাদের ওদের নয়।

আমরা যখন মাশায়েখদের কথা বললে কথিত আহলে হাদীসরা শোরগোল শুরু করে দেয়, অথচ আমরা যেমন মাশায়েখদের কথা পেশ করি তেমনি ইমাম বুখারী রহঃ ও মাসআলা বুঝাতে মাশায়েখদের উক্তি উদ্ধৃত করেছেন এমন অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে বুখারী শরীফ থেকে। প্রবন্ধটি দীর্ঘ হয়ে যাবে বলে আর উদ্ধৃত করলাম না। আপনারা বুখারী শরীফ খুলে নিজেই দেখে নিতে পারেন এর ভুরী ভূরি উদাহরণ। সুতরাং বুখারী রহঃ এর বর্ণনাভঙ্গী আর আমাদের বর্ণনাভঙ্গী এক। সুতরাং ইমাম বুখারী আমাদের ওদের নয়।

👉১১ নং দলিল

কথিত আহলে হাদীসরা প্রচার করে থাকে ওদের মাসলাক বুখারীতে আছে আমাদের মাসলাক নেই। একথাও ভুল। আমাদের মাসলাক বুখারীতেও খুব শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান রয়েছে। খেয়াল করুন-

👉ক-
মাসআলায়ে রফয়ে ইয়াদাইনঃ

যেমন রফয়ে ইয়াদাইন করার ক্ষেত্রে বুখারীতে হাদীস রয়েছে। সুতরাং কথিত আহলে হাদীসরা বলতে শুরু করে দেয় যে, বুখারীতে রফয়ে ইয়াদাইন এর হাদীস আছে, অথচ আমরা মানি না কেন?
তাহলে আমরা বুখারীকে মানলাম না, তাই ইমাম বুখারী ওদের আমাদের না!

এ বিষয়টি বুঝার জন্য আগে একটি বিষয় বুঝতে হবে। সেটা হল-রফয়ে ইয়াদাইন এর মাসআলায় আমাদের মাসলাক কি?
আমাদের মাসলাক হল-রাসূল সাঃ প্রথম প্রথম রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, কিন্তু পরে ছেড়ে দিয়েছেন। আর কথিত আহলে হাদীসদের মাসলাক হল রাসূল সাঃ সর্বদা রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন।

তাই যত হাদীস রফয়ে ইয়াদাইন এর পক্ষে  আছে সেসব আমাদের বিপক্ষে দলিল হতে পারে না। কারণ আমরাতো মানিই যে, রাসূল সাঃ প্রথম প্রথম রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, তাই এ ব্যাপারে হাদীস পেশ করলে তা আমাদের বিপরীত হবে কেন?
বরং যদি কোন হাদীস এমন দেখাতে পারে, যাতে আছে যে, রাসূল সাঃ সর্বদা রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, তথা মৃত্যু পর্যন্ত রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, তাহলে সাব্যস্ত হবে ওদের দলিল। কিন্তু বুখারীতে একটি হাদীসও এমন নেই যা, প্রমাণ করে রাসূল সাঃ মৃত্যু পর্যন্ত রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, বা রাসূল সাঃ রফয়ে ইয়াদাইন করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তাহলে বুখারী ওদের দলিল হল কি করে?
বুখারীতেতো আমাদের দলিল।

উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিস্কার হবে-

যেমন মুমতাজুদ্দীন তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউ এন্ড রিসার্চ সেন্টারে এল। এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নেই।

কিন্তু সে এসেই চলে গিয়েছিল?

না সে কয়েকদিন ছিল?

এ নিয়ে মতভেদ হয়ে গেল। একদল বলছে যে, মুমতাজুদ্দীন তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টারে এসে সাথে সাথেই চলে গিয়েছিল। আরেকদল বলছে যে, না, না মুমতাজুদ্দীন কয়েকদিন ছিল তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউটে।

এখানে খেয়াল করুন-মতভেদ কোন বিষয়ে?

মুমতাজুদ্দীনের আসার বিষয়ে?

না যাওয়ার বিষয়ে?

নিশ্চয় যাওয়ার বিষয়ে। সুতরাং যারা দাবি করছে যে, মুমতাজুদ্দীন রিসার্চ সেন্টারে এসে থেকেছে, তারা যদি দলিল পেশ করে মুমতাজুদ্দীনের রিসার্চ সেন্টারে আসার, তাহলে এটি কি তাদের দলিল হবে? আসার ব্যাপারেতো কোন মতভেদই নেই, তাহলে আসার দলিল দেওয়ার দ্বারা থাকা প্রমানিত হয় কি করে? থাকার ব্যাপারে আলাদা দলিল পেশ করতে হবে। আসার দলিলের মাধ্যমে থাকা প্রমাণিত হয় না।

তেমনি বুখারীতে যে, রাসূল সাঃ এর রফয়ে ইয়াদাইন এর হাদীস আছে এটাতো আমাদের বিরুদ্ধে দলিল হতেই পারে না। কারণ রাসূল সাঃ রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন একথাতো আমরা অস্বিকার করি না। বরং তিনি সর্বদা করেছেন এ ধারণাকে আমরা অস্বিকার করি। তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে দলিল হবে সেই হাদীস যেটাতে প্রমাণিত হবে যে, রাসূল সাঃ সর্বদা রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, বা রফয়ে ইয়াদাইন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ এমন কোন হাদীস বুখারীতে নেই। তাহলে বুখারী আমাদের বিরুদ্ধে গেল কিভাবে?
বরং কথিত আহলে হাদীসদের দলিল দেয়াটাই সহীহ নয়।

সুতরাং বুঝা গেল রফয়ে ইয়াদাইন এর মাসআলায় বুখারী শরীফ আমাদের বিরোধী নয়। পক্ষে।

এরপর যদি কথিত আহলে হাদীসরা প্রশ্ন করে যে, তাহলে রাসূল সাঃ প্রথমে রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন, পরে ছেড়ে দিয়েছেন এ ব্যাপারে কি দলিল আছে?

তখন আমাদের জবাব হল-তিরমিযী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ ইত্যাদী হাদীস গ্রন্থে এসেছে যে, রাসূল সাঃ প্রথমে রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন তারপর ছেড়ে দিয়েছেন।

عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ أَلاَ أُصَلِّى بِكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ مَرَّة ً( سنن ابى داود، كتاب الصلاة، باب مَنْ لَمْ يَذْكُرِ الرَّفْعَ عِنْدَ الرُّكُوعِ، رقم الحديث-748)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন আমি কি তোমাদের কে হুজুর সাঃ এর নামাজ সম্পর্কে অবগতি দেব না? এ কথা বলে তিনি নামাজ পড়ে দেখালেন এবং নামাজে তাকবীরে তাহরীমার সময় একবার রাফয়ে ইয়াদাইন করলেন। নামাজে আর

কোথাও তিনি রফঈ ইয়াদিন করলেন না। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৪৮, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৫৭, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৩০৪, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৬৪৫, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৩৬৩, মুসনাদে আহমাদ,

হাদীস নং-৩৬৮১}

عَنِ الْبَرَاءِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَى قَرِيبٍ مِنْ أُذُنَيْهِ ثُمَّ لاَ يَعُودُ ( سنن ابى داود، كتاب الصلاة، باب مَنْ لَمْ يَذْكُرِ الرَّفْعَ عِنْدَ الرُّكُوعِ، رقم الحديث-750)

হযরত বারা ইবনে আযিব (রা) বলেন- রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) যখন নামাজ আরম্ভ করতেন তখন তার হস্তদ্বয়

কর্ণদ্বয় পর্যন্ত উত্তোলন করতেন । অতঃপর আর তা করতেন না । [ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৫০, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস

নং-১৬৮৯, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৫৫ ]

এখানে এসে যদি কথিত আহলে হাদীসরা প্রশ্ন করে যে, রাসূল সাঃ ছেড়ে দিয়েছেন এমন শব্দতো এসব হাদীসে নেই।

তাহলে ওদের বলুন-এসব হাদীসে কি একথা নেই যে, রাসূল সাঃ রফয়ে ইয়াদাইন করতেন না?

রাসূল সাঃ সর্বদা রফয়ে ইয়াদাইন করেছেন বা নির্দেশ দিয়েছেন, এমন একটি হাদীস দেখাতে পারলে আমরাও দেখাব রাসূল সাঃ ছেড়ে দিয়েছেন বর্ণনা।

এরপরও যদি কথিত আহলে হাদীসরা প্রশ্ন করে যে, বুখারীতে এক নির্দেশ এল, আর ওটা মানসুখ হয়েছে তিরমিযীর হাদীস দিয়ে এটা কেমন কথা?

তাহলে তাদের উত্তর দিন যে, এমন অনেক মাসআলা আছে, যা বুখারীতে জায়েজ বলা হয়েছে, আর তা তিরমিযীর হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গেছে।

যেমন-বুখারীতে এসেছে যে, রাসূল সাঃ দাড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন। বসে প্রস্রাব করেছেন বুখারীতে একটি হাদীসও নেই। অথচ তিরমিযীতে এসেছে যে, রাসূল সাঃ বসে প্রস্রাব করেছেন। তিরমিযীর হাদীস বুখারীর দাড়িয়ে প্রস্রাব করার হাদীসের হুকুমকে রহিত করে দেয়। এমনি বুখারীতে আসা রফয়ে ইয়াদাইন এর বর্ণনা তিরমিযীর হাদীস রহিত করে দেয়।

👉খ-
কিরাত খালফাল ইমাম তথা ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কিরাত পড়া প্রসঙ্গঃ

কথিত আহলে হাদীসরা বলে থাকে যে, ইমামের পিছনে কিরাত পড়তে হবে। নইলে নামায হবে না। দলিল বুখারীতে বিদ্যমান।

عن عبادة بن الصامت أن الرسول الله صلى الله عليه و سلم قال  : ( لا صلاة لمن لم يقرأ بفاتحة الكتاب (صحيح البخارى، رقم الحديث-723)

অনুবাদ-হযরত ওবাদা বিন সামেত রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে সূরা ফাতেহা পড়ে না, তার নামায হয় না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭২৩}

আর আমরা বলি মুসল্লিরা কিরাত পড়বে না ইমামের পিছনে। তাহলে বুখারী শরীফ আমাদের বিপক্ষে। ওদের পক্ষে।

উত্তরে আমরা বলব-কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওদের মতের পক্ষে বুখারীতে কোন দলিল  নেই। কারণ এ হাদীসের জবাবে আমরা বলি-সূরা ফাতেহা ছাড়া নামায হয় না, একথা আমরাও বলি। সুতরাং আমাদের আর ওদের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। তবে পার্থক্য হল ওরা বলে  যে, মুসল্লিদেরও পড়তে হবে। একথা আমরা মানি না।

কারণ যেমন আমরা জানি খুতবা ছাড়া জুমআ হয় না। আজান ছাড়া নামায পড়লে নামায খেলাফে সুন্নাত হয়, ইকামত ছাড়া নামায পড়লে নামায খেলাফে সুন্নাত হয়, কিন্তু খুতবা পড়া সবার জন্য আবশ্যক নয়, আজান-ইকামত দেয়া সবার জন্য আবশ্যক নয়, তেমনি সূরা ফাতেহা ছাড়া নামায হয় না, জামাতের সাথে পড়ার সময় সেটা সবার জন্য পড়া জরুরী নয়। ইমামের পড়ার দ্বারা মুক্তাদীর পড়া হয়ে যায়, যেমন ইমামের খুতবা বলার দ্বারা সবার খুতবা হয়ে যায়, মুআজ্জিনের আজান ও ইকামত দেয়ার দ্বারা সবার আজান ও ইকামত হয়ে যায়। তেমনি জামাআতে নামায পড়ার সময় ইমামের সূরা ফাতেহা পড়ার দ্বারা সবার সূরা ফাতেহা হয়ে যায়।

👉একটি প্রশ্ন ও জবাবঃ

কথিত আহলে হাদীসরা যদি প্রশ্ন করে যে, হাদীসের মাঝে আমভাবে বলা হয়েছে সূরা ফাতেহা ছাড়া নামায হয় না, তাহলে আমরা কি করে জামাতে পড়লে শুধুমাত্র ইমামের সাথে বিষয়টি খাস করে ফেললাম?

এর জবাব হল-

কিছু বিষয় আছে আ'ম। আর কিছু বিষয় আছে খাস। একই আদেশ আমভাবে দিলেও কখনো কখনো সেটা আ'ম হয় না, হয় খাস। যেমন উদাহরণ কুরআনে বিদ্যমান।

وَالْمَلَائِكَةُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِمَنْ فِي الْأَرْضِ (5)

অনুবাদ-আর ফেরেস্তারা তাদের রবের প্রশংসার তাসবীহ পড়ে, আর জমিনে যারা আছে তাদের জন্য গোনাহ মুক্তির প্রার্থনা করে। {সূরা শোরা-৫}

এ আয়াতে লক্ষ্য করুন-বলা হয়েছে ফেরেস্তারা গোনাহমুক্তির জন্য প্রার্থনা করে।

তাহলে এ প্রার্থনা করি ফেরাউনের জন্য ও ফেরেস্তারা করে?

কারূনের জন্যও করে?

সাদ্দাতের জন্য করে?

হামানের জন্যও করে?

ইবলিসের জন্য করে?

নাকি শুধু মুসলমানদের জন্য?

আয়াতটি আম হলেও এটা খাস শুধু মুসলমানদের জন্য। তেমনি হাদীসটি সবার জন্য বাহ্যিকভাবে সূরা ফাতেহা পড়ার নির্দেশ হলেও জামাতে নামায পড়ার সময় শুধুমাত্র ইমামের সাথে খাস। যেমন উল্লেখিত আয়াতটি বাহ্যিকভাবে আম হলেও মূলত দুআটি মুমিনদের সাথে খাস, কাফেরদের জন্য নয়।

আর সূরা ফাতিহা ছাড়া নামায হয় না, হাদীসটি একাকি ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য ইমামের পিছনে থাকলে পড়বে না বলে স্পষ্ট উল্লেখ করেছন হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ। আমরা নই। দেখুন তিরমিযী শরীফ-

جابر بن عبد الله يقول : من صلى ركعة لم يقرأ فيها بأم القرآن فلم يصل إلا أن يكون وراء الإمام(سنن الترمذى، كتاب الصلاة، باب ماجاء في ترك القراءة خلف الإمام إذا جهر [ الإمام ] بالقراءة، رقم الحديث-313)

অনুবাদ-হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন-যে ব্যক্তি সূরা ফাতেহা পড়া ছাড়া নামায পড়ল তার নামায হয়নি, তবে যদি সে ইমামের পিছনে হয়, [তাহলে হয়ে যাবে।] {সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৩১৩}

তাহলে বুখারীর হাদীসের ব্যাখ্যা আমরা তিরমিযীতে বর্ণিত সাহাবী রাঃ থেকে নিলাম। নিজেরা কোন কিছু উদ্ভাবন করিনি। আমরা রাসূল সাঃ এর বাণীর ব্যাখ্যা নিলাম রাসূল সাঃ এর সাহাবী থেকে আর কথিত আহলে হাদীসরা নিল ওহাবীদের থেকে।

তাহলে কিরাত খালফাল ইমাম তথা ইমামের পিছনে সূরা ফাতেহা পড়ার  উপর বুখারীতে কথিত আহলে হাদীসদের কোন দলিলই নেই। দলিল আছে আমাদের।

👉গ-
আমীন বিল জেহের তথা আমীন জোরে বলা প্রসঙ্গঃ

কথিত আহলে হাদীসরা দাবি করে যে, নামাযে আমীন জোরে বলার দলিল বুখারীতে আছে। আর আমরা বুখারীর হাদীস না মেনে বুখারীর বিরোধিতা

করি। তাই আমরা বুখারী বিরোধী আর ওরা বুখারীর ভক্ত।

তাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয় আমীন জোরে বলার দলিল বুখারীতে কি আছে?

ওদের প্রথম দলিল:
ইমাম বুখারী রহঃ বুখারীতে বাব নির্ধারণ করেছেন-باب جهر الإمام بالتأمين  তথা ইমামের আমীন জোরে বলার অধ্যায়, তারপর বলেছেন-وقال عطاء آمين الدعاءতথা আতা রহঃ বলেছেন আমীন হল দুআ।

✒আমাদের জবাব:
আমীনকে দুআ বলার দ্বারা আমীন জোরে বলা কিভাবে প্রমাণিত হল?

ওদের আরেক দলিল:
ইমাম বুখারী রহঃ এর পর  উল্লেখ করেছেন-أمن ابن الزبير ومن وراءه حتى إن للمسجد للجةতথা ইবনে জুবাইর রাঃ এবং তার সাথে যারা থাকতো তারা এত জোরে আমীন বলতেন যে, মসজিদে সূর উঠতো।

সুতরাং বুঝা গেল আমীন জোরে বলতে হবে।

✒আমাদের জবাব:
মজার ব্যাপার হল এটি কথিত আহলে হাদীসদের দলিল হতেই পারে না। কারণ এ বক্তব্যের কোন সনদ ইমাম বুখারী রহঃ উল্লেখ করেন নি। আর সনদ ছাড়া কথা কথিত আহলে হাদীসরা মানে না।
এমনকি সনদহীন কথাকে তারা ভিত্তিহীন সাব্যস্ত করে থাকে।
অথচ এ বক্তব্যটির কোন সনদ না থাকা
সত্বেও একে দলিল হিসেবে ওরা পেশ করে কিভাবে?
এটাতো তাদের বক্তব্য অনুযায়ীই দলিল হওয়ার যোগ্য না। এমনিতেই বাতিল।

এছাড়া সাহাবীদের কোন আমল বা বক্তব্য ওদের কাছে দলিল নয়।

তাহলে এটি দলিল হবে কিভাবে?
সুতরাং বুখারীতে আমীন জোরে বলার কোন

দলিল কথিত আহলে হাদীসদের নেই।

ওদের আরেকটি হাস্যকর দলিল;

নিজেদের মত সাবেত করার জন্য ওরা আরেকটি দলিল পেশ করে থাকে বুখারীর। সেটি হল-এ বাবের সনদযুক্ত হাদীসটি-

747 – حدثنا عبد الله بن يوسف قال أخبرنا مالك / عن ابن شهاب عن سعيد بن المسيب وأبي سلمة بن عبد الرحمن أنهما أخبراه عن أبي هريرة أن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( إذا أمن الإمام فأمنوا فإنه من وافق تأمينه تأمين الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه ) . وقال ابن شهاب وكان الرسول صلى الله عليه و سلم يقول ( آمين )

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন ইমাম আমীন বলে তখন তোমরা আমীন বল। কেননা যাদের আমীন বলা ফেরেস্তাদের আমীন বলার সাথে মিলে যায় তাহলে তাদের আগের সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৪৭}

সুতরাং আমীন জোরে বলতে হবে।

✒আমাদের জবাব:
মজার ব্যাপার হল, এ হাদীসটিকে ওরা আমীন জোরে বলার পক্ষে কি করে দলিল হিসেবে পেশ করে এটাই আশ্চর্য ব্যাপার। এখানে আমীন জোরে বলার আলোচনা এল কোত্থেকে?

ওদের যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ফেরেস্তারা কি আমীন জোরে বলে?

কি বলবে?
নিশ্চয় বলবে যে, না, ফেরেস্তারা আমীন আস্তে বলে।

তাহলে বলুন-ফেরেস্তারা আমীন আস্তে বললে ইমাম আর মুক্তাদীরা আমীন জোরে বলবে কেন?

কোন যুক্তিতে?

এখানেতো ফেরেস্তাদের সাথে আমীনের মাঝে একতা আনার কথা হয়েছে, তাহলে সে হিসেবে ফেরেস্তারা যেমন আমীন আস্তে বলে ইমাম মুসল্লিরা আস্তে বলার দ্বারাইতো কেবল পূর্ণ একতা আসবে।

জোরে বলার মাঝে হয় কি করে?

এটাতো আমাদের দলিল হল?

ওদের হল কি করে?

বুখারীতে মূলত আমাদের মাসলাকের দিকেই ইঙ্গিত

763 – حدثنا عبد الله بن يوسف قال أخبرنا مالك عن سمي عن أبي صالح عن أبي هريرة رضي الله عنه أن الرسول صلى الله عليه و سلم قال( إذا قال الإمام سمع الله لمن حمده فقولوا اللهم ربنا لك الحمد فإنه من وافق قوله قول الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه (صحيح البخارى،كتاب الصلاة، باب فضل اللهم ربنا ولك الحمد، رقم الحديث-763)

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন ইমাম সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে তখন তোমরা বল-আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ, কেননা যার বলা ফেরেস্তাদের বলার সাথে সাথে হবে তার আগের সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৬৩}

এ হাদীসে লক্ষ্য করুন-পূর্বের আমীন বলার হাদীসের মতই এখানে বলা হয়েছে যে, ফেরেস্তার রাব্বানা লাকাল হামদ বলার সাথে বললে গোনাহ মাফ হয়ে যাবে, পূর্বে হাদীসে বলা হয়েছে আমীন ফেরেস্তার সাথে বলতে পারলে গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।

এ হাদীসের ক্ষেত্রে কথিত আহলে হাদীসদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে, এখানে হাদীসে যে রাব্বানা লাকাল হামদ এর কথা বলা হয়েছে এটা মুক্তাদীরা

আস্তে বলবে না জোরে?

তখন তারা বলবে যে, আস্তে।

তখন মজা করে বলুন যে, এখানে আস্তে বললে পূর্বের হাদীসের বর্ণনাভঙ্গী এক হওয়া সত্বেও সেখানে জোরে বলা বুখারী থেকে সাবিত হয় কি করে?

একথা সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল যে, বুখারীতে কথিত আহলে হাদীসদের মত আমীন জোরে বলার কোন প্রমাণ নেই। বরং ওদের বিপরীত আমাদের মতের প্রমাণ আছে।

তাহলে বুখারী আমাদের না ওদের?

আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, বুখারীতে কথিত আহলে হাদীসদের কোন দলিল নেই। সবই ওদের মনগড়া বা কম বুঝের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা একথা প্রমাণিত হয়েছে ইনশাআল্লাহ যে, ইমাম বুখারী ও বুখারী শরীফ আমাদের কথিত আহলে হাদীসদের নয়। তাই ওদের চাপাবাজিতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

আল্লাহ তাআলা আমাদের কথিত আহলে হাদীসের ফিতনা থেকে আমাদের সরলপ্রাণ মুসলমানদের হিফাযত করুন।
আমীন। ছুম্মা আমীন।

প্রথম পর্বের লিংকঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=777612809059329&id=100004318515377


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!