Sunday, June 3, 2018

সংসার সুখী হওয়ার জন্য স্রীর প্রতি জাদুমাখা নসীহত

স্বামী-ব্রীর সংসার দুই একদিনের জন্য নয় বরং সারা জীবনের জন্য ৷
এ অবস্থায় যদি উভয়ের মধ্যে মনভাঙ্গার ভাব এসে যায় এর চেয়ে দুঃখ আর
কিছুই নেই ৷ নারীর জীবনে মাতা-পিতা ও স্বামীর চেয়ে আপন আর কেউ
নেই ৷ তাই স্বামীকে প্রাণের চেয়েও প্রিয়, আপনের চেয়েও আপন মনে
করতে হবে ! স্বামী যদি গরীবও হন, তবুও তাকে ধনী এবং বিস্তশালী মনে
করতে হবে ৷ তাকে প্রাণভরে ভক্তি-শ্রদ্ধা করবে প্রতিটি কাজ-কর্ম তার
পরামর্শ অনুযায়ী করবে! স্বামী যে কাজ করতে বলে, তা দ্রুত সম্পাদন করে
দিবে ৷ তার ইচ্ছা ও মতের বিরোধী কোন কাজ করবে না ৷

স্বামীর অল্প আয়ে তুষ্ট থাকবে ৷ অভাব-অনটনের কারণে তাকে
তিরস্কার করবে না ৷ সর্বদা হাসিমাখা চেহারায় নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন
করবে, যেন তোমাকে দেখে তার হৃদয়টা আনন্দে বাগ-বাগ হয়ে যায় এবং
সকল পেরেশানী দূর হয়ে যায় ৷ নিজ হাতে তাঁর কাজগুলো করে দিতে চেষ্টা
করবে ৷ চা, নাস্তা পূর্ব থেকে প্রস্তুত রাখবে ৷

স্বামীর পানাহারের প্রাক্কালে এমন আকর্ষণীয় ও মিষ্টিমাথা ভাষায়
আলাপচারিতায় লিপ্ত হবে, যেন তিনি শান্তিতে তৃপ্তি সহকারে পানাহার
করতে পারেন ৷ কারণ, নীরবে শান্তিতে বসে ডাল-ভাত খাওয়া কোরমা-
পোলাওর মতই মজাদার অনুমিত হয় !

মিষ্টি ভাষা দ্বারা তার পেরেশানী দূরীভূত করবে ৷ তাঁর দুঃখে দুঃখী হবে,
তার সুখে সুখী হবে৷ যদি তার উপর ঋণের বোঝা থাকে, তাহলে কারিগরী
যোগ্যতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতার উপার্জন দ্বারা তার ঋণের বোঝা হালকা
করতে চেষ্টা করবে৷ দরিদ্র হওয়ার কারণে স্বামীর সেবা-যত্বে অবহেলা বা

অবজ্ঞা প্রদর্শন করবে না৷

কাজেই স্নীর প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে যাতে স্বামীর মনের মধ্যে
ভ্রীর সম্পূর্ণ অধিকার বজায় থাকে ৷ স্বামী যদি হকুম করে সারা রাত্রি হাত
বেঁধে দাড়িয়ে থাক, তবে শ্রীর তাই করতে হবে ৷ কারণ দুনিয়া ও
আখেরাতের সুখ নির্ভর করে স্বামীর সম্ভুষ্টির উপর ৷ কাজেই দুনিয়ার সামান্য
একটু কষ্ট ভোগ করে যদি পরম সুখ-আনন্দ পাওয়া যায় তাতে বিন্দুমাত্রও
অবহেলা করবে না ৷ এমন কোন কথা কোন সময় বলবে না বা এমন কোন
ব্যবহার করবে না যাতে স্বামীর মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট হতে পারে ৷ স্বামীর
মতের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবে না বা কথা বলবে না ৷

যদি কোন সময় কোন কাপড় বা কোন জিনিস পছন্দ হয়, কিন্তু স্বামীর
আর্থিক অবস্থায় না কুলায়, তখন মনের কথা মনেই রাখবে প্রকাশ করবে
না | স্বামীকে হুকুম করবে না, বেজার হয়ে থাকবে না ৷ নিজেই মনে মনে
চিন্তা করে দেখবে, যদি আমি স্বামীকে বলি, তবে তিনি মনে করবেন, দেখ
আমার দিকে একটু চায় না, আমার এত কষ্ট সে একটুও বুঝে না৷ এতে
দু'জনের মনের মিলে ভাঙ্গন ধরার সম্ভাবনা থাকে ৷ কিন্ত স্বামীর মনে একটু
আঘাত দেওয়াও সতী-সাধ্ধী পক্ষে সম্পূর্ণ অনুচিত ৷ জ্ঞানীগণ বলেছেন,
স্বামী ধনী হলেও নিজে কোন কিছুর জন্য আবদার করবে না ৷ কারণ তাতে
স্বামীর নিকট একটু হালকা হতে হয় ৷ স্বামী যদি নিজের ইচ্ছায় জিজ্ঞেস
করে, তোমার মনে কি চায় আমাকে বল, তখন নিজের কথা প্রকাশ করতে
কোন দোষ নেই |

স্বামীর সংসারে খাওয়া পরার কোন কষ্ট হলে মুখে কখনও কিছু বলবে
না ৷ বরং হাসিমুখে থাকবে যাতে স্বামীর মনে কোন কষ্ট না হয় ৷ স্রী যদি
সন্তোষভাব প্রকাশ করে তবে স্বামীর মনে স্রীর অধিকার আদায়ের মনোভাব
এসে যাবে৷

স্বামী যদি হয় তখন স্রীর এমন কথা বলা উচিত নয় এবং
এমন ব্যবহার করবে না যাতে স্বামীর রাগ আরও বেশি হয় ৷ তখন স্বামীর
সাথে এমন ব্যবহার করবে যাতে স্বামীর রাগ কমে যেতে থাকে ৷

সব সময় বুদ্ধির সাহায্যে স্বামীর মনের অবস্থা বুঝে কথা বললে তাতে
কোন অঘটন ঘটবে না ৷ যদি মনে হয় এখন হাসি-তামাশা করলে স্বামী
বিরক্ত হবে তখন হাসি তামাসা করবে না ! স্বামী যদি রাগ করে কখনও স্রীর
সাথে কথা না বলে তখন স্রীর মুখ ভার করে বসে থাকা ঠিক নয় | তখন
স্বামীকে তোষামোদ করে ঠিক করবে | প্রয়োজন হলে পা ধরে মাফ চেয়ে
নিবে যাতে স্বামীর মন খুশি হয় |

স্বামী যখন বিদেশ হতে বাড়ি আসে, তখন শ্রীর উচিত সমস্ত কাজ
রেখে আগে এসে স্বামীর সামনে উপস্থিত হয়ে তাকে সালাম দেওয়া এবং
তার ক্লান্তি ক্লেশ দুঃখ দূর করার দ্রুত ব্যবস্থা করা ৷ তখন স্বামীকে নিজের
প্রয়োজনের কথা না জিজ্ঞেস করে বলবে, আপনার যাতায়াতে কোন কষ্ট
হয়েছিল-কিনা, কখন খেয়েছেন, আপনার শরীর ভাল তো এ ধরনের প্রশ্ন
করতে হবে ! পানির প্রয়োজন হলে তাড়াতাড়ি পানি এনে দিবে ৷ ক্ষুধা
লাগলে খেতে দিবে ৷ গরমের দিন হলে বাতাস করবে, হাত, পা টিপে দিবে,
অযুর পানি, জুতা-স্যাণ্ডেল ইত্যাদি এনে দিবে ৷ আমার জন্য কি এনেছেন?
কত টাকা বাড়িতে এনেছেন ৷ এ ধরনের বিরক্তিজনক কথা বলবে না ! স্বামী
যদি কিছু এনে থাকে তবে নিজেই সে জিনিস বের করে দিবে বা একটু পরে
ক্রীকেই বলতে পারে ব্যাগের ভিতর জিনিসপত্র আছে বের করে নাও ৷

স্বামীর মাতা-পিতা যতদিন জীবিত থাকে ততদিন তাঁদের খেদমত
করে তাদের মন সম্তভুষ্ট রাখাকে শ্রীর ফরজ মনে করা উচিত ৷ এমন কি স্বামী
টাকা পয়সা রােজগার করে এনে স্রীর হাতে দিলে স্রীর বলা উচিত, এ টাকা
আম্মার হাতে দিন ৷ তিনি যতদিন জীবিত আছেন ততদিন তার কাছেই দিন ৷
এতে স্বামীর মন খুশীতে ডরে যাবে এবং মাতা-পিতাও খুশি হবেন! শাশুদ্ক,
ননদ হতে পৃথক হয়ে সংসার করার চিন্তা করবে না ৷ শাড়ি ননদের সাথে
খুব ভাল ব্যবহার করবে ৷ ননদের কারণেই সাধারণত শাণুড়ির মন খারাপ
হয় ৷ কাজেই ননদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে | স্রীর চিন্তা করা
উচিত যে, তার শাশুডি কত কষ্ট করে তার ছেলেকে মানুষ করেছে |

কত ত্যাগ স্বীকার করেছে, শুধু ছেলে বড় হলে বিবাহ দিবে এবং
ছেলের শ্রীর খেদমত গ্রহণ করবে ৷ আর এখন স্রীর কারণে যদি ছেলে

মায়ের নিকট হতে ভিন্ন হয়ে যায়, তখন মায়ের মনে কত কষ্ট হবে ৷ তখন
শাশুড়ির সমস্ত রাগ যেয়ে পড়ে ছেলের শ্রীর উপর ৷ এমন বৌ ঘরে আনলাম
আর বৌ আনার সাথে সাথে সংসার ভেঙ্গে গেল ৷ বাড়ির সবার সাথে
মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করবে যাতে সবাই ভালবাসে ৷ শ্বশুর বাড়িতে
আসার পর হতে আদব কায়দা রক্ষা করে চলবে৷ বড়দের যথাযথ সম্মান
দিবে এবং ছোটদের স্নেহ ভালবাসা দিবে ৷ নিজের কাজ অন্যের জন্য রেখে
দিবে না ৷ কাজে কর্মে প্রতিযোগিতা বা হিংসা করলে সংসারে কলহ বেঁধে

যাবে

কোন জায়গায় দুইজনে চুপে চুপে কোন কথা বললে সেখান হতে চলে
যাওয়া উচিত ৷ গোপন কথা শোনা উচিত নয় ৷ মনে কোন ধারণা আনা উচিত
নয় যে তার সম্বন্ধে কোন কথা বলছে ৷ এ ধরনের খেয়াল করলে মন
ভাঙ্গাভাঙ্গি হতে পারে !

শ্বশুর বাড়িতে কোন ব্যাপারে কষ্ট পেলে মাতা-পিতার নিকট বলা
উচিত নয় ৷ শ্বশুর বাড়ির খবর ভাই, বোন, মাতা-পিতা বা অন্যান্যরা জিজ্ঞেস
করলে বলতে হবে শ্বশুর শাশুড়ি খুব ভাল এবং তারা ভাল ব্যবহার করে ৷
পিতা-মাতার উচিত মেয়ে যদিও শ্বশুর বাড়ির কোন দুর্নাম করে তা হলে
মেয়েকে বুঝিয়ে বলতে হবে, যাতে এ ধরনের কথা মেয়ে আর না বলে !
পিতামাতার বাড়িতে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করা ঠিক নয় এতে লোকে
বলবে মেয়ে বুদ্ধিমতি না ৷ বেশি কথা বলা ঠিক না ৷ কম কথা বলাও ঠিক
না, স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলবে ৷

স্বামীর মালপত্র, কাপড়-চোপড় রাখবে ৷ সব কিছু পরিস্কার
পরিচ্ছন্ন করে রাখবে ৷ কাপড়-চোপড় যেখানে রাখলে ভাল হয় সেখানে
সাজিয়ে রাখবে ৷ পশমী কাপড় রৌদ্রে দিয়ে শুকিয়ে নিবে ৷ বাড়ি-ঘর
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখবে ৷ এ সমস্ত কাজকর্ম স্বামী বলার আগেই করে

রাখবে ৷

স্বামীর স্বভাব যদি ভাল না থাকে সে জন্য স্বামীর খেদমতের কোন
প্রকার ত্রুটি করবে না ! স্বামীর সাথে পাল্লা দিয়ে চলা ঠিক নয় ৷ রাগ করে
স্বামীকে বশে আনা যায় না ৷ স্বামীকে বশে আনতে হলে ভালবাসা দিতে

হবে | মধুপূর্ণ কথা বলতে হবে ৷ স্বামীর বদ অভ্যাস পরিবর্তন করতে হলে
তার নিকট নত হয়ে থাকতে হবে ৷ স্বামী যা বলে কোন গুণাহের কাজ না
হলে সাথে সাথে শুনতে হবে ৷ কারও নিকট স্বামীর গীবত করবে না৷ এ
উপায় অবলম্বন করলে দেখবে স্বামী শ্রীর অনুগত হয়ে গেছে৷ যদি স্বামী
এতে বশ না হয় তবে শ্রীর এ পরিশ্রমের ফল আখেরাতে পাবে ৷ আর খ্ৰী
যদি এর বিপরীত করে তবে দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়ই হারাতে হবে !

স্বামীর সাথে এমন অমায়িক ব্যবহার করবে এবং লেন-দেন এমন
পরিষ্কার রাখবে, যেন আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী শুনলে খুশী হয় ৷
এভাবে নারীরা ইচ্ছা করলে নিজ প্রজ্ঞা, যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তায় পরশে মাটির
ঘরকে সোনার চেয়েও খাঁটি বানাতে পারে ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে জ্ঞানবতী ও
গুণবর্তী মেয়েরা কখনো দুর্তোগে পড়ে না ৷ তাদের পেরেশানী ও দুঃখ বহন
করতে হয় না ! শ্রীর সামান্য ভুল ও অবহেলার কারণে সংসার পরিণত হয়
জাহান্নামে ৷ কিন্তু সচেতন, সজাগ ও বুদ্ধিমতী স্রী সর্বদা গৃহকে জান্নাত
বানিয়ে রাখে ৷

কারো নিকট স্বামীর দুর্নাম করবে না ! স্বামীর বদনাম হয়- এমন একটি
শব্দও উচ্চারণ করবে না ৷ তাঁর পানাহারের পূর্বে নিজে মিম্প্রয়োজন পানাহার
করবে না ৷ রাগী স্বামীকেও সেবা-যতু ও আদর-সোহাগেয় মাধ্যমে আপন

বানাতে চেষ্টা করবে |

স্বামীর ক্রোধের সময় চুপ-চাপ থাকবে ৷ নিজের ভুল-ত্রুটি স্বীকার করে
ক্ষমা চেয়ে নিবে ৷ নিজের কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি না হলেও এরূপ বলা
sega med তা এই যে, "আগামীতে এমন ডুল হবে না! আপনি যেমন
বলবেন, তেমন-ই করব ৷ যেভাবে চলতে বলবেন, সে ভাবেই চলব ৷ বেশী
বেশী অভিযোগ-অনুযোগ করবে না ৷ স্বামীর কথা খুব গুরুত্ব সহকারে এবং
ধ্যান দিয়ে শ্রবণ করবে ! তার কথার মাঝে কথা বলবে না৷ যখন তার কথা
পূর্ণ হয়ে যাবে এবং কোন কথা বোধগম্য না হয়, তখন জিজ্ঞাসা করবে |
স্বামীর সাথে কথনো "তুই" শব্দ ব্যবহার করবে না ৷ সর্বদা "আপনি" শব্দই
ব্যবহার করা শোভনীয় | স্বামীর জন্য "তুমি" শব্দটি ব্যবহার না করাই
ain i কখনো কর্কশ ভাষায় তার সাথে কথা বলবে না ৷ রাগ-গোস্সা ও
জিদ্দিপনার মিশ্রণ থেকে পৰিত্র হয়ে নগ্রতা, ভদ্রতা, মায়ামাখা, মধুমাখা
ভাষায় কথা বলবে ৷

স্বরণ রাখবে, স্বামীর গৃহই তোমার আপন গৃহ ৷ ঐ গৃহকেই তোমাকে
মনের মত করে সাজাতে হবে ! স্বামীকে আদেশ সূচক কোন কথা বলৰে
না; স্বামীর দ্বারা কোন কাজ করাতে হলে এরূপ বলবে যে, আমার ধারণায়
কাজটি এমন হলে ভাল হত, আমি এমন একটি জিনিস চাচ্ছি, দয়া করে ঐ
জিনিসটি আনবেন ৷ এমন কথা বা কাজ যা করতে স্বামী অপারগ, অক্ষম,
তেমন কোন কাজ করতে স্বামীকে কখনো বাধ্য করবে না ৷

পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে স্রী, স্বামীর অতি নিকটবর্তী হয়ে থাকে ৷
কখনো শাড়ী, ননদ, দেবর-এর বিরুদ্ধে স্বামীর নিকট অভিযোগ করবে না ৷ স্বীয়
জননীকে ঘরের কথা জানাবে না ৷ সদা-সর্বদা তাদেরকে সুসংবাদই শুনাবে ৷
স্বামী-ব্রী নিজেদের ঝগড়ার বিস্তারিত বিবরণ আপন মাতা-পিতা,
আত্বীয়-স্বজন ও বস্ধু-বাঙ্ধবদের জানাবে না এবং পারস্পরিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্রটিগুলোকে
পাহাড়সম বৃহৎ বানিয়ে উপস্থাপন করবে না৷ তিলকে তাল বানাবে না ৷

প্রত্যেক স্বামী কোন কোন জিনিস পছন্দ করে, কোন কোন জিনিস বা
কাজ অপছন্দ বা করে ৷ বুদ্ধিমতী আদর্শ নববধূর কর্তব্য এই যে, তার
ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-চেতনা, চাহিদা-আকাঙ্খা, কামনা-বাসনা, মন-মানসিকতা
যেন প্রাণপ্রিয় স্বামীর মতই হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা ৷

সদা-সর্বদা এই প্রচেষ্টা করবে যে, স্বামীর মুখ থেকে বের হওয়ার
পূর্বেই ঐ কাজগুলো করে ফেলবে ৷ চলা-ফেরা উঠা-বসা, থাকা-খাওয়া,
পোশাক-পরিচ্ছদ, পরিধান, সাজ-গোছ ইত্যাদি ঐ পদ্ধতিতে করবে,
যেমনটি স্বামী মহােদয় পছন্দ করেন৷ এ কথাটি স্মরণ রাখবে
সাথে যতটুকু অন্তরঙ্গ, ফ্রী এবং স্বাভাবিক হবে, ততটুকুই স্বামী-ত্রীর মাঝে
প্রেম-ভালবাসা গাঢ় থেকে প্রগাঢ় ও টেকসই হবে | সুতরাং নেককার
নববধূর কর্তব্য এই যে, সে সর্বদা স্বীয় প্রাণপ্রিয় স্বামীর বাধ্যগত থাকবে ৷
স্বামীর 'হা'এর সাথে 'ই' মিলাবে, আর 'না'এর সাথে 'না' মিলাবে৷
সদা-সর্বদা স্বামীর ইজ্জত সম্মান করতে ত্রুটি করবে না ! স্বামী যদি
অসুস্থ হয়ে যায় অথবা সুস্থই থাকে, কোন অবস্থাতেই তাকে সেবা-যত্পের
ত্রুটি উপলব্ধি করতে দিবে না; বরং স্বামীর মৃত্যুর পরও তার নির্দেশিত পথে
চলতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে ৷

নেককার স্রীর একটি মহৎগুণ এটি হওয়া বাঙ্তুনীয় যে, সে একমাত্র
স্বামীর দেওয়ানা হবে ৷ কারণ, মহানবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসান্তাম
ইরশাদ করেনঃ "যে নারী এমতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, তার স্বামী তার
উপর সন্তষ্ট, তাহলে সে সোজা জান্নাতে প্রবেশ করবে | (তিরমিযী-১৪১১৯!

স্বামী ব্যতীত অন্য কারো প্রতি মন ঝুঁকাবে না, মন বসাবে না,
সাজ-সজ্জা করে অন্যকে স্বীয় রূপ-লাবণ্য উপহার দিবে না ৷ পরপুরুষদের
সম্মুখে আপন রূপ ও সৌন্দর্যের ঝলক দেখাবে না ৷ গুণবর্তী নববধূদের
কর্তব্য এই যে, পরপুরুষদের প্রতি কখনও দৃষ্টিপাত করবে না ৷ বরং স্বামীর
প্রতি প্রেম-ভালবাসাভরা, মায়ামাখা-মধুমাখা ও মায়াবী দৃষ্টিতে তাকাবে !
আপন দৃষ্টি সর্বদা স্বামীর প্রতি নিবন্ধ রাখবে !

নববধূর জন্য লক্ষণীয় এই যে, স্বামীর মনোরঞ্জনের জন্য মাঝে মাঝে
এমন সুগন্ধী ব্যবহার করবে, যা সে পছন্দ করে ৷ কারণ, স্বামীর দৃষ্টিতে
আকর্ষণীয়, কমনীয় হওয়ার জন্য সাজ-সজ্জা করা, সুগন্ধিময় আতর ব্যবহার
করা পারস্পরিক প্রেম-ভালবাসা, স্নেহ-মমতা বৃদ্ধির জন্য বড় কার্যকরী

পদক্ষেপ ৷

নেক ও বুদ্ধিমতি নববধূর কর্তব্য এই যে, মিষ্টি মিষ্টি ঘ্রাণের ভাল ভাল
আতর আপন স্বামীকে নিজ হাতে লাগিয়ে দিবে: স্বামীর কাপড়ে, পোশাকে,
টুপিতে, রুমালে আতর মাখিয়ে দিবে ৷ কেননা, এটিও একটা সুন্নত আমল !
প্রকৃত সুন্দরী স্রী সে-ই, যাকে স্বামী যতবার দেখবে স্বামীর দৃষ্টিতে তার
সৌন্দর্য ততবার বৃদ্ধি পাবে ৷ অর্থাৎ তাকে দারিদ্র অবস্থায় দেখ অথবা
অবস্থায়, সুখে অথবা দুঃখে, সর্বাবস্থায় তার ঠোটে মুচকী হাসির মুক্তা বর্ষিত
হতে দেখবে ৷ পেরেশানী অথবা খুশী উভয় অবস্থায় সে স্বামীকে সান্তনা
দিতে থাকবে ৷ স্বামীর আনুগত্য ও ফরমাবরদারী স্রীর সহজাত ও জন্মগত
স্বভাবে পরিণত হওয়া উচিত ৷ কারণ, স্বামী তার সুখ-শান্তির জন্য রাতকে
দিন করে এবং দিনকে করে রাত |

প্রাণপ্রিয় স্বামীকে একান্ত আপন বানানোর জন্য স্বামীর সাথে ভালবাসার
পদ্ধতি শিক্ষা করা আদর্শ নববধূর কর্তব্য ৷ স্বামী যতই রাগী, জেদী,
একরােখা, বদমেজাজী, বে-ওকুফ ও আওয়ারা হোক না কেন, তাকে সৎ
বানাবার চাবিকাঠি শ্রীর হাতেই ৷ অসংখ্য দৃষ্টান্ত এমন রয়েছে a, fs
প্রচেষ্টায় স্বামী সংশোধন হয়েছে ৷ স্বামীর অন্তরকে করায়ত্ব করার জন্য স্রী
প্রয়োজনে তার দাসীর ভূমিকা পালন করবে ৷ তার ভুল-ত্রুটি ও বক্রতা দূর
করার নিমিত্তে সুন্দর সুন্দর দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝাবে ৷ তাকে দ্বীনি পরিবেশে জীবন
গঠনের জন্য দ্বীনের দাওয়াতে প্রেরণ করবে ৷ যে শ্রী আপন স্বামীকে মন
দিয়ে, হৃদয় দিয়ে ভালবাসবে, সে স্বামীর ক্ষমতা হবে না স্রীকে ফেলে

অন্যের পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরঘুর করার |

অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে প্রেম-ভালবাসার আহ্বানের মাধ্যমে প্রাণপ্রিয়
স্বামীর অন্তরকে স্রীর জিতে নিতে হবে ! স্রী গৃহকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে ৷
ঘরের সৌন্দর্য বুদ্ধিকারী যথাস্থানে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখবে ৷

স্বামীকে নিজের দিকে আকৃষ্টকারী সবচে কার্যকরী গুণ ও সৌন্দর্য হল,
স্বামীর মূল্যবোধ অন্তরে স্থাপন পূর্বক স্বামীর সেবা ও আদেশের দাসত্ব করা,
স্বামীর হুকুমের সম্মুখে মাথা নত করা ৷ মুখপোড়া, লজ্জাহীনা, জেদী ও
নাফরমান নারীদেরকে কোন পুরুষই পছন্দ করে না ৷ আনুগত্যশীল নারীরা
সহজেই স্বামীর অন্তর জয় করতে সক্ষম হয় !

পুরুষরা এমন নারীদের পছন্দ করে- যারা মায়াবী, বিনয়ী, অন্যের দুঃখে
দুঃখিনী, অপরের কষ্টে যার অন্তরে সহমর্মিতা সৃষ্টি হয় এমন স্রীকে স্বামী
মনেপ্রাণে খুব পছন্দ করে ৷ কিন্তু নেতৃত্বকামিনী, কৰ্কশভাষীণী, মহিলা- 'যার
ভাষা কেঁচির মত মানুষের অন্তর কেটে টুকরো টুকরো করে, এমনিভাবে যে
মহিলা সবসময় উদাস ও নিরাশ হয়ে খামুশ চুপচাপ বসে থাকে, এমন
মহিলাকে কোন পুরুষই পছন্দ করে না৷

স্বামী যে কথায় আনন্দ পায়, এমন কথাই বলা শ্রীর জন্য বাঞ্ধুনীয় ৷ শ্রীর
হাসিমাখা, আনন্দভরা মুখ স্বামীর অসংখ্য দুঃখ-বেদনা দূর করতে পারে ৷
"তৃমি-হাসলে জগত হাসে" স্বামীর মনের এ অমূল্য বাক্যটি নববধূকে

অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে ৷ নারীর সবচে গুরুত্ত্বপূর্ণ গুণটি হল, তার
সতীত্বের সংরক্ষণ ৷ সতীত্বের নূরে নারী স্বামীর মন জয় করতে পারে,
সতীত্বের নূর দ্বারা একজন সতী-সাধ্বী নারী স্বীয় গৃহকেও জান্নাতের
নমুনারূপে উপস্থাপন করতে পারে ৷

স্বামীবিহীন তার আর কোন

স্রীর মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে

প্রকৃত বন্ধু হতেই পারেনা ! স্বামীর প্রতি বিরূপ ও বৈষম্যমূলক ধারণা পোষন
না করে পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হবে ; স্বামীর সাথে মিথ্যা, চল-চাতুরী ও
প্রতারণার আশ্রয় নিবেনা ! সমুদয় কথা বার্তা খোলামনে তার নিকট অকপটে

ব্যক্ত করে দিবে ৷ স্বামীর অবর্তমানে তার কোন কথা বা কাজকে কেন্দ্র করে

কোন ধরনের মন্তব্য করবে না৷

তার সুখে সুখী হওয়া, তার দুখে দুখী হওয়া | কোন কারণে যদি স্বামীর
চেহারায় চিন্তা ও নৈরাশ্যভাব ফুটে ওঠে, তাহলে স্বামীর এই Ragen:
কাটাতে স্রী মরিয়া হয়ে প্রচেষ্টা করবে এবং তার হাসি খুশি ও প্রফুল্লতাকে
ফিরিয়ে আনার লক্ষে কথোপকথন অব্যাহত রাখবে; স্বামীর দুঃখ-
কষ্টকে প্রশান্তি ও আরামে পরিণত করতে সদা-সর্বদা প্রস্তুত থাকবে ৷ তার
জটিলতা ও সমস্যাকে নিজের সমস্যা মনে করবে এবং সে ব্যয়ভার হিসেবে
যা কিছু প্রদান করবে, জীবিকা নির্বাহ করবে!

নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া স্বামীর নিকট এমন কিছুর আবদার করবে

না. যা স্বামীর জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাড়ায় ৷ যেমনঃ পোশাক পরিচ্ছদের

অধিক সৌন্দর্য এবং সাজ গোজের বাড়তি প্রসাধনী প্রভৃতি প্রত্যাশা করা,
তিনি যা কিছু দিবেন হৃষ্টচিত্তে তা গ্রহণ করে নিবে ৷ স্রীকে একজন নারী
হিসেবে স্বামী যেভাবে পেতে আগ্রহী শরীয়তের আওতাধীন থেকে সে লক্ষ্য
অর্জনের প্রচেষ্টা করা ৷ আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে সঠিক পথে চলার

তওফীক দান করুন ৷


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!