পিতৃহারা সন্তানের প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ :
সন্তানকে সমাজ ও সংসার জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পিতা যেমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, অনুরূপভাবে মাকেও তাতে অংশগ্রহণ করতে হবে। আর পিতা মারা গেলে মা-ই এ মহান দায়িত্ব পালনে সব রকম সহযোগিতা প্রদানে ব্রতী হবেন। স্বামীর মৃত্যুর পর চেহারা-সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও অন্যের গৃহে না গিয়ে ইয়াতীম সন্তানদের প্রতিপালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে পারেন এমন মহিলা সত্যিই নারী জাতির গৌরব। এ গৌরব অর্জনের জন্য তাকে প্রতিটি পদে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
প্রাথমিক জ্ঞান দান :
শিশু জন্ম হ’তে বিদ্যালয়ে গমনের পূর্ব পর্যন্ত মায়ের সান্নিধ্যে লালিত-পালিত হয়। আর মায়ের কোল থেকেই শিশুর শিক্ষা তথা জ্ঞান আহরণের যাত্রা শুরু হয়। শিশুর মন এ সময় অত্যন্ত কোমল থাকে, সে জন্য তখন তাকে যে শিক্ষা দেয়া হয়, তা সে সহজে গ্রহণ করে। এ শিক্ষা তার ভবিষ্যৎ জীবনের পাথেয় হিসাবে কাজ করে। তাই শিশুর মুখে আধো আধো বুলি ফুটতে শুরু করলে মাকে কথা বলার সময় অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সন্তানের সামনে কটু বা খারাপ বাক্য উচ্চারণ করা হ’তে সংযত হওয়া বাঞ্ছনীয়। ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করা প্রয়োজন। মায়ের মিষ্টিমিষ্টি কথা শিশুর অন্তরে প্রবলভাবে রেখাপাত করে। মা ইসলামের সুমহান শিক্ষার কথা সুমধুর ভাষায় শিশুর মাঝে ছড়িয়ে দিবেন। তাকে ইসলামের প্রাথমিক বিষয়সমূহ শিক্ষা দিবেন। অধিক ভোজনের অপকারিতা, জোরে চীৎকার করে কথা না বলা সম্পর্কে জ্ঞান দান করবেন। দুষ্টু প্রকৃতির ছেলে-মেয়েদের সাথে মিশতে, মিথ্যা ও অহেতুক কথা বলার মত অশালীন কাজ থেকে তাদেরকে বিরত রাখবেন। নিজেদের কাজ যথাসম্ভব নিজ হাতে করার অভ্যাস গড়ে তুলতে শিক্ষা দিবেন। ভাল কাজ করলে ধন্যবাদ প্রদান এবং মন্দ কাজ করলে মৃদু শাসন করতে হবে।
শিশু একটি পুষ্পকলি। মা তার মধ্যে মানবীয় গুণাবলী, সুন্দর চরিত্রের রং, রূপ ও গন্ধ ভরে দিবেন। মায়ের অভিপ্রেত অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে শিশুর শিক্ষা হ’লে বৃহত্তর সমাজ ও জাতি নিঃসন্দেহে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে অভ্যস্ত করা :
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সৌন্দর্যের মূল ভিত্তি। কোন ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত তার শরীরকে পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি করার ব্যাপারে সচেষ্ট না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে ইসলামের মানদন্ডে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত এবং সর্বদিকে সম্মানিত ব্যক্তি বলে বিবেচিত হবে না। আর যতক্ষণ পর্যন্ত পানাহার ও পোষাক-পরিচ্ছদের বেলায় সকল প্রকার ময়লা ও অপরিচ্ছন্নতা থেকে দূরে থাকতে পারবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে না। এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মা তার ছোট্টমণিকে শিশুকাল থেকে শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন। শরীরের রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকার নিমিত্তে কাপড়-চোপড় পরিচ্ছন্ন, খাদ্যদ্রব্য পবিত্র রাখা এবং খাদ্যের পাত্র পরিষ্কার করা একান্ত দরকার। এ ব্যাপারে মা সন্তানকে অভ্যস্ত করে তুলবেন। কারণ পবিত্রতা আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা দান করে। এ ব্যাপারে কুরআন মাজীদে এরশাদ হয়েছে, إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)।
যেমনিভাবে নিজের শরীর ও মনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, তেমনিভাবে ঘর-দরজা, বাড়ীর চারপাশের পরিবেশ, রাস্তা-ঘাট, পরিষ্কার রাখতে হবে। একথা মা তার সন্তানকে শৈশব থেকে হাতে কলমে শিক্ষা দিয়ে এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলবেন। রাসূল (ছাঃ) এ সম্পর্কে বলেন, نَظِّفُوْا أَفْنِيَتَكُمْ. ‘তোমরা তোমাদের বাড়ির আঙ্গিনা ও সম্মুখ ভাগ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখ’।[6]
শৈশবে শিশুর মন অত্যন্ত পবিত্র এবং নরম থাকে। নরম মাটিকে কুমার যা ইচ্ছা তা করতে পারে। অনুরূপভাবে মা পবিত্র নরম হৃদয়ের শিশুটিকে পবিত্রতা তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যেরূপ প্রশিক্ষণ দান করবেন, সেভাবে জীবনের বাকী দিনগুলি সে অতিবাহিত করবে।
সৌজন্যবোধ শিক্ষা দান :
শিশু-সন্তান মাকে বেশী অনুসরণ করে। তাই মা শৈশবেই শিশুকে সৌজন্যবোধ শিক্ষা দিবে। যাতে করে শিশু প্রশংসনীয় কাজ ও সুন্দর চরিত্রে সজ্জিত হয়ে বড় হ’তে পারে। সন্তান যেহেতু বিশ্ব প্রকৃতির পবিত্র উপাদান এবং সমাজরূপী প্রাসাদের ইট সমতুল্য, সেহেতু সন্তানকে ভদ্রতা, বিনয়, সরলতা, সততা, সত্যবাদিতা ইত্যাদি গুণাবলী শিক্ষা দানে মাতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। একজন শিশু পরবর্তী জীবনে পৃথিবীর সকলের নিকট এক আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠার জন্যই মায়ের নিকট হ’তে সে এই গুণাবলী অর্জনের অধিক হকদার।
উন্নত মন–মানসিকতা গঠন :
মানুষ আল্লাহর খলীফা। আল্লাহর হুকুম-আহকাম পালন করাই মানুষের প্রকৃত দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রতিটি মানুষের উপর একদিকে রয়েছে স্রষ্টার অধিকার, আর অপর দিকে রয়েছে অগণিত সৃষ্টির অধিকার। স্রষ্টা এবং সৃষ্টির অধিকার সুন্দররূপে আদায়ের জন্য সন্তানের উন্নত মন-মানসিকতা গঠন করার ব্যাপারে মাকে সচেষ্ট হ’তে হবে। শিশুর মনের সুকুমার বৃত্তিগুলি জাগ্রত করতে হবে। তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে আল্লাহর অধিকার পূর্ণরূপে আদায় করলে পরকালে চির সুখের স্থান জান্নাত পাওয়া যাবে। আর তা আদায় না করলে চরম শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। সৃষ্টির প্রতি অধিকার বলতে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন তথা বিশ্বের সকল সৃষ্টজীবের সাথে উত্তম আচরণ করলে ইহজীবনে শান্তি ও পরজীবনে পুরষ্কার লাভে সক্ষম হবে, একথা তাদের মনের মধ্যে গ্রোথিত করে দিতে হবে। এছাড়াও অপসংস্কৃতির সয়লাব থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাদেরকে মানসিকভাবে প্রস্ত্তত করতে হবে। তাদের মধ্যে বীরত্ব, দৃঢ়তা সৃষ্টি করা এবং ভীরুতা-কাপুরুষতা পরিহারের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বৈধ সীমানার মধ্যে অবস্থান করে নিজের আত্মসম্মানবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান দিতে হবে। অপরপক্ষে অন্যের সম্মান যেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মোটকথা তাদেরকে পরিকল্পিত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে, যাতে করে তারা নিজেদেরকে বিশ্ববাসীর সামনে এক উত্তম উদাহরণ হিসাবে পেশ করতে সক্ষম হয়।
ব্যবহারিক শিক্ষা দান :
দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজ রয়েছে, যা একজন মানুষ জীবনের ঊষালগ্ন হ’তে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হ’লে বড় হয়ে তা পালনে ব্যর্থ হয়। নিজের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় গোছানো, ঘর-দুয়ার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, অযূ-গোসল করে পাক-ছাফ হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে সন্তানকে শিক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে মেয়ে সন্তানকে গৃহস্থালী কাজ-কর্মে অভ্যস্ত করে তোলা, রান্না-বান্না ও অন্যান্য কাজের শিক্ষা দিয়ে দক্ষ ও সুনিপুণ করে গড়ে তুলতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে তারা আদর্শ গৃহিনী হ’তে পারে। মানুষের চলার পথে ব্যবহারিক জীবনের কাজগুলি শিক্ষা দিয়ে সন্তানকে ভবিষ্যৎ জীবনের সোপান তৈরী করে দিতে মা একটি উত্তম প্রতিষ্ঠান। একথা স্মরণ রেখে প্রত্যেক মায়ের স্বীয় দায়িত্ব পালন করাই সন্তানের অধিকার।
তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া :
সন্তানের তত্ত্বাবধান করা একজন আদর্শ মায়ের বড় কর্তব্য। সন্তানকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৎ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই মাকে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হ’তে হয়। সন্তানকে উত্তমরূপে গড়ে তোলার ব্যাপারে মাকেই মমতাময়ীর ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলাম মাকে গৃহের দায়িত্বশীলরূপে স্থির করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক আদম সন্তান কর্তা। পুরুষ তার পরিবারের কর্তা আর নারী তার ঘরের কর্ত্রী’।[7] হাদীছে এসেছে, وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وَوَلَدِهِ، وَهِىَ مَسْئُوْلَةٌ عَنْهُمْ. ‘স্ত্রীরা নিজের স্বামীর ঘর ও তার সন্তানের রক্ষক, সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’।[8]
সন্তানের প্রতিটি ক্ষেত্রে মা উত্তম পরিচালক হিসাবে পরিচয় দিতে না পারলে শিশুর উপরে উঠার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। চালক একটু অমনোযোগী হবার কারণে যেমনভাবে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে, তেমনভাবে মা তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে সামান্যতম বেখেয়াল হ’লে সন্তানের জীবনের সোনালী সূর্য অস্তমিত হয়ে কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। অতএব এ বিষয়ে আমাদের আরো সচেতন হ’তে হবে।
(২) পিতার নিকট থেকে প্রাপ্ত অধিকারসমূহ :
সন্তানের প্রতি পিতার দায়িত্ব অত্যন্ত কঠিন এবং দীর্ঘমেয়াদী। মাতৃগর্ভে সন্তানের সঞ্চারণ শুরু হবার সময় হ’তে বড় হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দায়িত্ব অব্যাহত থাকে। এজন্য ইসলাম দাম্পত্য জীবনের ব্যয়ভার বহন ও দৈহিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিকেই বিবাহ করার অনুমতি প্রদান করেছে।[9] পিতার নিকট হ’তে প্রাপ্ত সন্তানের অধিকারগুলোকে আমরা দু’পর্যায়ে বিভক্ত করতে পারি।
(ক) সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের পূর্ববর্তী অধিকার।
(খ) সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের পরবর্তী অধিকার।
(ক) সন্তানের পৃথিবীতে আগমনের পূর্ববর্তী অধিকার সমূহ
১. সন্তানের জন্য পুণ্যবতী মায়ের ব্যবস্থাকরণ :
ইসলাম শুধু যে জন্মের পর থেকেই শিশুদের প্রতি গুরুত্ব দেয় তা নয়; বরং সন্তান তার পিতার ঔরসে বা মায়ের গর্ভে তার আকৃতি সৃষ্টি হবার পূর্ব থেকেই তার প্রতি গুরুত্বারোপ প্রদান করেছে। পুরুষদের প্রতি বিবাহ সম্পর্কে ইসলাম নির্দেশ প্রদান করেছে যে, প্রস্তাবিত মহিলা যেন আল্লাহভীরু হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিবাহের ক্ষেত্রে বংশ, সম্পদ, সৌন্দর্য ও আল্লাহভীরুতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِيْنِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ. ‘মহিলাদেরকে চারটি গুণের অধিকারিণী দেখে বিবাহ করা হয়। (ক) তার ধন-সম্পদ (খ) বংশমর্যাদা (গ) তার সৌন্দর্য ও (ঘ) তার ধর্মপরায়ণতা। তোমরা দ্বীনদার মহিলাকে বিয়ে করে ধন্য হও, অন্যথা তোমার উভয় হাত ধুলায় ধূসরিত হবে’। (অর্থাৎ তুমি লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে)।[10]
বিবাহ করার সময় মহিলার রূপ বা সম্পদই যেন সবকিছু বলে বিবেচিত না হয়; বরং এর যে কোন একটির সাথে ধর্মপরায়ণতার গুণটি অবশ্যই যুক্ত হ’তে হবে। মহিলা যেন ভদ্র পরিবারের সদস্যা হন। কারণ তার সন্তানেরা তার চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।
ওমর (রাঃ) জনৈক পুত্র কর্তৃক সন্তানের প্রতি পিতার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হ’লে উত্তরে বলেছিলেন, ‘পিতার দায়িত্ব হচ্ছে, তিনি যেন সন্তানের মাতা নির্বাচনে ভুল না করেন’।[11] ভাল সন্তানের জন্যে সতী-সাধ্বী মা হওয়া শর্ত। আর এ শর্তটি পিতা পূরণ করে সন্তানের হক আদায়ে সচেষ্ট হবেন।
২. গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি, সুস্থতা ও সেবাযত্নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ :
শিশু সুস্থ ও শক্তি-সামর্থ্যবান হওয়া প্রতিটি পরিবারের কাম্য। এজন্য গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগান এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে পিতাকে। গর্ভবতী মায়ের প্রতি পিতার যথাযথ দায়িত্ব ও কর্তব্যই গর্ভস্থ সন্তানের অধিকার। এই দায়িত্ব পিতা নিষ্ঠার সাথে পালন করলে সম্পূর্ণ সুস্থভাবে শিশু জন্মলাভ করার যথার্থ অবস্থা ও পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
সাধারণ অবস্থার চেয়ে গর্ভকালীন সময়ে মায়ের পুষ্টিকর খাদ্যের বেশী প্রয়োজন হয়। মা সুস্থ সবল না থাকলে, সুস্থ সবল সন্তান জন্ম দিতে পারে না। কাজেই যে সমস্ত খাদ্যে বেশী পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে, সেরূপ খাদ্য সরবরাহ করতে পিতা সদা সচেষ্ট থাকবেন।
মায়ের দৈহিক পরিশ্রম লাঘবের জন্যে পিতাকে গৃহস্থালী কাজে সহায়তা করতে হবে। সন্তানের মঙ্গলার্থেই গর্ভধারিণী মাতার স্বাস্থ্য রক্ষা, সুস্থ দেহ, মন-মানসিকতা গঠন ও পবিত্র রাখা এবং হালাল খাদ্যের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা পিতার দায়িত্ব। সর্বোপরি সর্বাঙ্গীন সুন্দর সন্তান প্রাপ্তির আশায় মাকে পুষ্টিকর উপাদেয় খাবার যোগান দেওয়া, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করা এবং ইসলামী ভাবধারা সম্বলিত পুস্তকাদি সরবরাহ করা পিতার কর্তব্য। একজন অনাগত সন্তান সুস্থ ও সুন্দরভাবে পৃথিবীতে আসার জন্য এ সমস্ত বিষয় একজন আদর্শ পিতার দায়িত্ব ও কর্তব্য। (চলবে ইনশাআল্লাহ)
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!