Thursday, March 12, 2020

করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে অাল্লামা অাহমদ শফীর পাঁচটি বি‌শেষ পরামর্শ

চীনের উহান শহর থে‌কে বের হ‌য়ে এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে‌ছে করোনাভাইরাস। যা এখন সবার মাঝে এক মহা আতংক ও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অার এখান বাঁচ‌তে পাঁচ‌টি শরীয়াহ‌ভি‌ত্তিক পরামর্শ প্রদান করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলা‌দেশ এর অামীর, দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপ‌রিচালক অাল্লামা শাহ অাহমদ শফী।

অাজ (মঙ্গলবার) ১০ শে মার্চ ‌সন্ধ্যা ৬টায় গণমাধ্য‌মে পাঠা‌নো এক বিবৃ‌তি‌তে তি‌নি জনগ‌ণের প্রতি পাঁচটি পরামর্শ প্রদান ক‌রেন।

অাল্লামা অাহমদ শফী বলেন, ক‌রোনাভাইরাস থে‌কে বাঁচ‌তে কুরঅান-সুন্নাহর অা‌লো‌কে কিছু পরামর্শ দি‌তে চাই!

এক. রোগ-মহামা‌রি কিংবা দুর্য‌োগ অাল্লাহ তায়ালার পক্ষ হ‌তে অা‌সে। বান্দা‌দের পরীক্ষা করতে বি‌ভিন্ন সময় অাল্লাহ তায়ালা এমন ক‌রে থাক‌েন। যেমন পবিত্র কুরঅা‌নে ব‌র্ণিত হ‌য়ে‌ছে, "অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।' (সূরা বাকারা: ১৫৫)

তাই বর্তমান সময়‌ে অামাদের উ‌চিত হ‌বে ধৈর্যধারণ কর‌া, অাল্লাহ তায়ালার উপর বিশ্বাস অা‌রো সুদৃঢ় করা এবং তাঁর কা‌ছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

দুই. মহা‌মা‌রি কিংবা ভাইরাস নতুন কিছু ন‌য়। বি‌ভিন্ন শতা‌ব্দি‌তে বিশ্বব্যাপী এমন ভাইরাস ছড়ি‌য়ে প‌ড়ে‌ছিল। রাসূল সা. এর সম‌য়েও এমন মহাম‌া‌রি রোগ ছ‌ড়ি‌য়ে‌ছিল।
মানবতার মু‌ক্তির দূত রাসূল সা. এর সমাধানও দি‌য়ে গে‌ছেন। রাসূল সা. ইরশাদ করে‌ছেন, যদি তোমরা মহামারীর কোনো সংবাদ শোন, তো সেখানে তোমরা প্রবেশ হতে বিরত রাখ। আর যদি কোনো শহরে বা নগরে কেউ সে মহামারীতে আক্রান্ত হয়, তো সেখান থেকে তোমরা বের হয় না।' (বুখারী শরীফ : হাদীস নং ৫৩৯৬)

তাই কোথাও মহামা‌রি কিংবা সংক্রমণব্যাধি দেখা দি‌লে ওই জায়গা থে‌কে প্রস্থান করা অনু‌চিত। তাই অামা‌দের হাদিসটির উপর অামল করে গমন ও প্রস্থান ‌বিষ‌য়ে সতর্কতা; প্র‌য়োজনে কড়াক‌ড়ি অা‌রোপ করা উ‌চিত।

‌তিন : পৃ‌থিবী‌তে যা কিছু ঘ‌টে সব‌কিছু অ‌া‌ল্লাহ তাঅালার ইচ্ছা‌তেই ঘ‌টে। ত‌বে সব‌কিছুর কারণ ও প্রতিকার বুঝতে অামরা সামর্থ রা‌খি না। কারণ অাল্লাহ তায়ালা সব‌চে‌য়ে কৌশলী ও প্রজ্ঞাবান। তাই এহেন মুহূ‌র্তে অামা‌দের উ‌চিত হ‌বে মস‌জি‌দে ও ঘ‌রে সম্ম‌িলিত কিংবা একা‌কীভা‌বে ‌দোয়ার অামল করা । অ‌াল্লাহ তায়‌ালার কা‌ছে সমস্ত অপরাধ ও পাপ থে‌কে ক্ষমা চাওয়া এবং ক‌রোনাভাইরাস সহ সকল প্রকার রোগ থে‌কে প‌রিত্রাণ চাওয়া। কারণ ‌কান্না‌বিজ‌ড়িত দোয়া অাল্লাহ তায়‌ালার অাজাব কমা‌তে পা‌রে।

চার: প্র‌ত্যেক মস‌জি‌দে কাল ফজর থে‌কে কুনু‌তে না‌জেলা পড়া হোক। কারণ কুনু‌তে না‌জেলার মাধ্য‌মে অ‌াল্লাহ তায়‌ালা কা‌ছে বি‌শেষ অা‌র্জি করা হয়। যেমন হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, "রাসূল সা. ফজরের নামাযের সময় সর্বদা কুনুত নাজেলা পড়তেন না। শুধু পড়তেন কোন জাতির জন্য দোয়া করতে বা বদদোয়া করার প্রয়োজন হলে। তিনি কুনুত পড়তেন যখন ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু থেকে মাথা উঠাতেন"।

অার‌বের বি‌ভিন্ন দে‌শে মানুষ মস‌জি‌দে যা‌চ্ছে না। জুমার নাম‌াজে অংশ নি‌চ্ছে না। এটা অনু‌চিত ও গ‌র্হিত কাজ। যে অাল্লাহ তায়ালা এই রোগ দি‌য়ে‌ছেন তার কা‌ছেই মু‌ক্তি চাওয়াই প্রকৃত মু‌মি‌নের কাজ।তাই মস‌জি‌দে মস‌জি‌দে কুনু‌তে না‌জেলার অামল করা হোক।

প‌াঁচ : সর্বাবস্থায় নি‌জেকে প‌রিচ্ছন্ন রাখুন।
নিজেকে জীবাণুমুক্ত রাখুন, দু'হাত ধৌত করুন। সবসময় অজু অবস্থায় থাক‌তে চেষ্টা করুন। ময়লা আবর্জনার মাধ্যমে  কোন ব্যাধি যেন না ছড়ায় সে‌দি‌কে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। কারণ প‌রিষ্কার-প‌রিচ্ছন্নতা রোগ নিরাম‌য়ে সহ‌যোগী এবং এক‌টি সুন্নাহসম্মত কাজ।

বার্তা‌প্রেরক
মাওলানা মুহাম্মদ অানাস মাদানী
প্রচার সম্পাদক : হেফাজ‌তে ইসলাম বাংলা‌দেশ

শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!