আল্লাহর কসম। কসম রব্বে কা'বার। যদি বলেন, আপনার কাছে গিয়ে পা ধরে মাফ চাইলে, আমার চোখের পানিতে আপনার পা ধুইয়ে দিলে আপনি বিতর্ক বন্ধ করবেন আমি শত ব্যস্ততা ছেড়ে আপনার কাছে গিয়ে তাও করতে রাজি আছি ভাই।
হাতে ধরি। পায়ে ধরি। এবার বন্ধ করেন।
কী করছেন? কেন করছেন? হাশরের ময়দানে কী জবাব দিবো আমরা?
আরেকজন কী করল এর জবাব আমাকে আপনাকে দিতে হবে না। আমি কী করলাম? এর জবাব আমাকে দিতে হবে।
উম্মত চলছে জাহান্নামের দিকে। চোখের গোনাহ, কানের গোনাহ, আকীদার গোমরাহীতে নিমজ্জিত। কাদিয়ানী, খৃষ্টান মিশনারী ও নাস্তিকদের ভয়ানক সয়লাব চলছে চুপে চুপে।
এরই মাঝে আমরা লেগে গেলাম নিজেদের নিয়েই।
আপনি আমি বিরোধীতা করছি আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর। ইন্নালিল্লাহ। আমি আপনি কি একজন ওলীপুরী হতে পারবো কোনদিন?
তাহলে কেন করছেন এমন? একজন ওলীপুরী আহলে হকের জন্য রহমাত স্বরূপ।
প্রতিটি মানুষ আলাদা। রুচিবোধও আলাদা। আমার আপন ভাই বোনের সাথে আমার মতের অমিল হয়। ঝগড়া হয়। কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু সেই ঝগড়া আমি বাজারে এসে বলে বেড়াই না। এটা আমার আত্মমর্যাদাবোধের খেলাফ। আমার পারিবারিক ঐতিহ্য পরিপন্থী।
ধরুন, আমার বোনকে কেউ অশালীন উক্তি করল। এখন আমি এর প্রতিবাদ করে সেই অশালীন উক্তিটা বাজারে এসে বলতে লাগলাম যে, ভাইয়েরা! আমার বোনকে ওমুকে এটা বলে গালি দিয়েছে। তারপর থানা শহরে গিয়ে, তারপর জেলা শহরে গিয়ে, তারপর দেশের সর্বত্র মাইকিং করে ছড়িয়ে দিলাম আমার বোনকে নোংরা ব্যক্তিটা কি অশালীন কথা বলেছে।
বাহ! এমন জ্ঞানী দরদী ভাইটাকে আপনি আমি কী বলবো?
বোনের দরদী? নাকি অজ্ঞতার দরুন বোনের ইজ্জতের চাদর হরণকারী?
অবশ্যই এ আহম্মক ভাইটাই বোনের সম্মান বেশি হরণ করেছে। একজন বাজে লোকের একটি বাজে মন্তব্য, তার পর্যন্ত, বা ছোট্ট পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু আমি যখন এটাকে রাষ্ট্র করে দিলাম, তখন আমার বোনের সম্মান বাড়েনি। আমি হাজার গুণ কমিয়ে দিলাম।
এমন আহম্মক ভাইয়ের তুলনায় ভদ্র শত্রুও অনেক ভাল।
আমাদের স্বাভাবিক ভদ্রতাবোধ গেল কোথায়? আত্মমর্যাদাবোধ গেল কোথায়?
ঘরের মানুষটাকে পরের মানুষের সামনে উলঙ্গ করে দেবার নোংরা কাজে লিপ্ত হলাম।
রাহবার উলামাগণের ব্যাপারে এমন নোংরা ও উলঙ্গ ছিদ্রান্বেষণ অতীতে কখনো হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
ছিঃ ছিঃ। কোথায় নেমেছি? একজন কাকে কত টাকা হাদিয়া দেয়া হল লজ্জার মাথা খেয়ে বলে গেলেন হরহর।
আর আমি আপনি এমন নোংরা পরগাছা বক্তব্যও বেধরক শেয়ার করে পুরো বিশ্বকে দেখিয়ে দিচ্ছি।
আরেকজন আবার কাগুজে লেখা হাদিয়া চার্ট পর্যন্ত প্রচার শুরু করে দিয়েছি।
চলছে ইট, বদলে পাটখেল খেল।
হাসছে ইবলিশ। কাঁদছে মনুষত্ব। বগল বাজাচ্ছে বাতিল। আমরা চোখের পানিতে মাথা ঝুঁকানো।
আসুন ফেইসবুক নামক ভাগারে সময় কম দেই। কুরআন পড়ি নিয়মিত। সীরাতের কিতাব, আকাবিরদের জীবনী। ইসলামের ইতিহাস। আহা! কত কিছু পড়া এখনো বাকি। আসুন জ্ঞানার্জনে সময় ব্যয় করি। বিতর্ক এড়িয়ে চলি। অন্যকে নিয়ে মাথা ঘামানো নয়, নিজেকে গড়ে তুলি, তো পুরো দুনিয়া আমাকে নিয়ে মাথা ঘামাবে। আমি আল্লাহর জন্য হই, তো পুরো দুনিয়া আল্লাহ আমার জন্য বানিয়ে দিবেন।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!