Tuesday, November 6, 2018

তোমরা যারা শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমাদ শফী'র বিরুদ্ধে নগ্নভাবে ময়দানে নেমেছ

 

ঘটনাপ্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আগমন করেছেন। উপস্থাপক তার আগমনি সংবাদ জানালেন। 

শাইখুল ইসলাম হাফিযাহুল্লাহ স্বভাব সুলভ মাথায় রুমাল দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছেন। মুরাক্বাবায় বা ঘুমে।


পিএম এলো। শাইখকে সালামও করলো। কিন্তু শাইখ আগের মতই থাকলেন। পিএম সামনের দিকে গেলেন। স্টেজে থাকা অন্যান্য উলামায়ে কেরামের সাথে কুশল বিনিময় করে আবারো ফিরলেন শাইখের কাছে।


 আবারো সালাম করলেন। কিন্তু শাইখ এখনো মুরাকাবা বা ঘুমিয়েই আছেন। পাশ থেকে একজন শাইখকে জাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী'র আগমনি সংবাদ জানালেন। অপ্রস্তুত শাইখ ডান হাতে রুমাল সরিয়ে বাম হাতে পিএমকে আসন গ্রহণের ইংগিত করতে না করতেই তিনি এসে হাতের সাথে হাত মিলিয়ে দিলেন।

(কেন পিএম একাজ করলেন তিনিই জানেন। রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য অথবা ভিন্ন কোন কারণে।) 

ব্যস!এতটুকুই। এরপর শাইখ আবারো মাথা নিচের দিকে দিলেন। একেবারে শেষ তক ওইভাবেই ছিলেন। একবারও পিএমের দিকে তাকান নি। চোখও ফিরান নি। 


ঘটনাটাকে অনভিপ্রেত হিসেবে নিয়ে চুপ থাকলেই চলত। কিন্তু না! শুরু হলো বিতর্ক! ঝড় উঠল ফেবু পাড়ায়। ঘাপটি মেরে বসে থাকা ঘাতকরা পেয়ে গেলো আরেকটি অস্ত্র। 

আমাদের আস্থাস্থল,চেতনার বাতিঘরকে এইবার আর ছাড় নয়। যে করেই হোক পিশিয়ে মারার জন্য নেমে পড়লো। 

আর তাদের সাথে যোগ দিয়েছে কিছু অতিউৎসাহী,উতিবুঝমান চতুর কওমিয়ান। যারা পোশাকে,পরিচয়ে এ ঘরানার হলেও মুলত ভিন্ন ঘরানার। নিজেরা বিভিন্ন কলেজ,ইউনিভার্সিটিতে পরিক্ষা দেয়া স্বত্বেও কওমী স্বকীয়তা নিয়ে মহা চিন্তিত। 


যারা এনিয়ে পোস্ট দিচ্ছে, আমি স্বভাব সুলভ  তাদের ওয়াল ঘুরে দেখেছি। এখানে কয়েকধরণের লোক পেয়েছি। 

(১) আসলেই কওমীয়ান / কওমী ভক্ত। সনদ স্বীকৃতি ও এতদ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়েই পজেটিভ ছিলেন। প্রয়োজনে কখনো কখনো যৌক্তিক সমালোচনা করেছেন।  কিন্তু স্টিল পিকচার বা পরিবেশ ঘোলাকারীদের পোস্ট পেয়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। 

এশ্রেণির উদ্দেশ্যে বলবো, হে কওমীয়ান! আপনি ফুল ভিডিওটি দেখুন। শাইখুল ইসলামকে যেভাবে জানেন ওই আংগিকে বিচার করুন। কিভাবে বিশ্বাস করতে পারলেন ইচ্ছাকৃতভাবে শাইখ এমনটা করেছেন।


 অনাকাঙ্খিত ও আচমকা এ ঘটনার সম্মুখীন হলে আপনি/আমি করতাম? আপনি কী খেয়াল করেননি! শাইখ পুরো সময় রুমাল মাথায় দিয়ে নিচের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। একবারের জন্যও পিএমের দিকে তাকান নি। আড় চোখেও না। 


আমি পরিস্কার বলছি,শাইখ আমার অন্তরে আগের মতই শ্রদ্ধার উঁচু আসনে আসিন আছেন। সামান্যও শ্রদ্ধা কমেনি। 


(২) কওমী পড়ুয়া। কিন্তু ভিন্ন ঘরানার সাথে যুক্ত।"কওমীতে পড়লে ভবিষ্যত অন্ধকার"। এচিন্তা থেকে বহু আগেই আলিয়া, কলেজ ইউনিভার্সিটিতে ঢুঁ মেরেছিলেন। আর এখন কওমীর ভবিষ্যৎ নিয়ে মহা চিন্তিত। তাই শুরু থেকেই স্বীকৃতি,সনদ সব কিছুরই বিরুদ্ধে। আলোচনা,সমালোচনা, লাইভ কত কী!!!


তাদের উদ্দেশ্যে বলবো,আপনাদের এমায়াকান্না বড়ই বিরক্তিকর ছিল। আজ তা ষোলকলায় পরিপূর্ণতা পেল। আসলে আপনাদের তৎপরতা কখনোই খাইরিয়্যাতের উদ্দেশ্যে ছিল না। 


(৩) বিএনপি-জামাত তথা বিগত চার দলীয় জোট সমর্থক। 


তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আজ আপনাদের নেত্রী'র অধীনে স্বীকৃতি হলে কি সংবর্ধনার দাবি আপনারাও করতেননা? আল্লাহ না করুক, এধরণের অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে গেলে আজকের মত সেদিনও কি এমনই করতেন? আমাদের ঘাড়ে চড়ে ক্ষমতার স্বাদ তো বহুবার নিয়েছিলেন। বিনিময়ে কি পেয়েছিলাম আপনাদের কাছ থেকে?

২০০১ সালের এত তাড়াতাড়ি ভুলা কি ঠিক হচ্ছে?


আজ আপনাদের খুব মায়াকান্না শাপলা নিয়ে তাই না! 

বাহ!কি করেছিলেন আপনারা আমাদের জন্য সেদিন। 

৭২ ঘন্টার আল্টিমেটামের টাইম বোমাই তো  ফিটিং করেছিলেন নাকি? যার বলি হয়েছিলাম। 

আপনাদের কিছু কিছু ভক্ত আবার বলে স্বীকৃতি তো আমরা দিয়েছিলাম! শুধু পাশ করার বাকি ছিল!! বাহ,কি দারুণ মিথ্যাচার। 

কি ছিল আপনাদের স্বীকৃতিতে!দাওরা সমান আলিম বা এইচএসসি? যা দিয়ে আমরা অনার্স মাস্টার্স করতে পারবো! আমাদের কেউ কেউ ভর্তিও হয়েছে এশিয়ান, দারুল এহসান ইউনিভার্সিটিতে।আহ! আপনারা কত কৌশল করে কওমীদের জীবন থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন ৫টি বছর!! আল্লাহ হেফাজত করেছেন। 


আর আইনি প্যাচাপ্যাচির কথা আপনারা ভুলে গেলেও আমরা ভুলিনি। আপনাদের হয়রানির শিকার হয়ে স্বীকৃতি চাওয়া থেকে কিন্তু আমরা তাওবা করেছিলাম। একসময় দোয়া করতাম যেন স্বীকৃতি হয়। আন্দোলনও করেছি। আপনাদের আচরণে বিরক্ত হয়ে স্বীকৃতি  চাওয়া তো দূরের কথা না হওয়ার জন্য দোয়া ও নীরব আন্দোলন চলেছে বহুকাল। কিন্তু বন্ধু ভেবে আপনাদের মাধ্যমে যে কুমির আসার রাস্তা তৈরি করেছি তা আমরা আর বন্ধ করতে পারিনি। 


অবশেষ স্বীকৃতি আওয়ামীলীগ দিয়েছে। বাহ্যত আপনাদের চেয়ে অনেক ভালভাবে দিয়েছে। ঠিক আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবে দিয়েছে। তাই তারা বাহ বা পাচ্ছে। আপনারা দিলে কি এসব কিছুই করতেন না? করতেন অনেক বেশি করতেন। 


সুতরাং শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমাদ শফী দা.বা.কে নিয়ে জঘন্য অপপ্রচার বন্ধ করুন। 


বিঃদ্রঃ- আজকের মাহফিলে কিছু আলোচকের চাটামি,তেলামি আমি কোনভাবেই সমর্থন করিনা। বিশেষত "কওমী জননী" সহ অহেতুক তেলবাজিকে মজবুতির সাথে প্রত্যাখ্যান করছি। 

প্রতিটা ইস্যুতেই শত্রু-মিত্র পরিচয়ের সুযোগ হচ্ছে আমাদের। আলহামদুলিল্লাহ। 

আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হবনা।আমি যেই ইসলাম পড়েছি, বুঝেছি,লালন করছি তা বাস্তবায়নের ১০০%নিশ্চয়তা পেলে কোন দলকে সাপোর্ট করবো। অন্যথায় নয়।


সংগৃহীত


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!