চন্দ্রপুরী পীরের নাম সায়্যিদ আবুল ফযল সুলতান আহমদ ৷ তিনি ফরিদপুর জেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের অধিবাসী ৷ তিনি শাহসূফী ইউনূস আলী এনায়েতপুরীর শিষ্য ৷ দেওয়ানবাগী পীর মাহবুবে খোদার পীর ও শ্বশুর | তিনি ১৯৮৪ ইংরেজী সালে মৃত্যুবরণ করেন ৷
চন্দ্রপুরীর আকিদা-বিশ্বাস নং- ১ জিবাইল এবং আল্লাহ এক ও অভিন্ন ৷ চন্দ্রপাড়ার পত্রিকা মাসিক আত্মার বাণী ৫ম বর্ষ ১ম সংখ্যা ২২ পৃষ্ঠায় লিখেছে, এখন বুঝা প্রয়োজন জিব্রাইল কে? এই সম্বন্ধে বহুজনের বহু মত ! সুলতানিয়া মুজাদ্দেদিয়া তরিকার ইমাম চন্দ্রপুরী ফরমানঃ জিব্রাইল বলিতে অন্য কেহ নন স্বয়ং হাকিকতে আল্লাহই ৷
তার বিপক্ষে দলিলঃ আল্লাহ ও ফেরেশতা সম্বন্ধে আহলে হকের আকিদা হল, আল্লাহ খালিক অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা | জিবাইল একজন ফেরেশতা, আর ফেরেশতা হল মাখলুক, অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টজীব স্বর্গীয় বার্তাবাহক তার প্রমাণ ও ঘোষণা |
» সমস্থ প্রশংসা আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্ত আব্লাহরই উনি ফিরিশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক ৷ তারা দুই দুই, তিন তিন, চার চার পাখা বিশিষ্ট | সূরা ফাতির, আয়ূত,১)
অর্থ স্মরণ কর! যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করতেছি ৷ তারা বলল, আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে, অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবেঃ আমরাইতো আপনার প্রশংসা স্তুতিগান এবং পবিত্রতা বর্ণনা করি ৷ তিনি বললেন, 'আমি (আল্লাহ) যা জানি তোমরা (ফেরেশতারা) তা জান না | (সৃধ্য বাকাৰা, আযাত ৩০) ( সুতরাং পাক কুরজানে যাকে বার্তাবাহক বলা হয়েছে তিনি কখনও আল্লাহ হতে পারে না৷ আল্লাহ এবং ফেরেশতার মধ্যে পার্থক্য ও ভিন্নতা রয়েছে ৷ * অতএব, চন্দ্রপুরীর এই আকিদা ঈমানবিনাশী কুফুরী | এ আকিদার দরুন তারা ইসলাম ধর্ম হতে বের হয়ে গেছে ৷
চন্দ্রপুরীর আকিদা-বিশ্বাস নং- ২ ফিরিশতারা আল্লাহর নাফরমানী করে ৷ মাসিক আত্মার বাণী ৫ম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যার ২৫ নং পৃষ্ঠায় লিখেছে ১৪/১১/৮২ইং ইশার সময় জনৈক মুরিদ জিজ্ঞাসা করিল "বাবাজান ইবলিসের গলায় « হার হইল কেন? এর জবাবে চন্দ্রপাড়ার পীর মৌ সুলতান আহমাদ বলিলেন ইবলিসের অধীনে অসংখ্য ফেরেশতা কাজ করতেছে ৷" চন্দ্রপুরী বলেন, "ইবলিশ তার অধীনে যে ফেরেশতা আছে তাদের বলতেছে, এই ফেরেশতা তুই এই কর ৷ বিভিন্ন নাম আছে তো, তুমি এইটা বানাও, তুমি ঐটা বানাও ৷ এরে চোর বানাও ৷ ওরে চোষ্টা বানাও ৷ ওরে সাধু বানাও ৷ সে হুকুম করতেছে তারা (ফেরেশতারা) বানাইতেছে ৷ বুঝাতে চায় যে, আল্লাহর ফেরেশতারা নাফরমানী করে ৷ (নাউজুবিল্লাহ)
তার বিপক্ষে দলিলঃ চন্দ্রপুরীর এ মতবাদ সম্পূর্ণ কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কুফরী মতবাদ ৷ আকিদা হল ফিরিশতারা মহান আল্লাহর সৃষ্টজীব স্বর্গীয় বার্তাবাহক ৷ এরা সদা সর্বদা মহান আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন থাকেন৷ এরা কখনো আল্লাহর নাফরমানী করে না; এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাজালা বলেন- , যা আদেশ করেন ফিরিশতারা তা অমানা করে না এবং যা করতে নির্দেশ দেয়া হয় তারা তাই করে | (সৰ ভাষইম ) -প্লের আমরাইতে৷ (ফিরিশতার') আপনার প্রশংসা স্বরতিগান এবং এতা বর্ণনা করি | বাকার ) সুতরাং কুরআনের বর্ণন' দ্বারা প্রমাণিত হল নাফরম'নি করে না ! অথচ পীর সাহেব কুরআনের বিরোধীতায় লিপ্ত ! যে ব্যক্তি কুরআনের বিরোধিতায় লিপ্ত সে কি মুসলমান থাকতে পারে? পীর হওয়া তো দূরের কথা ৷
চন্দ্রপুরীর আকিদা-বিশ্বাস নং- ৩
বড় বুর্গ হলে আর ইবাদত লাগে না৷ চন্দ্রপাড়ার বই 'হক্তুল ইয়াকিনের' ২৯ নং পৃষ্ঠায় লিখেছে 'কোন লোক যখন মকামে গিয়ে পৌছে তখন তার কোন ইবাদত থাকে না ৷ এখানে নফসীর মকাম এর অর্থ হল, সবার উর্ধে ৷ অতএব, অর্থ হলো বড় বুধুর্গ হলে ইবাদত লাগে না !
তার বিপক্ষে দলিলঃ চন্দ্রপুরীর এই আকিদা সম্পূর্ণ বাতিল ও কুফরী ৷ যা স্পষ্ট কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী | কেননা, কুরআনে বলা হয়েছে- অর্থ মৃত্যু পর্যন্ত তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর ৷ (সূর্য হিজর, আয়াতঃ ৯৯) এখানে "ইয়াকিন" শব্দের অর্থ নিয়ে অনেক বাতিলপন্থীরা বিভ্রান্ত ছড়ায়, তারা ইয়াকিন অর্থ মারেফাত বা বিশ্বাস ইত্যাদি বলে | তাদের মতে কারো ইয়াকিন বা বিশ্বাস অর্জন হয়ে গেলে তার ইবাদত করতে হয় না ৷ তাদের এই তরজমা কুফুরী ও পথভ্রষ্টতা বৈ কিছু নয় ৷ কেননা, তাফসীরে ইবনে কাসিরে ইয়াকিন শব্দের অর্থ মউত বলা হয়েছে ৷ বিস্তারিত দেখুন তাফসীরে ইবনে কাসীর ২য় খন্ড ৫৬০ পৃষ্ঠায় ও তাফসীরে রূহল মাআনী, ৮ম খন্ড, ৮৭ পৃষ্ঠা ৷ আকাইদ ও ফিক্যাহ শান্ত্রের বিধান মতে, বান্দা যতক্ষণ সুস্থ মস্তিস্ক, বালেগ (প্রাপ্তবয়স্ক) থাকে ততক্ষণ যত বড় ইবাদতকারী হউক না কেন তার উপর হতে আল্পাহর আদেশ নিষেধ রহিত হয় না ৷ রহিত হওয়ার আকিদা গোমরাহী | (শরহে আকাইদ পৃ ১৫৩) সুতরাং চন্দ্ৰপুরীর এ মতবাদের মধ্যে শরীয়তের একটি সুস্পষ্ট ও অকাট্য আকিদার অস্বীকৃতি পাওয়া যায়, যা সুস্পষ্ট কুফর ৷ এমন মতবাদে বিশ্বাসী ব্যক্তিকে মুসলমানই বলা যায় না, পীর হওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না ৷
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!