“হে ভারত! ফ্রান্সের ময়দানে, ইটালীর পাহাড়
পর্বতে, সালুনিকার মাঠে-ঘাটে, দারাদানিয়ালের
প্রস্তর ভূমিতে, সিনাই উপত্যকা এবং সুয়েজ ও
সিরিয়ার বালুকা প্রান্তরে, এডিন ও ইয়ামতের কঙ্কর
ভূমিতে, ইরাক, ইরানের মাঠে-ময়দানে, পূর্ব ও পশ্চিম
আফ্রিকার জার্মান অধিকৃত অঞ্চলে, মধ্য এশিয়া ও
কাফকাজিয়ার তুষার ভূমিতে এবং কৃষ্ণ সাগর,
লোহিত সাগর ও শ্বেত সাগরের উপকূলসমূহে বন্য পশু ও
জন্তুর ন্যায় অতীব নির্দয়ভাবে তোর লক্ষ্য লক্ষ কচি
সন্তানের রক্তের স্রোত প্রবাহিত করা হচ্ছে, তাদের
উপর গোলা বর্ষণ চলছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ অস্ত্রঘাতে
দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছে। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি
হে ভারত! এর বিনিময়ে তোকে কি পুরস্কার দেওয়া
হলো? উত্তরে এছাড়া তোর আর কি বলার আছে যে,
এর পুরস্কার স্বরূপ তোর ভাগ্যে জুটেছে স্ত্রীদের
বৈধব্য, সন্তানদের এতীম হওয়া, তোর গলায় দাসত্বের
শৃংখল পরানো, রাওলেট বিল পাশ হওয়া, কোর্ট
মার্শালের কবলে পড়া, পাঞ্জাবের দিকদিগন্তকে
রক্তে রঞ্জিত করা, জালিনওয়ালাবাগে মিশিন
গানের বর্ষণ, তোর নিরিহ সন্তানদের উপর পাশবিক
অত্যাচার ও অপমানজনক ব্যবহার, তোর স্বাধীনতা
কেড়ে নেওয়া, তোর উপর নানাবিধ টাক্স বসানো,
তোকে রাজদ্রোহিতার নানারূপ ষড়যন্ত্রের
বেড়াজালে শৃঙ্খলিত করা”।
“ভাইসব, এ সমস্ত কি কারণে সম্ভব হচ্ছে তা আপনারা
চিন্তা করেছেন কি? আমাদের অনৈক্য এবং
বিদেশীদের সঙ্গে আমাদেরই এক শ্রেণীর লোকের
অবৈধ মৈত্রী সহযোগিতার কারণেই এসব সম্ভব হচ্ছে।
আজ যদি আমরা গোটা ভারতবাসী ঐক্যবদ্ধ হই,
পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদের প্রতি চোখ তুলে
তাকাবার সাহস পাবে না। আমাদের ঐক্যশক্তির
কাছে তাদের গোলা-বারুদ নিস্ক্রিয় হতে বাধ্য। ….
আমাদের মতবিরোধে কেবল আমাদেরকেই বিপদে
পড়তে হবে না বরং এর ফলে গোটা প্রাচ্যের অন্যান্য
দেশ ও জাতির স্বাধীনতাও বিপন্ন হতে পড়বে”।
(খেলাফত কনফারেন্সে মাও.হুসাইন আহমাদ মাদানীর ঐতিহাসিক জ্বালাময়ী ভাষন।১৯২১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি )
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!