Saturday, May 30, 2020

ফেকআইডি ও অপপ্রচারঃ প্রতারণা ও মিথ্যাচার

ফেকআইডি ও অপপ্রচারঃ প্রতারণা ও মিথ্যাচার


ফেকআইডি ও অপপ্রচারঃ প্রতারণা ও মিথ্যাচার
তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ফেসবুকের ইতিবাচক দিক যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে নেতিবাচক দিকও। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে ফেসবুক এখন নতুন এক নেশায় পরিণত হয়েছে।যা হতাশাব্যঞ্জক ও বিপদজনক! তারচেয়ে আরো দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে কিছু অসৎ ও অসাধু ব্যক্তি ফেসবুককে মন্দকাজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা ফেকআইডি খুলে প্রতিনিয়ত মানুষকে ধোকাঁ দিচ্ছে। বিভ্রান্ত করছে। মানহানি করছে। পরস্পর বিবেদ লাগিয়ে দিচ্ছে। গীবত, অপবাদ, চরিত্রহনণ, হুমকি ধমকি প্রদানসহ নানা অপকর্মে ফেকআইডিগুলো ব্যবহার করছে। যা  অত্যন্ত নিন্দনীয়। রাসূল (সাঃ)বলেন, من غش فليس منا  যে ধোঁকা দেয় সে আমার অর্ন্তভূক্ত নয়। 
যেসব কারণে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ লোপ পায়, সমাজ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হয়, সামাজিক মূল্যবোধ বিনষ্ট হয়, পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি নষ্ট হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো গীবত, যা মানুষকে নিকৃষ্টতম প্রাণীতে পরিণত করে। তাইতো আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) মানুষকে এই নিকৃষ্ট স্বভাব থেকে বিরত থাকার তাগিদ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ হে মুমিনগণ তোমরা অধিক ধারণা হতে বিরত থাকো। কতক ধারণা পাপের অর্ন্তভূক্ত। তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করো না, একে অন্যের অনুপস্থিতিতে দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরাতো সেটাকে ঘৃণাই করে থাকো। আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, অতি দয়ালু”- হুজুরাতঃ১২। রাসূল (সাঃ) বলেন, গীবত যিনা ব্যভিচারের চেয়েও বেশি জঘন্য ও ঘৃণ্য অপকর্ম” অন্য হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেন, গীবত শ্রবণকারী গীবতকারীদের পাপের ভাগীদার। আলোচ্য আয়াত ও হাদীস দ্বারা প্রতিয়মাণ হয় যে, গীবত এমন এক জঘন্য অপকর্ম যা মানুষের ঈমান ও আমলকে ধ্বংস করে দেয়। বরবাদ করে দেয় তাদের ইহকাল ও পরকালকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, না জেনে না বুঝে আমরা সর্বদা এ জঘন্য অপকর্মে ভেসে চলেছি। বিশিষ্ট ও সাধারণ কেউই আমরা এ মারাত্মক রোগ থেকে মুক্ত নই। সমাজের সর্বস্তরের সকলে এ মহামারী রোগে এমনভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন যে, এটাকে এখন আর কেউ পাপকর্ম বলেই গণ্য করেন না। আমাদের অন্তর থেকে সে অনুভূতিটুকুও লোপ পেয়ে গেছে। বিবেকের ঘটেছে অপমৃত্যু। আর এজন্য আমাদের নেই কোন অনুতাপ, অনুশোচনা, নেই কোন তাড়না।
ইবনুল কায়্যিম (রাহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি তার নিজেকে ভালোভাবে চিনতে পেরেছে, সে অন্যের দোষ-ত্রুটি বাদ দিয়ে নিজের সংশোধনে লেগে গেছে। খারাপ স্বভাবের মধ্যে খুবই ফালতু একটা স্বভাব হলো, মানুষের সমালোচনা করে বেড়ানো। প্রথমত, এর দ্বারা গীবত হয় এবং এর বিনিময়ে সমালোচনার শিকার হওয়া ব্যক্তি হাশরের মাঠে সমালোচনাকারীর নেকি নিয়ে নিবে। দ্বিতীয়ত, এর দ্বারা সমাজে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ ও ভ্রাতৃত্ব নষ্ট হয়। 
হাদিসে এসেছে, من ستر مسلماً ستره الله في الدنيا والآخرة যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবে, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন। আল্লাহপাক আমাদেরকে পরনিন্দা, গীবত, অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষসহ সকল খারাপ অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন

‌লেখকঃ মাওলানা এরফান শাহ্   
গ্রন্থকার ও কলা‌মিস্ট
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

Friday, May 29, 2020

“বিপক্ষে গেলে বহিরাগত, স্বপক্ষ হলে আম‌ন্ত্রিত”

“বিপক্ষে গেলে বহিরাগত, স্বপক্ষ হলে আম‌ন্ত্রিত”

ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ও কাঁদাছুড়াছুড়ি উম্মুল মাদারিস ও মকবুল ইদারায় অশোভন ও অনাকাঙ্ক্ষিত। 
মকবুল ইদারার গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে এসব অপসংস্কৃতি, সাংঘর্ষিক ও আত্মঘাতী কর্মকান্ড কোনোভাবেই মানায় না। উল্লেখ্য, দায়িত্বশীলগণ আরো দায়িত্ববান হবেন, প্রতিবেশীগণ আরো যত্নবান হবেন, প্রাক্তন ছাত্ররা আরো সচেতন হবেন, আলেম উলামারা আরো সজাগ হ‌বেন, শুরার সম্মাণিত সদস্যগণ আরো নিরপেক্ষ হবেন, সরকার ও প্রশাসন বি‌বেকবান হ‌বেন এবং সেব‌কের ভূ‌মিকা পালন কর‌বেন  এটিই সকলের প্রত্যাশা। ((كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ))  হাদিসে রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তোমরা সকলে জিম্মাদার, প্রত্যেকে নিজ জিম্মাদারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। 
অতএব, উভয়পক্ষ আল্লাহর ওয়াস্তে, দ্বী‌নের স্বা‌র্থে নমনীয় হবেন,  কাঁদাছুড়াছুড়ি বন্ধ করবেন, পরস্পর দূরত্ব কমিয়ে মিলেমিশে নতুন অধ্যায়ের সুচনা করবেন, মুসলিম উম্মাহর চেতনা ও আদর্শের বাতিঘরকে সকল বিতর্কের উর্ধ্বে রাখবেন এটিই জাতির কামনা। কর্তৃপক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।  সকল বিত‌র্কের  অবসান হোক। ইদারা নিয়মতা‌ন্ত্রিকভা‌বে প‌রিচা‌লিত হোক। সকল অনিয়ম ও অন্যায়‌ দূ‌রিভূত হোক।  উম্মুল মাদারিস ও মকবুল ইদারাকে নিয়ে বিতর্ক, অপপ্রচার, বিভ‌ক্তি, ষড়যন্ত্র, গ্রু‌পিং, আলোচনা ও সমালোচনা চিরতরে বন্ধ হোক, এটিই উম্মাহর চাওয়া।  
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে সাম্য। করোনায় যেভাবে ধনী গরীবের মাঝে ব্যবধান কমিয়েছে অনুরূপভাবে ঈদ উম্মুল মাদারিস ও মকবুল ইদারার সকল দায়িত্বশীলগণের রাগ-অভিমান ভাঙ্গিয়ে  وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ দলাদলি, দ্বন্দ্ব, দূরত্ব, ভেদাভেদ ও বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে, ইদারা অতীতের সেই পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে, সকলের মাঝে ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্বের  শক্তিশালী বন্ধন গড়ে তুলবে, আকাবের ও কওমের শতবর্ষী এই  আমানত রক্ষা হবে, দা‌য়িত্বশীলগণ ঐক্যবদ্ধভা‌বে এগি‌য়ে যা‌বেন, এটিই কওমের প্রত্যাশা, কামনা, চাওয়া ও দোয়া। 
আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেনঃ إنما المؤمنون إخوة فأصلحوا بين أخويكم  হাদিসে রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ  لا يحل لمسلم أن يهجر أخاه فوق ثلاث ليال: يلتقيان فيعرض هذا ويعرض هذا؛ وخيرهما الذي يبدأ بالسلام : مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন, নিরাপ‌দে থাকুন।  মকবুল ইদারার জন্য দোয়া করুন। করোনাভাইরাস, দুর্যোগ, মহামারী ও সকল ফিতনা ফ্যাসাদ থেকে আল্লাহপাক সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন

‌লেখকঃ মাওলানা এরফান শাহ্ 
গ্রন্থকার ও কলা‌মিস্ট
প্রাক্তন ছাত্র, দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
সন্তান হিসেবে দোষ করতে পারি! তাই বলেকি অভিমান করে চলে যাবেন!

সন্তান হিসেবে দোষ করতে পারি! তাই বলেকি অভিমান করে চলে যাবেন!


সন্তান হিসেবে দোষ করতে পারি! তাই বলেকি অভিমান করে চলে যাবেন!

কী হবে আমাদের একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন আমাদের ছেড়ে। কওমি অঙ্গনের বাতিগুলো নিভে যাচ্ছে। কওমী অঙ্গন দিনদিন আলোহীন হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন কোন না  কোন দুঃসংবাদ আমাদের পিছু লেগেই আছে।
 
আর যাঁরা অবশিষ্ট আছেন তাঁরাও সুস্থ নয়। সবাই কোন না কোন জটিল রেগে ভুগছেন। 

জানি না তাঁরা কি আমাদের উপর এত বেশি রাগ করেছেন ! যে কারণে অভিমান করে আমাদের ইয়াতিম করে চলে যাচ্ছেন একে একে  আপন গন্তব্য মাহবুবের ডাকে! হে আমাদের বটবৃক্ষ! হে আমাদের ছায়াবৃক্ষ! সন্তান হিসেবে আমরা অনেক ভুল করতে পারি। আমাদের অনেক ভুল হয়ে যেতে পারে! হয়তো  ভুলবশত নাবুঝে অসম্মান করতে পারি! অভিভাবক হিসেবে আমাদের ক্ষমা করা যায়না?  সন্তান হিসেবে ক্ষমা পাওয়ার আবদারটুকুতো আমাদের রয়েছে।

 প্লীজ আর অভিমান করবেন না। আকাবির শুণ্য কিভাবে চলবো আমরা। কে পথ দেখাবেন আমাদের! কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক কে আমাদের ধরিয়ে দিবেন। নাহ এভাবে চলে না। দয়া করে আমাদের ক্ষমা করুন। এভাবে অভিমান করে আর চলে যাবেন না। 

হে প্রভু! হে আল্লাহ! হে পরম করুনাময়! আপনি আমাদের অভিভাবকের হায়াতে তাইয়েবা দান করুন।তাঁদের ছায়া বৃদ্ধি করে দিন। আমাদের কল্যাণের জন্য হায়াত দীর্ঘ করুন। আমীন

Friday, May 22, 2020

এশিয়ার গৌরব মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী;স্বপ্নযোগে রাসুল সা.এর আদেশ

এশিয়ার গৌরব মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী;স্বপ্নযোগে রাসুল সা.এর আদেশ


বর্তমান বাংলাদেশের মুফতীয়ে আজম ও হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতী আল্লামা আব্দুস সালাম চাটগামী হাফিযাহুল্লাহু শুধু বাংলাদেশের নয় এশিয়া উপমহাদেশের গর্ব। হাদিস ও ফিকায় সমান যোগ্য একজন ব্যক্তি তিনি। 
বহু মুফতী আছেন যাঁরা ফিকাহ শাস্ত্রে অভিজ্ঞ হলেও হাদীসে অতটা অভিজ্ঞতা রাখেন না। আল্লামা চাটগামী সাহেব হুজুর হাদীস ফিকাহ উভয়টাতেই সমান দক্ষতা রাখেন। তাঁর স্বরচিত আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল্ল নামক কিতাবটি পড়লে তা সুস্পষ্ট বুঝা যায়।

তিনি দীর্ঘদিন জামিয়া বিন্নুরী টাউন করাচি পাকিস্তানের প্রধান মুফতী ছিলেন। পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণ সহ শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম আল্লামা চাটগামী সাহেবকে মুক্তা তুল্য মনে করেন। শ্রদ্ধা করেন ইজ্জত সম্মান করেন। তিনি  আল্লাহ ওয়ালা ও নিভৃতচারী একজন বুজুর্গ ব্যক্তি।

আল্লামা আশেক এলাহী বুলন্দশহরী রহ. এর সাহেবজাদা  মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব দা.বা.। যিনি মদিনা মুনাওয়ারায় থাকেন। তিনি ভারত উপমহাদেশের  মুফতিয়ানে কেরামের ফাতাওয়ার কিতাব সমূহকে সামনে রেখে জামেয়ুল ফাতাওয়া নামে একটি ফতোয়াগ্রন্থ সংকলনের উদ্যোগ নিয়েছেন। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, আল্লাহর নবী সা. তাকে বললেন, তুমি তোমার জামেয়ুল ফাতাওয়ায় বাংলাদেশের মুফতি আব্দুস সালাম চাটগামী লিখিত" জাওয়াহেরুল ফাতাওয়া"কিতাবটাও অন্তর্ভুক্ত করিও।আল্লাহু আকবার...।

মুফতি আব্দুস সালাম চাটগামী ফতুয়ার ব্যাপারে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বপ্ন যুগের স্বীকৃতি। তিনি কত বড় বুজুর্গ একজন মুফতী সাহেব তা সহজেই অনুমান করা যায়। 

জাওয়াহেরুল ফাতাওয়ার নতুন এডিশন যা বাংলা বাজারের মাকতাবাতুল ইত্তিহাদ চাপিয়েছে। তাতে মাওলানা আব্দুর রহমান দা.বা. এর স্বহস্তে লিখিত "খাবনামা " শিরোনামে স্বপ্নটির বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

ক'দিন আগে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পাকিস্তানের নাগরিক,হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক প্রবীণ ওস্তাদ আল্লামা সুলাইমান আরমান কাতেব সাহেব রহমাতুল্লাহ আলাইহির নাতি মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ বাংলাদেশ বেড়াতে এসেছিল।সেসম বিন্নুরী টাউনের প্রধান মুফতী কে তা জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায়-বান্নুরী টাউনের প্রধান মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী হাফিযাহুল্লাহু। তিনি বাংলাদেশে চলে আসলেও এখনো কাগজ-পত্রে বান্নুরী টাউনের প্রধান মুফতী হিসেবে আব্দুস সালাম চাটগামী সাহেবই আছেন।অন্যরা সকলেই তাঁর নায়েব হিসেবে কাজ করছেন।

বান্নুরী টাউনের মতো বিশাল জামিয়ায় এখনো আব্দুস সালাম চাটগামীর মতো যোগ্য ও উপযুক্ত কাউকে না পাওয়ায় প্রধান মুফতী হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সম্মান হিসেবে আজো প্রধান মুফতীর স্থানে আল্লামা আব্দুস সালাম চাটগামীকে রাখা হয়েছে।আর আমাদের বাংলাদেশে......।

মনে রাখতে হবে " যে জাতী তার গুণিজনের কদর আর মূল্যায়ন করে না সে জাতির মধ্যে গুণিজনের জন্ম হয় না।

আল্লাহ তায়া’লা হযরতকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন আমিন।
সংগৃহিত

Monday, May 4, 2020

চিকিৎসকদের জন্য যাবতীয় সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করুন! --আল্লামা শাহ আহমদ শফী

চিকিৎসকদের জন্য যাবতীয় সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করুন! --আল্লামা শাহ আহমদ শফী


করোনাভাইরাসের মহামারি আজ বিশ্বজুড়ে। আমাদের দেশেও এর প্রকোপ দিনদিন বাড়ছে। প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। আর এসব ধৈর্যসহকারে সামলে নিচ্ছে চিকিৎসকগণ। জীবনের মায়া ত্যাগ করে দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাই চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত এন-৯৫ মাস্ক সহ প্রায়োজনীয় সব সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান করছি।

আজ শনিবার ২ মে বিকাল ৪টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আহমদ শফী এ আহ্বান জানান।

আল্লামা আহমদ শফী বলেন, চিকিৎসক ও রোগীর সেবকদের জন্য রয়েছে নববী সুসংবাদ। রাসূল সা. বলেছেন, "যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, সত্তর হাজার ফেরেশতা বিকাল পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করে...।" (তিরমিজি শরীফ : ৯৬৭)

আমীরে হেফাজত আরো বলেন, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী প্রায় চারশ ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এটা যেমন দেশের জন্য উদ্বেগজনক তেমনি এ দুর্যোগকালে তাদের ত্যাগ প্রশংসনীয়। পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না থাকলেও অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তারা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের সেবা ও শ্রম এ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

আল্লামা আহমদ শফী আরো বলেন, গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী দেশের অনেক জেলা ও উপজেলায় করোনা শনাক্ত করা ও চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। অনেক হাসপাতালে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় অনেক চিকিৎসক ঠিকমতো রোগী দেখতে পারছেন না। ফলে অন্যান্য রোগীদের নিয়মিত সেবা ব্যহত হচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক। জেলা-উপজেলার সব হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক!

বার্তা‌প্রেরক
মাওলানা মুহাম্মদ  আনাস মাদানী
প্রচার সম্পাদক : হেফাজ‌তে ইসলাম বাংলা‌দেশ

Tuesday, April 21, 2020

মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও ভুল স্বীকার করে সংবাদ প্রচার করতে হবে

মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও ভুল স্বীকার করে সংবাদ প্রচার করতে হবে

মাওলানা মাহফুজুল হকের পক্ষ থেকে
সময় টিভিতে প্রচারিত 
মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ
—————————
 
ঢাকা
২১শে এপ্রিল’২০২০
গতকাল ২০শে এপ্রিল'২০ সময় টিভিতে আমাকে কেন্দ্র করে একটি সংবাদ এই মর্মে প্রচার করা হয়েছে যে, আমি মাওলানা মাহফুজুল হক মহাসচিব বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সদ্যপ্রয়াত আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমীর প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাযায় অধিক লোক জমায়েত করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীরের সাথে যোগসাজশ করেছি এবং  ফোনালাপের একটি বানোয়াট অডিও ক্লিপ সময় টিভি প্রচার করেছে ৷ এই প্রেক্ষিতে আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে-
সংবাদটি সর্বৈব মিথ্যা, মনগড়া ও পরিকল্পিতভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ৷ আলেম সমাজকে মানুষের সামনে ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে প্রতিপন্ন করার ভয়ংকর অপতৎপরতা ৷ আমি এবং আমাদের সংগঠন ইতিপূর্বেই আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জাতীয় গণমাধ্যমে বক্তব্য তুলে ধরেছি যে, জানাযায় অনাকাঙ্ক্ষিত অধিক লোক সমাগমের বিষয়টি সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত ও কাকতালীয় ৷ ব্যাপক সমাগমের কোন চিন্তাও আমাদের ছিল না ৷ বরং লোকসমাগম যেন না হয় সে জন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম ৷ সময় টিভি কর্তৃপক্ষ যে জঘন্য মিথ্যাচার করেছে এতে আমার মারাত্মক রকম মানহানি হয়েছে ৷ আমি কখনোই জামাতের আমীর কিংবা অন্য কারো সাথে এজাতীয় কোন কথোপকথন বা আলোচনা করিনি ৷ আমি অত্র প্রতিবাদ পত্রের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে বলছি সময় টিভিকে এই মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও ভুল স্বীকার করে সংবাদ প্রচার করতে হবে ৷ অন্যথায় আমি সময় টিভির বিরুদ্ধে যাবতীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব

Sunday, April 19, 2020

তা নিয়েই মূলত ওদের চুলকানি আর টেনশন

তা নিয়েই মূলত ওদের চুলকানি আর টেনশন

যেই মোল্লাদের জানাযায় লক ডাউনেও রেকর্ড সংখ্যক মানুষ হয় সেই মোল্লারা ঈমানী আন্দোলনের ডাক দিলে কি পরিমাণ লোক হবে এবং অবস্থা কি দাড়াবে তা নিয়েই মূলত ওদের চুলকানি আর টেনশন । 

জানাযায় লোকসমাগম,করোনার থেকে মুক্তির জন্য খোলা আকাশের নীচে সমবেত হয়ে দুআ এগুলো মূল বিষয় নয়। এগুলো জাস্ট সাময়িক ইস্যু হিসেবে দাঁড় করানো হয় আরকি....

এ চুলকানি নতুন নয় বহু পুরাতন রোগ ওদের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া আওয়ামীলীগ নেতার জানাযায় লোক সমাগমের চিত্র তাদের চোখে ধরা পড়েনি,পড়বেও না। কারণ মোল্লা দেখলেই চুলকায় ওদের।

কোন প্রচারণা ছাড়াই এতো লোকসমাগম। কোন মোল্লা তো কাউকে ডেকে আনেননি,আসার দাওয়াতও দেয়নি। তো লোকসমাগম বেশি হওয়ার দায়ভার লোল্লার কাঁধে কেন যাবে ?

ক'দিন পর পর গার্মেন্টস কর্মীরা বকেয়া বেতনের জন্য রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করে,তাদের সবার জন্য তো ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় না। কিন্তু মোল্লাদের ব্যাপারে এ নির্দেশ! 

সচেতনতা আর সতর্কতার অজুহাত দিয়ে আমাদের ঘরানার অতি জ্ঞানী কিছু তরুণ আলেম ফেসবুকাররাও ৭১ টিভির ওদের সাথে সুর মিলাতে দেখলাম!বড় আফসোস হয় আমাদের ঘরে,আমাদের দুধ কলায় পোষা এদেরকে যখন বামপাড়ার ওদের সাথে সুর মিলাতে দেখি।

ওরা অতি জ্ঞানী, অতি সচেতন।ওরা দু'চার কলম লিখতে জানে। ওরা ফেসবুক সেলিব্রিটি। 
তাই যাঁদের থেকে আলিফ,বা পড়তে শিখেছে তাঁদেরকেও সময়ে সময়ে বিভিন্ন সবক শেখায়।
যাক.....

মোল্লাদের দেখে যাদের চুলকানি তাদেরকে কুরআনের ভাষায় বলি- 
 موتوا بغيظكم 
[অর্থ: তোমরা আক্রোশে মরতে থাকো।
সূরা আল-ইমরান,আয়াত নং-১১৯ ]

{-এইচ.এম. জুনাইদ
দারুল উলুম হাটহাজারী। 
১৯/৪/২০২০ ইং}
কিছু আবেদনময়ী বোরকা ওয়ালী

কিছু আবেদনময়ী বোরকা ওয়ালী

✋একটু ব্যতিক্রমি পোস্ট। 
👉আগে পড়ুন পরে কমেন্ট করুন।
🌸ইদানিং একটি বিষয় লক্ষ্য করছি যে, " কাওমি মহিলা মাদ্রাসার " নামে মেয়রা এমন কিছু পোস্ট কোরতেছে আর এমন কিছু আবেদনময়ী বোরকা ওয়ালী
মেয়দের পিক আপলোড করছে যার কারনে কাওমী অঙ্গনের বদনাম হচ্ছে।। 

আচ্ছা আপনারা আপনাদের সুস্হ বিবেক থেকে চিন্তা করে বলেন তো আমি যে কয়েকটি বোরকা ওয়ালী মেয়ের পিক আপলোড করলাম এগুলা কি বাস্তবেই পর্দা শিখাচ্ছে?? না  এই আবেদনময়ী চাহনী অন্যদিকে আহবান করছে??

এই আবেদনময়ী বোরকাওয়ালীর চাহনির কারনে কত ছেলে অন্যরকম কমেন্ট করছে।। আর এখান থেকে আপনারা স্বাদ নিচ্ছেন।।
এগুলা কি গুনাহ নয়।।।

কেউ কেউ আবার পোস্ট করছ যে, 
❌কাওমি ওয়ালীদের বিয়ে করতে কপাল লাগে।।
❌কাওমী মেয়েরা একটু বেশি কিউট হয়।
❌কে কে কাওমি মেয়েদের পছন্দ করেন?
এই সেই আরো অনেক কিছু। 

এগুলা কিরে বোন?? এসব কথা দ্বারা তুমি কি বুঝাতে চাও??

এগুলাকে পর্দা বলেনা বরং এই সমস্ত কথা আর আবেদনময়ী পিকের কারনে ছেলেরা খারাপ চিন্তা করে।। আর যৌন সুড়সুড়ি দেয়া হচ্ছে।।। 

বাস্তবিক অর্থে যারা কাওমি মেয়ে তারা এসব পিক আপলোড করতে পারনা।।।

কখনো কি চিন্তা করছেন এসবের পিছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কি না??

কিছু আমার বোন আছে যারা না বুঝে এসব ষড়যন্ত্রের ফাদে পা দিয়েছে।। 

প্লিজ এসব থেকে বিরিত থাকেন।। পর্দার পোস্ট করতে চাইলে কোন ফুল বা ফলের পিক দেন বা প্রকৃতির পিক দেন।। 

  এসব খারাপ লাগলো তাই বল্লাম। তাই আগে ভাবুন পরে পোস্ট করুন। কষ্ট পেলে ক্ষমা করবেন.....

Saturday, April 18, 2020

মাদরাসা কোয়ারেন্টাইনে সকালের নাশতা জল রাইচ ওরফে পান্তা ভাত

মাদরাসা কোয়ারেন্টাইনে সকালের নাশতা জল রাইচ ওরফে পান্তা ভাত


পান্তা ভাত আমার পছন্দের খাবার,গরমকালে নিয়মিত খাই। 

শুধু আমার পছন্দের নয় বাংলা উইকিপিডিয়ায় আছে-পান্তা ভাত গ্রামীণ বাঙালি জনগোষ্টির একটি জনপ্রিয় খাবার। নৈশভোজের জন্য রান্না করা ভাত বেঁচে গেলে সংরক্ষণের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখা হলে পরদিন এই পানিতে রাখা ভাতের নাম হয় পান্তা ভাত।, পান্তা ভাত গ্রামীণ মানুষ সকালের নাশতা হিসাবে খেয়ে থাকে। সাধারণত লবণ, কাচা মরিচ ও পেঁয়াজ মিশিয়ে পান্তা ভাত খাওয়া হয়।

পান্তা ভাতের আরও গুণের মধ্যে একটি হলো,তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির একজন চিকিৎসক কাউসার আলম বলেন, পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি এবং সি রয়েছে।

তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ‘ঝিমুনিভাব’-এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পান্তা ভাতের পানিতে যে ব্যাক্টেরিয়া জন্ম নেয় তা পেটে কোন সমস্যা তৈরি করে কিনা সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।

গবেষকগণ বলেছেন,পান্তা ভাতের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২। এ ভাতের মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারি ব্যাকটেরিয়া যা খাদ্য হজম করতে সহায়তা করে এবং বহু রোগ প্রতিরোধ করে। এ ভাতে রয়েছে হাড় ও পেশি শক্তি বৃদ্ধির উপাদান এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ ক্ষমতা। পুষ্টিবিদগণ পান্তা ভাতের আরো অনেক গুণাগুনের বিবরণ দিয়েছেন যেমন:

১. পান্তা ভাত খেলে শরীর হালকা থাকে এবং কাজে বেশি শক্তি পাওয়া যায়।

২. মানব দেহের জন্য উপকারি বহু ব্যাকটেরিয়া পান্তা ভাতের মধ্যে বেড়ে যায়।

৩. পেটের পীড়া ভাল হয় এবং শরীরে তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে।

৪. কোষ্ঠবদ্ধতা দূর হয় এবং শরীরে সজিবতা বিরাজ করে।

৫. রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

৬. অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সবল হয় এবং মেজাজ ভাল থাকে।

৭. এলার্জি জনিত সমস্যা প্রশমিত হয় এবং ত্বক ভাল থাকে।

৮. সব রকম আলসার দূরীভূত হয়।

৯. শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

১০. মন মেজাজ ভাল রাখে।

লক ডাউনে যেহেতু হোটেল রেষ্টুরেন্ট বন্ধ 
তাই সকালে নাস্তার জন্য বাসায় আলাদা চাপ প্রয়োগ না করে সবার প্রতি পান্তা ভাত খাওয়ার পরামর্শ রইলো😀

Saturday, April 11, 2020

ইসলামী ইতিহাস ও অন্যান্য ইতিহাসের মধ্যে মৌলিক তফাৎ...গৃহবন্দিত্বের দিনলিপি-১

ইসলামী ইতিহাস ও অন্যান্য ইতিহাসের মধ্যে মৌলিক তফাৎ...গৃহবন্দিত্বের দিনলিপি-১

১) ইসলামী ইতিহাস কিছু নীতিমালার আলোকে সংকলিত একটি শাস্ত্র ৷ সাধারণ ইতিহাস তেমন কোনো নীতিমালার ভিত্তিতে সংকলিত নয় ৷

২) ইসলামী ইতিহাসে বর্ণনাগুলো নির্ভরযোগ্যতার মানদণ্ডে যাচাই করার জন্য বর্ণনাকারীর পরম্পরা তথা সনদ অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ৷ বর্ণনাকারীদের নির্ভরযোগ্যতাই যে কোনো বর্ণনা গ্রহন কিংবা প্রত্যাখ্যানের মানদন্ড ৷ কিন্তু সাধারণ ইতিহাসে বর্ণনাকারীর পরম্পরা তথা সনদের দিকে কোন লক্ষ্যই রাখা হয়নি ৷ ফলে সাধারণ ইতিহাসের কোনো বিষয় গ্রহণ করা বা প্রত্যাখ্যান করার কোন নীতিমালা নেই ৷ কিছু মানুষের উপর অন্ধ বিশ্বাস আর কিছু মানুষের উপর অযথা অবিশ্বাস যে কোনো কথা গ্রহণ ও বর্জনের মূল নীতি ৷

৩) ইসলামী ইতিহাসের যে কোনো বর্ণনার সত্যাসত্য যাচাই করার উপায় রয়েছে ৷ রিজাল শাস্ত্রের সহায়তায় যে কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনার নির্ভরযোগ্যতা যে কেউ যাচাই করে দেখতে পারে ৷ পক্ষান্তরে সাধারণ ও পশ্চিমাদের লিপিবদ্ধ ইতিহাস যাচাই করার এমন কোন সূত্র নেই ৷

৪) ইসলামী ইতিহাসের বর্ননার নির্ভরযোগ্যতা যাচাইয়ের মানদণ্ডের পাশাপাশি এর যে কোনো বক্তব্য কমনসেন্স তথা সাধারণ জ্ঞানের বিবেচনায় গ্রহণ এবং বর্জন নীতি রয়েছে ৷ যে কথা ফিতরতের বিপরীত, সে কথা ইসলামী ইতিহাসে গ্রহনযোগ্য নয় ৷ অন্য অনেক ইতিহাসে সাধারণ জ্ঞানের আলোকে অগ্রহণযোগ্য অনেক কথা প্রচলিত রয়েছে ৷

মুসলিম ও অন্যান্য জাতির ইতিহাসের গ্রহণযোগ্যতা আর অগ্রহণযোগ্যতার তারতম্য বুঝবার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, পশ্চিমা ইতিহাসবীদগণ আজও ওল্ডটেস্টামেন্টকে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স মনে করে ৷ হিন্দুরা রামায়ণের মত ইতিহাসকে তাদের গর্বের ধন মনে করে, যার মধ্যে সাধারণ জ্ঞানে ধরে না এমন অসংখ্য কাল্পনিক কথা রয়েছে ৷ পক্ষান্তরে মুসলমানদের নিকট ইবনে কুতাইবার লিখিত আল মাআরিফের মত ইতিহাসগ্রন্থ গ্রহণযোগ্য কিতাবের তালিকায় ঠাঁই পায় না ৷ বাগদাদের কাজী ওয়াকেদীর রচিত কিতাবের ওপরও চোখ বন্ধ করে আস্থা রাখা হয় না ৷

সূত্র:
تاريخ امت مسلمة-ج١ ص٤٩
مولانا محمد اسماعيل ريحان

মন্তব্য :
আমার মনে হয় কি, আমাদের জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে "রিজাল শাস্ত্র" ও সনদের কিছু বিষয় যদি কোনো উপায়ে অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া যেত৷ আর আমাদের ইতিহাসের পন্ডিতদেরকে রিজাল ও সনদের উপর অন্তত কিছু জ্ঞান দিয়ে দেয়া যেত, তাহলে অনেক মিথ্যাচার, বিকৃত ইতিহাসের বেড়াজাল থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তি পেত ৷ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যবীদদের ষড়যন্ত্রও ব্যর্থ হত ৷ আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত মুসলিম উম্মাহর কল্যাণকামী কিছু মানুষকে কি এই বাস্তবতাটি বোঝানো যায় ? 
জাতীয় শিক্ষাকারিকুলামে এই সংস্কারের দাবি তোলা কি যুক্তিসঙ্গত নয়?