পাশ্চাত্য দেশের নারীদের মতো আমাদের দেশের নারীরাও চায় সমান অধিকার ৷ নারী তার দৈহিক-মানসিক স্বাতন্ত্র ভুলে মহান আল্লাহর সৃষ্টিগত বিধানকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে শ্লোগান দিচ্ছে নারীর স্বাধীনতা, নারীর সমঅধিকার ৷ আল্লাহপাক নারীর বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে পুরুষকে করেছেন পৃথক ৷ তার কর্ম ও কর্মক্ষেত্র করেছেন পৃথক ৷ পুরুষের কাজ বাইরে সার্ভিস বা ব্যবসা করা , হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করা ! আর এ পরিশ্রমের টাকা তার জন্য | আর নারীর কর্মক্ষেত্র হল ঘর-সংসার ৷ সংসারটাকে সুন্দর সুচারুরূপে সাজিয়ে রেখে স্বামীর মনে শান্তি দেয়াই স্রীর দায়িত্ব | একজন স্রী যদি স্বামী, সন্তান, সংসার ফেলে রেখে বাইরে অফিস- আদালতে চাকরী করে, তবে তার সন্তান, সংসার কার উপর অর্পিত হবেঃ নিশ্চয়ই একজন চাকরানীর উপর ৷ কিন্তু যে নারী বাইরে গেল স্বাধীন হওয়ার জন্য, সে নারী কিভাবে আরেকজন নারীকে কাজের মেয়ে হিসেবে তার ঘরে পরাধীন করে রেখে এল? আমি বুঝতে পারছি না, এটা কোন্ ধরনের নারী স্বাধীনতা ৷ তার এত কষ্টের সন্তান, আদরের দুলাল, নয়নের মণি মানুষ হচ্ছে একজন চাকরানীর কাছ থেকে ৷ এখন এ সন্তান কার আদর্শে গড়ে উঠবে! নিশ্চয়ই তার মায়ের বেতনভুক্ত চাকরানীর চেতনা নিয়ে ৷
একজন নারী চাকুরীতে যোগ দেয়ার পর তাকে তার বসের কথায় উঠতে হবে, বসতে হবে ৷ বসের অনুমতিতে বাইরে যেতে হবে৷ বসের মন যুগিয়ে কথা ও কাজ করতে হবে ৷ এখানে নিজ স্বাধীনতা থাকলো কোথায়? নারী, সে তো চাইলো স্বাধীনতা, তবে কেন তাকে পরাধীনতা মেনে নিতে হলো? একজন নারী স্বাধীন হওয়ার জন্য অন্য আরেকজন নারীকে ঘরে পরাধীন করে রেখে এলো ৷ এটা কি স্বাধীনতা, নাকি একজন নারী নিজেকে স্বাধীন দাবি করে দু'জন নারী অর্থাৎ তার ঘরের চাকরানী ও সে দু'জনকে পরাধীনতা মেনে নিতে হলো ৷
এতো গেল নারী স্বাধীনতা | এবার নারী সমঅধিকার প্রসঙ্গে আসি৷ নারী সক্রিয়ভাবে পুরুষের কাজে অংশগ্রহণ করছে ৷ একদল বুদ্ধিজীবী নারী দরদী হয়ে ফুসলিয়ে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে সমানধিকারের প্রলোভন দেখিয়ে রাস্তায় নামাচ্ছে ৷ যাতে যত্রতত্র নারীকে তাদের দেহের খোরাক হিসেবে পাওয়া যায় ৷ পুরুষের প্রত্যেকটা কাজে নারীকে সমান ভাগ দেয়া হচ্ছে ৷ কিন্তু, নারীর কাছে: পুরুষকে সমান ভাগ দেয়া হচ্ছে না ৷ পুরুষকে আল্পাহ পাক সৃষ্টিগতভাবে: নারী অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী বানিয়েছেন বাইরেরর কাজ করার জন্য | আর নারীকে বানিয়েছেন পুরুষ অপেক্ষা অনেক কম শক্তি দিয়ে, যাতে নারীরা ঘরের কাজ-কর্ম করে | এখন পুরুষের এই বাইরের কাজগুলো নারীর উপর সমান চাপিয়ে দিল পুরুষের কাজ হালকা করার জন্য ! এটা নারীর প্রতি বাড়তি চাপ নয় কি? পুরুষ শক্তিশালী হওয়া সত্বেও নারীর কাজ সমান ভাগ করে নিচ্ছে না৷ এটা আবার কোন ধরনের সমঅধিকার? নারীরটা পুরুষকে আর পুরুষেরটা নারীকে সমান সমান ভাগ করে দেয়ার নাম সমানাধিকার ৷ আর তা না হলে এটা হবে সমানাধিকারের নামে প্রতারণা ৷ অফিস, আদালত, ব্যবসা, চাকুরী, দিন মজুর সব কাজে নারী সমান ভাগ পাচ্ছে ৷ এবার নারীর কাজগুলোও পুরুষকে ভাগ করে দেয়া হোক ৷ যেমন -মহিলাদের মাসে একবার ঋতুস্রাব হয় ৷ এখন থেকে একমাস হবে পুরুষের একমাস হবে মহিলাদের ৷ মহিলা গর্বে সন্তান রাখে দশমাস এখন থেকে পুরুষ রাখবে পাঁচ মাস মহিলা রাখবে পাঁচ মাস ৷ মা সন্তানকে দুধপান করায় আড়াই বৎসর ৷ এখন থেকে পুরুষ খাওয়াবে এক বৎসর তিন মাস, মা খাওয়াবে এক বৎসর তিন মাস,৷ মহিলাদের অন্যান্য কাজও পুরুষ সমান ভাগ করে নেবে! তবে হবে সমঅধিকার | -
ঋতুস্রাব, সন্তান প্রসব; বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো একাজগুলো যেমন পুরুষের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়, তেমনি নারীদের বেলায়ও সম্ভব নয় পুরুষের কাজ ভাগ করে নেয়া ৷ নারীর কাজে পুরুষকে দিয়ে যেমন কোন সুফল আশা করতে পারি না, তেমনি পুরুষের কাজে নারীকে দিয়েও সুফল আশা করা যায় না৷ অতএব, আল্লাহ পাকের হুকুম ও ইসলামের শাশ্বত বিধান মেনে নিয়ে যে যার দায়িত্ব গহণ করে দেশের উন্নতি এবং ইহ-পরকালের শান্তি কামনা করুন ৷ '
স্বামী অক্লান্ত পরিশ্রম করে ঘরে ফিরল শান্তির আশায় ! প্রিয়তমা গ্রীর মধুমাখা মুখে হাসি দেখে তার মনটা ভরে উঠবে ৷ কিন্তু ঘরে ক্রী নেই তাকে তো চাকরানীর হাসি দেখতে হচ্ছে ৷ শ্রী বাইরে থেকে কাজ করে ঘরে ফিরল ware দেহ নিয়ে ৷ স্বভাবতই তথন স্রী স্বামীর হক-অধিকার ছুড়ে ফেলে কর্কশ মেজাজে কথা বলবে ৷ বাইরে কাজ করে ঘরে এসে স্বামীকে মেজাজ দেখাবে, এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার ৷ একজন নারী মুখে প্রসাধনী মেখে গায়ে অলঙ্কার পরে ও সংক্ষিপ্ত কাপড় পরে স্বাধীন ভাব দেখিয়ে গর্বে বুক ফুলিয়ে নিজেকে প্রদর্শন করে রাস্তা দিয়ে যখন হেটে যায়, তখন ঐ নারীর দিকে দোকানদার, বখাটে ছেলে, শিক্ষিত-অশিক্ষিত লোক, রিক্সা- ট্রাক-বাসের চালক কি সুনজরে তাকায়? কখনো না ৷ তার দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাবে ৷ তখন নষ্ট লোকেরা যৌবনের তাড়নায় নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইবে তখন সমাজ কলুষিত হবে ! এতে নারীর ফায়দা হলো না ৷ বরং সমাজকে জাহান্নামের গহবরে পৌঁছে দিল !
যতই মুখে নারী স্বাধীনতার বুলি আওড়াক, পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, নিবন্ধ ছাপা হোক, তাতে কিন্তু নারী মুক্তি হচ্ছে না ৷ বরং নারী হত্যা, নারী অপহরণ, নারী এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি জুলুম, নারীর সম্ভমহানি, মর্যাদাহানির পর হত্যা দিন দিন বেড়েই চলছে | আজকাল দৈনিক পত্রিকাগুলোতে আমরা প্রত্যক্ষ করি, যে হারে নারী নির্যাতন বাড়ছে, তাতে নারী স্বাধীনতা ও নারী সমানাধিকারের দাবি তুলে এসব নারী নির্যাতন রোধ করা সম্ভব হবে না ৷ যারা নারী স্বাধীনতার esi মাথা উঁচু করে চলছে, তারা উপরোল্লেখিত একটা না একটা ঘটনার শিকার হচ্ছে ৷ এর শিকার কি সেই সব নারী হচ্ছে, যারা পর্দায় ঘরে অবস্থান করছে ৷ স্বামীর আনুগত্য মানছে! সন্তান লালন-পালন করছে! সংসারটাকে ইসলামী দুর্গ বানানোর প্রচেষ্টায় আছে ৷ তাদেরকে এমন অশুভ ছায়া স্পর্শ করতে পারেনি কখনো ৷ যেহেতু তারা আল্লাহর বিধান মতো চলছে, ঘরের অভ্যন্তরে থেকে নিজের মান-সম্মান, সম্ভ্রম হেফাযতে রাখছে, নিজেকে পাপ
থেকে মুক্ত রাখছে !
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!