Monday, September 11, 2017

মৃত ব্যক্তির জন্য তিনদিনা সাতদিনা ও চল্লিশা পালন করা প্রসঙ্গে।

কেউ মারা গেলে মৃতের বাড়িতে প্রথা পালন করে তিনদিনের দিন বা সাতদিনের দিন অথবা চল্লিশ দিনের দিন দাওয়াতের আয়োজন করা--যাকে যথাক্রমে তিনদিনা, সাতদিনা ও চল্লিশা বলে, শরীয়তের দৃষ্টিতে এ প্রথা পালন করা নাজায়িয ও বিদ‘আত। এসব পালন করার কোন অবকাশ নেই।

সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর যুগে একে নিষিদ্ধ ও মন্দ কাজ গণ্য করা হত। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, “আমরা মৃতের দাফন কার্য শেষ হওয়ার পর তার বাড়িতে একত্রিত হওয়া এবং (দাফনে শরীক লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য) খাবারের আয়োজন করাকে নিয়াহা (নিষিদ্ধ পন্থায় শোক পালন)-এর অন্তর্ভুক্ত গণ্য করতাম।”
(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৬৯০৫)

বস্তুত দাওয়াতের আয়োজন তো করা হয় কোনো আনন্দ-উৎসবের সময়, কোনো বেদনা বা শোকের মুহূর্তে নয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত হল--মৃতের পরিবার-পরিজনদের জন্য প্রতিবেশীর পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা, যেন তাদেরকে মৃতের জন্য ব্যস্ততা ও শোকাহত থাকার কারণে অনাহারে থাকতে না হয়। অথচ উল্লিখিত কাজটি এর সম্পূর্ণ উল্টো ও বিপরীত। তাই এর থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

আর যদি মৃত ব্যক্তির জন্য ছাওয়াব রেসানী হিসেবে খাওয়ানো হয়, তাহলে তিনদিন বা সাতদিন কিংবা চল্লিশ দিনের নিয়ম করা যাবে না, বরং ঈসালে ছাওয়াবের জন্য সেভাবে প্রথাগত নির্দিষ্ট দিনের নিয়ম পালন না করে যে কোন দিন তা করা যায়। আর যেহেতু তখন তা মৃত ব্যক্তির রুহে ছাওয়াবের পৌঁছানোর জন্য সদকার হুকুমে হবে, তাই শুধু কেবল গরীব ও ফকীর-মিসকীনদেরকে খাওয়াতে হবে। সেই সদকার খাবার ধনীদেরকে খাওয়ানো যাবে না। এতব্যতীত মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ যাতে কোন নাবালগ শরীক আছে বা ওয়ারিসদের সবার অনুমতি নেয়া হয়নি  সেখান থেকে খরচ করা যাবে না। বরং তার আত্মীয়গণ নিজেদের অর্থ-সম্পদ দ্বারা তার জন্য গরীব-মিসকীনদের খাওয়ানো বা দান করার মাধ্যম ঈসালে ছাওয়াব করবেন।

(প্রমাণ : সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৬১২; ফাতহুল কাদীর, ২য় খণ্ড, ১০২ পৃষ্ঠা; রদ্দুল মুহতার, ২য় খণ্ড, ২৪০ পৃষ্ঠা/ ইলাউস সুনান, ৮ম খণ্ড, ৩২৯ পৃষ্ঠা)


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!