Saturday, April 4, 2020

৪ ঠা এপ্রিল হরতাল মুফতি আমিনী রাহ: রাজনীতি: মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজি



৪ঠা এপ্রিল হরতাল ও মুফতি আমিনী রহ. এর রাজনীতি

ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। হঠাৎ একদিন পত্রিকায় প্রকাশ হল সরকার কুরআনবিরোধী নারীনীতিও পাশ করতে যাচ্ছে। আর বসে থাকার সুযোগ নেই। তাছাড়া গতানুগতিক আন্দোলনে সরকারের হুঁশ ফিরবে না, তা বুঝা গেছে কথিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে।
তাই ওই দিন বিকালেই মুক্তাঙ্গনে তাৎক্ষনিক এক সমাবেশ করে আল্টিমেটাম দিয়ে ৪ঠা এপ্রিল হরতালের ডাক দিলেন মুফতী আমিনী রহ.।

শুরু হল হরতাল সফলের প্রস্তুতি। লালবাগ থেকে ছোট্ট ছোট্ট কাফেলা ছড়িয়ে পড়ল গোটা বাংলাদেশে। অধম রাজবাড়ী, ফরিদপুর হয়ে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ওই অঞ্চলের প্রতিটি মাদ্রাসায় হরতাল সফলের লক্ষে সফর করেছি।
লালবাগে ঢাকার উলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে একাধিকবার। বিতরণ করা হয়েছে লিফলেট ও পোস্টার।

কিন্তু এ ছিল বাহ্যিক কর্মকাণ্ড। যা সব হরতালেই লোকেরা করে থাকে। এ হরতাল সফল হওয়ার পিছনে কাজ করেছে অন্য কিছু।
আমিনী রহ. জীবনের শেষের দিকে সাধারণত সকাল ১১টায় মাদ্রাসায় আসতেন। দরস- তাদরিস, মিটিং মতবিনিময়, তাঁর দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তদারকি নিয়ে কর্মব্যস্ত সময় পার করতেন। রাতের শেষভাগ আর শুক্রবারের আসর থেকে মাগরিব রুম বন্ধ করে তিনি একা হয়ে যেতেন।

এ হরতাল ঘোষণার পর পাল্টে গেল নিয়মিত সূচি। সময়ে সময়ে রুম বন্ধ পাওয়া যেত। কখনো ১১টার দিকে এসেই রুম বন্ধ করে দিতেন। আসরের পরেও রুম ভেতর থেকে বন্ধ থাকত। চলে যেতেন একেবারে ভেতরের ছোট্ট কামরাটিতে। সেখানে গিয়ে কি করতেন একথা অন্তত লালবাগের সবারই জানা। কান্নাজরিত কণ্ঠে তিলাওয়াত আর সিজদায় পরে চিৎকারে ভারী হয়ে উঠত পরিবেশ। তিনি কাঁদতেন, মহান রবের দরবারে অঝোরে কাঁদতেন। আজো মনে হয় তাঁর কান্নায় বুকটা আমার ফেটে যাবে।
এবং এই দিন গুলিতে তিনি ধারাবাহিক রোযা রেখেছেন। ভয়ভীতি এসেছে পরওয়া করেন নি। সন্তান ও পরিবারের মায়া মহব্বতও তাকে দ্বীনি আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারে নি।
এছাড়া প্রধান রাজনৈতিক মিত্র ছিল বিএনপি। হরতাল পর্যন্ত হযরত বিএনপির কারো ফোন রিসিভ করেন নি। কিংবা জোটভুক্ত কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থনও চান নি। তাইতো ২০দলীয় জোট শেষ মুহূর্তে নৈতিক সমর্থন দিলেও অনেকটা উদাসীন ছিল এই কর্মসূচী নিয়ে।
যেহেতু এটি ইমানী আন্দোলন, তাই মুফতি আমিনী রহঃ এমনটি করেছেন। যাতে তা রাজনৈতিক রুপ না পায়। বা কোন দল কিংবা গোষ্ঠীর পক্ষে না যায়। এ আন্দোলন মুসলমানদের। মুসলমানরা দল মত নির্বিশেষে তাতে অংশ গ্রহন করবে।
এই ছিল সফলতার কারন। আর এমনই ছিল মুফতী আমিনীর রাজনীতি।
(৪ ঠা এপ্রিল ২০১৬)

শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!