আসলে এটি ইমাম বুখারী রহঃ এর মত নয়, কথিত আহলে হাদীসদের মত। ইমাম বুখারী রহঃ এর দিকে মিথ্যার নিসবত করা হয় এটি বলে।
বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের ৩৬ নং পৃষ্ঠায় ইমাম বুখারী রহঃ একটি পরিচ্ছেদ এনেছেন। সেটি হল- بَابُ إِذَا غَسَلَ الجَنَابَةَ أَوْ غَيْرَهَا فَلَمْ يَذْهَبْ أَثَرُهُ তথা “যখন কেউ বীর্য ইত্যাদি ধৌত করা হয়, কিন্তু তার চিহ্ন না যায়”।
উক্ত পরিচ্ছেদের অধীনে ইমাম বুখারী রহঃ দুটি হাদীস এনেছেন, যার মাঝে একটি হল,
عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ: سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ [ص:56] فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الجَنَابَةُ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: «كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَأَثَرُ الغَسْلِ فِيهِ» بُقَعُ المَاءِ
অনুবাদ- আমার বিন মাইমুন রহঃ সুলাইমান বিন ইয়াসার রাঃ কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন, “আমি রাসূল সাঃ এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম তারপর তিনি নামাযের জন্য বের হতেন এমতাবস্থায় যে, কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকতো। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৩১, ২২৯}
এ পরিচ্ছেদের অধীনে গায়রে মুকাল্লিদ আলেম ওহীদুজ্জামান সাহেব লিখেছেনঃ “ইমাম বুখারী রহঃ এ পরিচ্ছেদে বীর্য ছাড়া অন্য কোন নাপাকীর কথা উল্লেখ করেননি। হয়তো বাকি নাপাককে বীর্যের উপরই কিয়াস করেছেন। এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, ইমাম বুখারী রহঃ এর নিকট বীর্য নাপাক।{তাইসীরুল বারী-১/১৭০}
# গায়রে মুকাল্লিদ আলেম মাওলানা ওহীদুজ্জামান সাহেবের বক্তব্য দ্বারা একথা স্পষ্টভাবে বুঝা গেল যে, ইমাম বুখারী রহঃ এর নিকট বীর্য নাপাক। অথচ গায়রে মুকাল্লিদ ভাইদের মত হল যে, বীর্য পাক। এ কারণেই বুখারীর মতের বিরোধীতা করে আহলে হাদীস অহীদুজ্জান সাহেব লিখেনঃ
“বীর্য পাক, চাই তা ভিজা হোক, বা শুকনো হোক, ঘাঢ় হোক বা পাতলা। {কানযুল হাকায়েক-১৬, নুজুলুল আবরার-১/৪৯}
# আহলে হাদীস নওয়াব নূরুল হাসান সাহেব লিখেছেনঃ “বীর্য সর্ববস্থায় পবিত্র”। {আরফুল জাদী-১০}
# আহলে হাদীস নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান সাহেব লিখেছেনঃ “মানুষের বীর্য নাপাক হওয়ার কোন দলীল নেই”। {বুদুরুল আহিল্লাহ-১৫}
অথচ বুখারী, হাদীস স্পষ্ট প্রমাণ করছে যে, বীর্য নাপাক। কারণ যদি বীর্য পাকই থাকতো, তাহলে আম্মিজান আয়শা রাঃ কেন তা পানি দিয়ে ধুয়ে দিতেন?
ইমাম বুখারীর বিরোধীতা করে বীর্যকে কথিত আহলে হাদীসরা দলীল ছাড়াই সর্ববস্থায় পবিত্র বলে থাকে তাদের আকাবীরদের অন্ধ তাকলীদ করে । খাওয়া-পান করা সবই মনে হচ্ছে জায়েজ তাদের কাছে?!
তাছাড়া রাসূল সাঃ এটা সিক্ত থাকলে ধৌত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর কাপড়ে লাগলে তা ধৌত করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাক হলে ধৌত করার নির্দেশনা দিলেন কেন? আর নবীজী সাঃ এর কাপড়ে যে বীর্য লেগে শুকিয়ে গেয়েছিল, তা তিনি খুটিয়ে তুলে ফেলাটাই প্রমাণ করে তা পাক থাকলে খুটে ফেলে দেয়ার দরকার কি? যেমন কাপড়ে যদি আটা লেগে শুকিয়ে যায়, তাহলে তা খুটিয়ে ফেলে দিলে তা একেবারেই উঠে যায়, এমনি বীর্যও শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেলে তা তুলে ফেললে তার কোন কিছু আর বাকি থাকে না, তাই নবীজী সাঃ খুটিয়ে তুলে ফেলার পর তা না ধুয়েই নামায পড়েছেন। বীর্য পাক এজন্য নয়।
এছাড়া অন্যান্য হাদীসে এসেছে-
يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ
আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}
হযরত ওমর বিন খাত্তাব রাঃ বলেন-বীর্য সিক্ত থাকলে তা ধুয়ে ফেল, আর শুকিয়ে গেলে তা খুটিয়ে ফেল। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৯৩৩}
-আহলে হক মিডিয়া থেকে
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!