মুফতি তাকী উসমানী গতকাল শুক্রবার নরওয়েতে পবিত্র কুরআনের অবমাননার বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুসলিম দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধভাবে আলোচনায় আনার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশে এ কাজ বন্ধ করার জন্য মুসলিমদের প্রচেষ্টা আরও বৃদ্ধি করেতে হবে। খবর জিও নিউজের।
এর আগে মুফতি উসমানী এক টুইট বার্তায় বলেন, মুসলিমরা সহিষ্ণুতা মানবতার যে দৃষ্টান্ত বিশ্বে স্থাপন করছেন এর বিপরিতে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করে অমুসলিমরা তাদের ঘৃণ্য চেহারার পরিচয় তুলে ধরছে বিশ্বের সামনে।
তিনি কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ইলিয়াসের প্রশংসা করেছেন। যাকে বিশ্বব্যাপী ‘হিরো অফ দ্যা মুসলিম’ খেতাব দেওয়া হয়েছে। তাকি উসমানী বলেছেন, আফসোস তুরস্ক ছাড়া ইউরোপের কোনো দেশে এ সংবাদ প্রচার করা হয়নি।
তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আজ বিশ্ব মিডিয়া আর অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোও নিরব তাকিয়ে আছে। আর এখানে ইসলাম ও কুরআন অপমানিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী এ বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। ইলিয়াসকে মুক্তির বিষয়ে নরওয়েকে বাধ্য করতে হবে। এটা মুসলিম দেশগুলোর কর্তব্য।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার নরওয়েতে পবিত্র কোরআন জ্বালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে জনসম্মূখে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কুরআনকে রক্ষা করে ‘হিরো অব দ্যা মুসলিম’ বলে সোশ্যাল মিডিয়া প্রশংসিত হয়েছেন ইলিয়াস নামের এক যুবক।
জিও নিউজের বরাতে জানা যায়, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সতর্কতা সত্ত্বেও ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড শহরে পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে থারসন নামের এক অমুসলিম।
এর মাঝে ইলিয়াস নামের একজন মুসলিম পবিত্র কুরআন বাঁচানোর জন্য ব্যারিকেড সার্কেল ভেদ করে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে কুলাঙ্গারের উপর। লোকসম্মূখে তাকে মারতে থাকে। কোরআন অবমাননার দায়ে তাকে খুব মারধোর করা হয়। স্যোশাল মিডিয়ায় সে ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে গেলে ইলিয়াস কে ‘হিরো অব দ্যা মুসলিম’ বলে অবহিত করা হয়।
তবে ইলিয়াসের বিস্তারিত কোনো পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ইলিয়াসের প্রশংসা করে স্যোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ইউরোপ এবং বিশ্বজুড়ে ইসলামফোবিয়ার উত্থানের বিষয়ে সতর্ক করতেও স্যোশ্যাল মিডিয়ায় সরব থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিম কয়েকটি সংগঠন। ইলিয়াস কে নওয়ের পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পাকিস্তান ইউনিয়ন নরওয়ে (প্যান) এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
প্যান এর চেয়ারম্যান চৌধুরী কামার ইকবাল বলেন, একজন ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের অবমাননা করে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তিনি আরো বলেন, নরওয়েজিয়ানরা শান্তিপূর্ণ মানুষ, মুসলিমরাও এখানে শান্তিতে বসবাস করছিলো, যদিও ইদানিং ইসলামফোবিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে, তারপরও নরওয়ে অন্যান্য ধর্মের অধিকারকে সম্মান করায় তারা বিশ্বজুড়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ দুর্ঘটনাটি প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটেছিল এবং পুলিশ এটিকে থামাতে কিছুই করেনি, এজন্য তিনি পুলিশের নিন্দা করে বলেন, ইলিয়াস যখন কোরআন অবমাননা বন্ধ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখনও তারা নিরব ছিলো। পরবর্তিতে অন্যান্য আন্দোলনকারীরা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।
প্যান চেয়ারম্যান নরওয়ে সরকারকে উগ্রপন্থার মাধ্যমে অন্য ধর্মের অবমাননার দায়ে ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার দায়ে অভিযুক্তদের অবিলম্বে বিচারের দাবি জানান।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!