বর্তমান বিশ্বের অন্যতম হাদীস বিশারদ, যুগের বান্নুরী আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহু।
বোখারী শরীফের পাঠদানকালে আল্লামা বাবুনগরী প্রতিটি হাদীসের ব্যখ্যা বাস্তবতার আলোকে এমন সহজ সাবলীলভাবে তুলে ধরেন যা প্রত্যেকেই বুঝতে পারে৷সাবলীল উপস্থাপনা,
মধুময় বাক্যশৈলী ও সর্ববোধগম্য দরসে হাদীসের ফলশ্রুতিতে তিনি মালিকুত তাদরীস তথা দরস জগতের সম্রাট হিসেবে সর্বজনবিদিত।
২০০৩ সাল থেকে অধ্যাবধি এশিয়ার অন্যতম দ্বীনি শিক্ষাপীঠ দারুল উলুম হাটহাজারীতে ইলমে হাদীসের শিক্ষাদানে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় সমাসীন করতে সক্ষম হয়েছেন।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহু যোগ্য ছাত্র গড়ার এক আজিব কারিগর।প্রতিভাবান ছাত্রদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে তাঁর চিন্তা-চেতনা ও কৌশলের জুরি নেই।
যে সকল ছাত্র আরবীতে পারদর্শী তাদেরকে নির্ভরযোগ্য আরবী কিতাব থেকে গবেষণামূলক বিভিন্ন মাকালা প্রবন্ধ লিপিবদ্ধ করানো।যারা বাংলায় পারদর্শী তাদেরকে বাংলা লিখনীতে যোগ্য কলম সৈনিক হিসেবে গড়ে তোলা সহ যোগ্যতা অনুসারে প্রত্যেক ছাত্রকে কাজ করার জন্য দিকনির্দেশনা দিয়ে সামনে অগ্রসর করেন আল্লামা বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহু।
সব সময়ই ছাত্রদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।মিশকাত ও দাওরায়ে হাদীসের ছাত্রদেরকে হিফজুল হাদীস তথা হাদীস মুখস্থের জন্য সদাই অনুপ্রেরণা যোগান তিনি।বুখারী শরীফের পাঠদানকালে বুখারী শরীফের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হাদীসে ছুলাছিয়্যাত মুখস্থের ব্যাপারে বেশ জোর দেন।
হাদীসে ছুলাছিয়্যাত ঐ ধরনের বর্ণনাকে বলা হয়, যেখানে মুহাম্মদ(সাঃ) থেকে রাবী(বর্ননাকারীর) সংখ্যা মাত্র তিনজন। বুখারী শরীফে এ ধরনের হাদীস সংখ্যা ২২টি ।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহু'র অনুপ্রেরণা ও উৎসাহে বুখারী শরীফের সকল হাদীসে ছুলাছিয়্যাত মুখস্থ করে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র পাবনা জেলার সাতিয়া উপজেলার মুহাম্মদ আল আমীন।
গতকাল বুধবার এশিয়ার বৃহৎ দারুল হাদীসে দাওরায়ে হাদীসের হাজার হাজার ছাত্রদের সামনে আল্লামা বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহুকে হাদীসগুলো শুনিয়ে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেন আল আমিন। এ সময় আল্লামা বাবুনগরী তাঁর জন্য দুআ করেন এবং খুশী হয়ে নগদ ১০০০ টাকা পুরস্কার প্রদান করেন।
এশিয়ার বিশাল দারুল হাদীসে হাজার হাজার ছাত্রের সামনে আল্লামা বাবুনগরীর মতো মহান ব্যক্তিত্বের হাত থেকে পুরস্কার পেয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে
আল আমিন বলেন,হুজুরের দরসের তাকরীরগুলো আমি প্রতিদিন খাতায় নোট করি। হুজুরের উৎসাহ পেয়েই আমি পুরো কিতাব খোজে হাদীসে ছুলাছিয়্যাত বের করি এবং মুখস্থ করার জন্য চেষ্টা মেহনত করতে থাকি।
অল্প ক'দিনের মধ্যেই সনদ সহ আমি হাদীসগুলো মুখস্থ করি,আলহামদুলিল্লাহ।আজ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহুর বরকতময় হাত থেকে পুরস্কার পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ পুরস্কার আমার জীবনের জন্য একটি বড় অর্জন এবং আজকের দিনটি অত্যন্ত স্মরনীয় হয়ে থাকবে।
আল আমিনের সাথে আমার বেশ পরিচয়।নম্র-ভদ্র ও প্রতিবান একটি ছেলে।সব সময়ই হাসি খুশী।মাথায় সুন্নতী পাগড়ি সব সময়ই বাধা থাকে।আমি মজা করে সূফি সাব বলে ডাকি।আমার সহপাঠী ও বন্ধুবর মুফতী আব্দুল্লাহ কিশোরগঞ্জী'র মাধ্যমে আল আমিনের সাথে পরিচয় হয়।পরিচয়ের পর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।
প্রায়ই শায়েখ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহু'র সাথে সাক্ষাত ও দুআ নিতে আসে।ক'দিন আগে মাগরিবের আগে দৌড়ে আমার রুমে আসলো।এসে আমার হাতে একটা খাতা দিয়ে বললো"ভাই,আমি বুখারী শরীফের হাদীসে ছুলাছিয়্যাত মুখস্থ করেছি।শায়েখকে শুনাবো।তার আগে আপনি একটু শুনেন।ভুল হলে ধরে দিন যেন শায়েখকে শুনানোর সময় কোন ভুল না হয়।
মাগরিবের আযান পর্যন্ত শুনলাম।সে দাড়িয়ে একের পর এক সনদ সহ গড়গড় করে শুনাচ্ছিল।তাঁর অসাধারণ মুখস্থ শক্তি দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম।
আল্লাহ তায়া’লা আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহুকে সুস্থতার সহিত দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন এবং আল আমিনকে আলেমে হক্কানী রব্বানী হিসেবে কবুল করুন, আমিন।
লেখক:বন্ধুবর
জুনাইদ আহমদ(H.M. Zunaid)
উচ্চতর আরবী সাহিত্য বিভাগ
দারুল উলুম হাটহাজারী
১৯/৯/২০১৯ ইং বৃহস্পতিবার
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!