Thursday, February 28, 2019

শাইখ সালেহ আল তালিব হাফিজাহুল্লাহ তিনি কি লা-মাযহাবী ছিলেন?? এবং তিনি গ্রেফতার হওয়ার মুল কারণ ছিল কী?

একটি শ্রেণীর দাবী শাইখ সালহ আল তালিব লা-মাযহাবী ছিলেন এবং পাশাপাশি মনের মধ্যে নাস্তিকতা লালন করেন [ নাউজুবিল্লাহ ] 


বড় দুঃখের সাথে বলতে হয় একজন মজলুম আলেমকে নিয়ে এভাবে কথা বলা নিজেদের ধ্বংস ছাড়া কিছু নয়। 


প্রথম কথা :

তিনি কোন লা-মাযহাবী ছিলেন না। তিনি হাম্বলি মাযহাবের অনুসারী।  শাইখ সুদাইসি শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী।  মক্কার অধিকাংশ আলেম হাম্বলি এবং শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী।  মক্কাতে হাম্বলি ও শাফেয়ী মাযহাবের প্রচার প্রসার সব থেকে বেশি। তিনি রফউল ইয়াদাইন করেন হাম্বলি মাযহাবের অনুসারী হওয়ার কারণে।

কারণ হাম্বলি মাযহাবে রফউল ইয়াদাইন করতে হয়। তাদের মাযহাবের উসুল হিসেবে রফউল ইয়াদাইন জায়েজ। 


দ্বিতীয় কথা:

তিনি কোন নাস্তিক ছিলেন না বা মনের মধ্যে নাস্তিকতা লাল করেননি বরং নাস্তিকতার বিরুদ্ধে অগ্নিঝরা ভাষা দেওয়ার কারণে আজ সে জালিমের কারাগারে বন্দী আছে।


শায়েখ সালেহ আল তালিব হলেন সর্বপ্রথম গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি যিনি একই সাথে কা’বা শরীফের ইমাম ও খতীবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ৷

শাইখ সালেহ তাঁর প্রদত্ব বয়ানে প্রচন্ডরকমভাবে, অশ্লীলতা ও ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ বস্তু গুলো থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব বলেন, এবং যারা বেহায়াপনার প্রচার করছে তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করার আদেশ করেন, যদিও তিনি তাঁর সব গুলো কথা অজ্ঞাত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন কিন্তু যাদের বুঝার তারা বুঝে নিয়েছেন তিনি এই কথা গুলো কাকে সম্ভোধন করে বলেছেন!


নিচের খুৎবা’র পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷


তিনি বলেনঃ

মুনাফেকরা তাদের মঞ্চে বলেঃ তোমরা কুরআনের মজলিসকে বর্জন করো ৷

আমরা আমাদের মসজিদের মিম্বার থেকে স্পষ্ট ভাষায় তাদেরকে বলছি, হে মুসলমানরা তোমরা মুনাফেক ও বেইমানদের অনুষ্ঠানকে বর্জন করো৷


তোমরা আল্লাহর নাফরমান এবং যারা এই সমাজের মধ্যে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাকে চালু করছে তাদেরকে বয়কট করো ৷


আমরা ঐ কথায় বলব যা আমাদের পূর্বসূরী বড় বড় উলামায়ে কেরামগণ বলে গেছেন, তাঁরা বলেছেনঃ তোমরা যে কোন ধরণের গোনাহের অনুষ্ঠানকে বর্জন করো এবং ঐ সমস্ত মানুষদের অনুষ্ঠানকে বর্জন করো যাদের কর্ম পদ্ধতী সন্দেহযুক্ত, এবং যারা নারীদেরকে রাস্তায় বের করে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনুমতি দেয়, যারা নারীদেরকে উলঙ্গপনার দিকে আহবান করে, যারা নারী-পুরুষের অবাদে মেলামেশার দিকে উৎসাহিত করে বর্তমান সমাজে ফাসাদ শুরু করেছে, তাদেরকে বয়কট করো ৷


যারা নেশাযুক্ত পানীয়কে বৈধতা দান করে তাদেরকে বৈকট করো ৷


পরিপূর্ণভাবে গান-বাজনা এবং কমেডি, কৌতুক ও সিনেমার অনুষ্ঠানকে বয়কট করো৷


যদিও যারা এই সিনেমা ও কমেডি চালু করেছে তারা এটাকে নিছক বিনোদন মনে করে অথচ, এটা কেবল বিনোদন নয় বরং এই সিনেমার অনুমোদন দ্বারা একমাত্র উদ্দেশ্য হল পশ্চিমা চিন্তা-চেতনাকে লালন করা এবং সমাজের রন্ধে রন্ধে পশ্চিমা আদর্শ ও নীতিকে ঢুকিয়ে দেওয়া ৷


যে নাচ গানের এবং কমেডি নাটক সিনেমার অনুমোদন একেবারে ইসলামে নেই ৷ ইসলামী নীতিতে এই কাজ হারাম, ইসলাম এর অনুমোদন প্রদান করে না ৷


তারা অশ্লীলতাকে বিনোদন নামের পোষাক পরিয়ে এবং বেহায়াপনাকে মুক্তচিন্তা-চেতনার চাদর পরিয়ে উপস্থাপন করছে ৷

অথচ, এই বিনোদন দ্বারা কেবল এটাই উদ্দেশ্য যেন, তারা যুবক যুবতীদেরকে নাচ-গান, বেহায়াপনা ও অশ্লিলতা ও ইখতিলাত অর্থাৎ অবাদ মেলামেশার দিকে মাজনুন তথা পাগলপারা বানিয়ে দিতে পারে ৷


তাদের এই অসৎ উদ্যেগ পবিত্র এই ভূমির জন্য লজ্জাজনক বিষয়, এবং এই পবিত্র ভূমিকে লাঞ্চিত করার শামিল, তাদের এই অসৎ উদ্যেগ ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ সংকেত, এক সময় আসবে যখন এই বেহায়াপনায় ‘কুদওয়াতুন লিশ্শাবাব’ তথা যুবকদের উত্তম মডেল হিসাবে স্থান পাবে ৷


হে সীমাহীন চরমপন্থীরা! তোমরা জনগণের ধন সম্পদকে অন্যায়ভাবে, অহেতুক পাপ কাজে খরচ করছো, এতে না আছে জনগণের কোন রকম উপকারের ছিটাফোঁটা, না আছে জনগণের কল্যাণ৷

হে চরমপন্থীরা! যদি তোমরা জনগনের পয়সাকে পাপকাজে খরচ করা বন্ধ না করো, তাহলে একদিন আসবে যেদিন এই অপরাদ ও পাপ তোমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে এবং তোমাদের জন্য বড়ই আফসোসের কারণ হবে, ফলে তোমরা পরাজয় বরণ করবে ৷


হ্যাঁ, অচিরেই তোমাদের শক্তি এবং আদর্শের পরাজয় হবে ৷ তোমাদেরকে তারাই পরাজিত করবে যারা সর্বদায় দ্বীনের উপর অটল থাকে, তারাই একদিন তোমাদের বিনোদন নামক বেহায়পানা ও অশ্লীলতাকে ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করবে, তাদের নিজেদের উত্তম আদর্শ এবং সঠিক নিয়ত ও ইসলামী আক্বীদার মাধ্যমে ৷


অচিরেই তোমাদের অশ্লীলতার মঞ্চকে কুরআনের ধারকবাহকগণ আদর্শের যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করবে।


অচিরেই তোমাদেরকে পরাজিত করবে ঐ আল্লাহুআকবার ধ্বনীর আওয়াজ যা দিবারাত্রি পাঁচ বার কানে ভেসে আসে, এবং আমাদের অন্তরে এই পবিত্র আওয়াজের বাতাস প্রবাহিত হয় ও চক্ষু শীতল হয় ৷


যে বা যারা শাইখ আল তালিবকে নিয়ে উগ্র পূর্ণ কথা বলে থাকে বুঝতে হবে তাদের মতলব খারাপ।

আল্লাহ আমাদের এমন উগ্রতা থেকে হেফাজত করুন। #আমীন ।


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!