নারী নির্যাতনের সমাধান হিসাবে পশ্চিমা বিশ্ব সমস্ত পৃথিবীব্যাপী ফ্রিডম বা স্বাধীনতার ধ্যানধারণাকে জোরের সাথে প্রচার করলেও, প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার মিথ্যা শ্লোগানে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে পশ্চিমের নারীরা হয়েছে এক অভিনব দাসত্বের শিকার।
পশ্চিমা পুঁজিবাদী সভ্যতা – নারী নির্যাতনের মূল কারণ:
বাস্তবতা হলো,ফ্রিডম বা স্বাধীনতার ধারণা পশ্চিমা সমাজের মানুষকে ঠেলে দিয়েছে স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন এক জীবনের দিকে। যেখানে স্বাধীনতার অপব্যবহারে নির্যাতিত হচ্ছে নারীসহ সমাজের অগণিত মানুষ। সীমাহীন স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীগুলোও শুধুমাত্র লাভবান হবার জন্য নারীকে পরিণত করছে নিখাদ ভোগ্যপণ্যে।
এক নজরে পশ্চিমা সমাজে নারী নির্যাতন:
১. ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির নির্যাতন: পশ্চিমা সমাজে মূলতঃ
তাদের ফ্যাশন, ডায়েট আর কসমেটিকস্ ইন্ডাস্ট্রিগুলোই নির্ধারণ করে নারীর পোশাক, তার সাজ-সজ্জা,এমনকি তার দেহের প্রতিটি অঙ্গের মাপ। স্বাধীনতার মিথ্যা শোগানে নারীকে তারা বাধ্য করে জঘণ্যভাবে দেহ প্রদর্শন করতে। বস্তুতঃ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিগুলোর বেঁধে দেয়া ভাইটাল স্ট্যাটিকটিকস্ অর্জন করতে গিয়েই পশ্চিমে অকালে ঝরে যায় এ সব নারীর জীবন।
২. ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি:
নারী-পুরুষের লাগামহীন মেলামেশা আর প্রবৃত্তি পূরণের অবাধ স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ ফলাফল স্বরূপ পশ্চিমা সমাজের নারীরা অহরহ হয় ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার। এমনকি এই বিকৃত আচরণ থেকে সে সমাজের নিষ্পাপ শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায় না।
৩. কর্মক্ষেত্রে হয়রানি:
গণমাধ্যম গুলোতে নারীকে প্রতিনিয়ত সেক্স সিম্বল হিসাবে উপস্থাপন করার ফলে নারীর প্রতি সমাজের সর্বস্তরে তৈরী হয় অসম্মানজনক এক বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গী। আর বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গীর ফলাফল হিসাবে শিক্ষিত নারীরাও কর্মক্ষেত্রে তাদের পুরুষ সহকর্মীর কাছে প্রতিনিয়ত হয় যৌন হয়রানির শিকার।
৪. পারিবারিক সহিংসতা:
যে সমাজে নেই কারো কোন জবাবদিহিতা, নেই পরস্পরের প্রতি কোন শ্রদ্ধাবোধ আর সেই সাথে রয়েছে সীমাহীন স্বাধীনতার সুযোগ, সে সমাজে ভয়াবহ পারিবারিক সহিংসতা হয় নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। বস্তুতঃ জীবন সম্পর্কে এ ধরণের ভয়ঙ্কর ভ্রান্তিমূলক ধারণা থেকেই বিয়ের পূর্বে বা পরে সবসময়ই পশ্চিমের নারীরা হয় তার পুরুষসঙ্গীর পাশবিক নির্যাতনের শিকার।
৫. কুমারী মায়েদের যন্ত্রণা:
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার প্রধান অসহায় শিকার হয় পশ্চিমের কুমারী অল্পবয়সী নারীরা। আনন্দের পর্ব শেষে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষ সঙ্গী আর্থিক বা সামাজিক কোন দায়দায়িত্ব স্বীকার না করায় একাকী নিতে হয় তাকে অনাহুত সন্তানের দায়িত্ব।
৬. কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক নির্যাতন:
পশ্চিমা সভ্যতা পৃথিবীব্যাপী নারী-পুরুষের সমঅধিকারের বার্তা প্রচার করলেও তাদের নিজেদের সমাজেই নারীরা প্রচন্ড বৈষ্যমের শিকার। শুধু মাত্র নারী হবার জন্য একই কাজের জন্য তাকে পুরুষের চাইতে দেয়া হয় অনেক কম অর্থ। বস্তুতঃ পশ্চিমের দেশগুলোতে নারীরা শুধুমাত্র দুটি পেশায় পুরুষদের চাইতে বেশী উপার্জন করে, তার একটি হচ্ছে মডেলিং আর অন্যটি হচ্ছে পতিতাবৃত্তি।
৭. পর্ণোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির নির্যাতন:
পশ্চিমা বিশ্বে নারীরা সবচাইতে জঘন্য ভাবে নির্যাতিত হয় পর্ণোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে। যেখানে, ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির মতোই নগ্ন নারীদেহকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে পৃথিবী ব্যাপী বিস্তৃত মুনাফালোভী এক চক্র আর, এর জঘন্য শিকার হচ্ছে লক্ষ কোটি অসহায় নারী ও শিশু।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!