Sunday, June 3, 2018

সারগোদার শিক্ষিতা সুন্দরী এক নারীর সীমাহীনলোভের করুণ পরিণতি

সারগোদায় এক বিত্তশালী পরিবারে দুই সন্তান রেখে মারা যান তাদের
পিতামাতা ৷ দুই সন্তানের একটি মেয়ে অন্যটি ছেলে ৷ দুই সন্তান মায়ের বোন
খালার সংসারে বড় হয় ৷ মেয়েটি ছিল অসাধারণ সুন্দরী এবং অসম্ভব রকমের
মেধাবী { পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে সে বিএ পাশ করে ৷ তার ছোট ভাই
ছিল সহজ সরল বোকা টাইপের ৷ বিএ পাশ করার পর মেয়েটি ঝ এর এক
জমিদারকে ভালোবেসে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয় ৷ তার ছোট ভাই খালার
সংসারে থেকে যায় ৷ বিয়ের পর জমিদার স্বামীর অঢেল ধন সম্পদ থাকার
পরও মেয়েটি তার বোকা ছোট ভাইকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করে পিতার কোটি
টাকার সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নেয় ৷ ফলে সারগোদার উর্বর কৃষি জমি
এবং শহরের মূল্যবান জমির মালিকানা সে লাভ করে ৷ খালা তাকে বোঝাতে
থাকে দেখ, ছোট ভাইকে এভাবে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা ঠিক হচ্ছে না৷ এর ফল
ভালো হবে না ৷ কিন্তু রূপের শিক্ষার ঐশ্বর্যের গর্বে গর্বিত নারী কোন কথাই
কানে নেয়নি ৷ ছোট ভাই ধূর্ত বড় বোনের সঙ্গে পেরে উঠেনি ৷ ১৯৪৭ সালে
ছোট ভাই পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে থাকে এবং অল্পদিনের
মধ্যে অনাহারে অর্ধাহারে হতাশায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করে ৷
সারগোদার শাহজাদী ঝ এর জমিদার মহলে এসে সংসার সাজায় ! তার
গর্ভ থেকে দুই পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে ৷ যতোই অর্থ
সম্পদ পাচ্ছিল কিছুতেই তার তৃপ্তি হচ্ছিল না ৷ অল্পদিনের মধ্যে সে
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে যায় ৷ ১৯৬৭ সালে তার হৃদপিন্ডে সমস্যা দেখা
দেয় ৷ অল্প বয়সে বার্ধক্যে উপনীত হয় এ লোভী নারী ৷ ছেলেমেয়েরা কলেজে
পড়ার সময় জমিদার স্বামী অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করে এবং মধুচন্দরিমা
উদযাপনের জন্য নববধূকে নিয়ে মারী চলে যায় !
শাহজাদীর খালার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল ৷ ১৯৬৭ সালের মে মাসে
সারগোদার পুরাতন ভবন এলাকায় স্থাপিত পিএএফ হাসপালে আমি
শাহজাদীর চিকিৎসার জন্য গমন করি ৷ তার জীবনের সব ঘটনা আমি
জানতাম ৷ তার খালা শাহজাদীর বিছানার এক পাশে হেলান দিয়ে
বসেছিলেন ৷ আমার সঙ্গে আমার শ্রীও ছিল ৷ শাহজাদীর খালা আমাদের
দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন ৷ শাহজাদীর রূপ লাবণ্য তখনো ছিল চোখে পড়ার
মতো | তার গভীর কালো চোখ গোলগাল চেহারা, ফর্সা গায়ের রং, সুন্দর
দাঁত, পাতলা ঠোট তখনো ছিল অসম্ভব রকমের আকর্ষণীয় ৷ কেন জানি না
তার পরিধানে সেদিন লাল রং এর পোশাক দেখেছিলাম ৷ হাতে কানে গলায়
নাকে ছিল সোনার অলঙ্কার ৷ বিছানায় শাহজাদী ছটফট করছিল ৷ হঠাৎ করে
কখনো উঠে বসছিল ৷
এবার উঠে বসে সে স্বামী এবং সন্তানদের ডাকলো ৷ পরক্ষণেই শুয়ে
পড়লো ৷ তার অস্থির অবস্থা দেখে তার খালা কেঁদে ফেললেন এবং তাকে
সান্তনা দিলেন ! এয়ারকন্ডিশন থাকা রুমের মধ্যেও শাহজাদী ক্রমাগত
ঘামছিল ! তার চোখে মুখে ছিল আতঙ্ক ৷ হঠাৎ ছাদের দিকে তাকিয়ে
শাহজাদী বলল দেখো খালা আমার বেকুব ভাই আমাকে নিতে এসেছে ৷ তার
সঙ্গে ভয়ানক চেহারার একজন লোক রয়েছে ৷ খালা আমার চুড়ি ঝুমকা সব
সোনার অলঙ্কার আমার ভাইকে দিয়ে বলো আমাকে যেন না নিয়ে যায় |
দেখো আমার ভাই আমার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷ একথা বলে
শাহজাদী নিজের সোনার অলঙ্কার খুলতে লাগলো ৷ খালা তার হাত চেপে
ধরলেন ৷ চরম অস্থিরতার মধ্যে এক সময় শাহজাদী বেইশ হয়ে পড়লো ৷
পনের মিনিট পর কর্তব্যরত নার্স জানালো শাহজাদী মারা গেছে ৷ অসন্তষ্ট
ক্রুদ্ধ ভাই এবং ভয়ানক চেহারার লোকটির সঙ্গে সে অন্য জগতে আলেমে
বরযথের অধিবাসী হয়েছে ৷

শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!