দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সংগ্রামী মহাসচিব এবং হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার নিকট একমাত্র মনোনিত ধর্ম ইসলাম। পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ইসলামই কেবলমাত্র শ্রমিকের ন্যায়্য অধিকার দিয়েছে৷ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি ৷ সুতরাং শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন অপরিহার্য৷
মে দিবস উপলক্ষ্যে সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন আল্লামা বাবুনগরী৷ আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই শ্রমিকদের মজুরি আদায়ের আদেশ দিয়েছেন। মালিক যা খাবেন-পরবেন; শ্রমিকদেরও তা খেতে-পরতে দিতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। এটা শান্তির ধর্ম ইসলামের বিধান। এই বিধানের মাধ্যমে ইসলাম শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণ শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে দুনিয়ায় অনুস্মরণীয় আদর্শ স্থাপন করে গেছেন ৷
তিনি বলেন, শ্রমিক মেহনতি মানুষের প্রচেষ্টা-ই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি শ্রমজীবী মানুষ আজো শোষিত, বঞ্চিত ও পদদলিত৷ পুঁজিবাদিরা শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত অর্থ আত্মসাৎ করে কোটিপতি হচ্ছেন। ফলে শ্রমিকরা ঠিকমত দুবেলা দুমুঠো আহার না পেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন। ইসলাম বিজয়ী থাকলে শ্রমিকরা এহেন হয়রানীর শিকার হতো না।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই,প্যারিসে অনুষ্ঠিত শ্রমিক প্রতিনিধি সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮৯০ সালের ১লা মে থেকে শ্রমিক অধিকার দিবস তথা মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী উদযাপন শুরু হয়। মে দিবসে শ্রমিক সমাবেশ করে 'দুনিয়ার মজদুর এক হও একহও' বলে শ্লোগান দেয়া হয়। কিন্তু মাস শেষে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হয় না। পত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যায় পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা বকেয়া বেতন আদায়ের দাবীতে কর্মবিরতি করে আন্দোলন করছেন। কিন্তু তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় না করে উল্টো তাদের উপর পুলিশ দিয়ে লাঠিচার্জ করানো হয়। তাদের ওপর গুলি চালানো হয়৷ হামলা-মামলা, হুমকি ও বরখাস্ত করা হয়। তাদের ন্যায্য অধিকার দেয়া হয়না।
আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, দেশের উৎপাদনে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও সমৃদ্ধিতে শ্রমিকরা বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করা সত্ত্বেও যুগে যুগে শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি শোষিত-বঞ্চিত ও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷ শ্রমিক নির্যাতন ও শোষণের ওপর দিয়েই গড়ে উঠেছে পুঁজিবাদীদের বিশাল বিশাল অট্টালিকা। তিনি বলেন, শ্রমিকদের শোষণ করা মানে দেশকে অগ্রসর হতে না দেওয়া। শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি আশা করা যায় না।
শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী প্রদান, কাজ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি সকলস্তরের শ্রমিকদের ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত ব্যবস্থা ছাড়া নির্যাতিত নিপীড়িত শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় উল্লেখ করে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। অতএব ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন সময়ের অপরিহার্য দাবি৷
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!