Monday, July 10, 2017

শাস্ত্রীয় আলোচনা : তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া রাফয়ে ইয়াদাইন না করা-প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর হাদীস (১ম পর্ব)

নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে রাফয়ে ইয়াদাইন না-করা বিষয়ে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর হাদীস। এটি হাদীসের অনেক কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম তিরমিযী রাহ. (২৭৯হি.) ও তাঁর ‘সুনান’ গ্রন্থে তা বর্ণনা করেছেন। তাঁর সনদে হাদীসটির আরবী পাঠ নিম্নরূপ:
حدثنا هناد  قال: حدثنا وكيع، عن سفيان، عن عاصم بن كليب، عن عبد الرحمن بن الأسود، عن علقمة  قال: قال ابن مسعود: ألا أصلي لكم صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم؟ قال: فصلى فلم يرفع يديه إلا في أول مرة.
অর্থাৎ ইমাম তিরমিযী হান্নাদ থেকে, তিনি ওকী থেকে, তিনি সুফিয়ান ছাওরী থেকে, তিনি আসিম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদ থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি কি তোমাদের (শেখার) জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের মত নামায পড়ব না? এরপর তিনি নামায পড়েছেন এবং শুধু প্রথমবারে রাফয়ে ইয়াদাইন করেছেন। Ñসুনানে তিরমিযী, হাদীস ২৫৭
ওকী রাহ.-এর আরেকজন শাগরিদ যুহাইর ইবনে হারব একই হাদীস তাঁর থেকে নিম্নোক্ত শব্দে বর্ণনা করেছেন:
ثنا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ أَبُو خَيْثَمَةَ ثنا وَكِيعٌ عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: أَلَا أُرِيكُمْ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَرَفَعَ يَدَيْهِ فِي أَوَّلِ تَكْبِيرَةٍ ثُمَّ لَمْ يَعُدْ.
অর্থাৎ যুহাইর ইবনে হারব ওকী থেকে, তিনি সুফিয়ান ছাওরী থেকে, তিনি আসিম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদ থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায দেখাব না? এরপর (তিনি নামায পড়ে দেখিয়েছেন) এবং তাতে শুধু প্রথম তাকবীরের সময় দুই হাত উঠিয়েছেন। এরপর আর তা করেননি। Ñআলমুহাল্লা, ইবনে হাযম ৪/৮৭ (অর্থাৎ অন্য কোনো তাকবীরে হাত ওঠাননি)
ওকী রাহ.-এর ন্যায় ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রাহ.-এর আরেকজন শাগরিদ ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক রাহ.ও সুফিয়ান ছাওরী থেকে একই সনদ ও একই মতনে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন, যা ‘সুনানে নাসায়ী’তে বর্ণিত হয়েছেÑ
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ: أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَسْوَدِ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَقَامَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ أَوَّلَ مَرَّةٍ ثُمَّ لَمْ يُعِدْ
অর্থাৎ ইবনুল মুবারক সুফিয়ান ছাওরী থেকে, তিনি আসিম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদ থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায সম্পর্কে খবর দিব না? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে (নামায পড়ে দেখিয়েছেন) এবং তাতে শুধু প্রথমবার দুই হাত উঠিয়েছেন। এরপর আর তা করেননি। Ñসুনানে নাসায়ী, হাদীস ১০২৬
এ হাদীসে আমরা দেখলাম, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. তাঁর শাগরিদদেরকে রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায নিজে পড়ে দেখিয়েছেন এবং তাতে তিনি তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কোথাও হাত ওঠাননি। এটি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. কর্তৃক এ কথার কর্মগত বিবরণ যে, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কোথাও হাত ওঠাতেন না।[1]

সনদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা
এই হাদীসের সনদ সহীহ, এর রাবীগণ সকলেই ছিকা। আর হাদীস সহীহ হওয়ার যে পাঁচ শর্ত, এতে বিদ্যমান আছে। ইমাম বদরুদ্দীন আইনী রাহ. (৮৫৫হি.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম .তিরমিযী রাহ. এ হাদীসকে ‘হাসানুন সহীহ’ বলেছেন।[2]  এ বাক্যটি তিনি সাধারণত এমন হাদীস সম্পর্কেই বলেন, যা বিশুদ্ধতার উচ্চস্তরে উন্নীত। আলোচিত হাদীসটি মূলত এ পর্যায়েরই। ইমাম ইবনে হাযম রাহ. (৪৫৬হি.) ‘আলমুহাল্লা’ গ্রন্থে একে ‘সহীহ’ই বলেছেন। পাঠকগণ সামনে গিয়ে দেখবেন, এটিই আরো অনেক মুহাদ্দিসের মত।
যদিও আমাদের কাছে বিদ্যমান ‘জামে তিরমিযী’র মুদ্রিত কপিগুলোতে এখানে শুধু ‘হাসান’ শব্দ আছে। কিন্তু তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এ কথা তো স্বীকৃত যে, ‘হাসান’ হাদীস দলীলযোগ্য হাদীসেরই একটি প্রকার।
মুদ্রিত কপি অনুযায়ী এ হাদীস বর্ণনার পর ইমাম তিরমিযী বলেছেন:
حديث ابن مسعود حديث حسن، وبه يقول غير واحد من أهل العلم من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم، والتابعين، وهو قول سفيان الثوري، وأهل الكوفة.
অর্থাৎ এ হাদীসটি হাসান। একাধিক আহলে ইলম সাহাবী ও তাবেয়ীনের বক্তব্য এ হাদীস অনুযায়ীই ছিল। এবং এটিই সুফিয়ান ছাওরী ও কূফাবাসীদের (কূফায় অবস্থানকারী সাহাবী, তাবেয়ী এবং তাদের ফকীহ-মুহাদ্দিস শাগরিদদের) বক্তব্য।’ Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ২৫৭ এর আলোচনায়
এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়। আর তা এই যে, ইবনে মাসউদ রা. এই হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায-পদ্ধতির উদ্ধৃতিতে যে বিষয়টি কর্মের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময় দুই হাত ওঠাতেন, অন্য কোনো তাকবীর বা ওঠানামায় হাত ওঠাতেন নাÑ এ তাঁর একার বর্ণনা নয়, আরো অনেক সাহাবী তা বর্ণনা করেছেন। আর কর্মরূপে তো শত শত সাহাবী বর্ণনা করেছেন।
সবচেয়ে বড় কথা এই যে, এটি (রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযে শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময় হাত ওঠানো, অন্য কোথাও না-ওঠানো) সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে-তাবেয়ীন-যুগের ‘আমলে মুতাওয়াতির’ (যুগ পরম্পরায় চলে আসা ব্যাপক ও অনুসৃত কর্মধারা)-এর মাধ্যমে প্রমাণিত। এর বিশুদ্ধতা তাঁদের কাছে ছিল এক স্বতঃসিদ্ধ বিষয় । দ্বিতীয় খলীফায়ে রাশেদ উমর ইবনুল খাত্তাব ও চতুর্থ খলীফায়ে রাশেদ আলী ইবনে আবী তালিব রা.-এর আমলও এ অনুযায়ীই ছিল।
আলোচিত হাদীসটিকে শুধু শাস্ত্রীয় সহীহ নয়, অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত ঘোষণাকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম আন্ নাখায়ী রাহ. (৯৫হি.)। একবার আমর ইবনে র্মুরা তাঁর সামনে বললেন, আমাকে ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর পুত্র আলকামা তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামায পড়েছেন এবং তাঁকে তাকবীরে তাহরীমার সময়, রুকুতে যাওয়ার সময় ও তা থেকে ওঠার সময় দুই হাত ওঠাতে দেখেছেন। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বললেন:
مَا ادري، لَعَلَّه لم ير النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ واله وَسلم يفعل إلا ذَلِك الْيَوْم، فحفظ هَذَا مِنْهُ وَلم يحفظه ابْن مَسْعُود وَأَصْحَابه، مَا حفظته وَمَا سمعته من احد مِنْهُم، إنما كَانُوا يرفعون أيديهم فِي بَدْء الصَّلَاة حِين يكبرُونَ.
অর্থাৎ ‘আমার তো মনে হয়, তিনি (ওয়াইল ইবনে হুজর রা.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঐ একদিনই নামায পড়তে দেখেছেন। তো তিনি তাঁর রাফয়ে ইয়াদাইনের বিষয়টি ইয়াদ করে ফেললেন আর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. ও তাঁর সাথীগণ সেটা ভুলে গেলেন? আমি তাদের কাউকে তা বলতে শুনিনি। তারা তো শুধু নামাযের শুরুতে তাকবীর দেওয়ার সময় হাত ওঠাতেন।’Ñকিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনা, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান ১/৭৫-৭৬; শরহু মাআনিল আছার, ইমাম তহাবী ১/১৬২-১৬৩

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর এ কথার উদ্দেশ্য, ওয়াইল ইবনে হুজর রা. মদীনার অধিবাসী ছিলেন না, বরং প্রতিনিধিদের সাথে এক-দুবার অল্প সময়ের জন্য ইয়ামান থেকে মদীনায় এসেছিলেন। সুতরাং তিনি যদি রাফয়ে ইয়াদাইন করতে দেখে থাকেন, তাহলে স্পষ্ট যে, এ মাঝেমধ্যের আমল হবে, যা তিনি দেখেছেন এবং ইয়াদ করেছেন। নতুবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাধারণ আমল এটাই ছিল যে, তিনি শুধু তাকবীরে তাহরীমার সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন, আর কোথাও নয়। যদি রাফয়ে ইয়াদাইন করা স্বতন্ত্র কিংবা অধিকাংশ সময়ের আমল হত, তবে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.সহ বড় বড় সাহাবী, যাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে প্রথম কাতারে নামায পড়তেন, তাঁদের তা জানা থাকত এবং তাঁরা সে অনুযায়ীই আমল করতেন আর মানুষকে শেখাতেন। অথচ তাঁদের আমল ছিল রাফয়ে ইয়াদাইন না-করা। এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায-পদ্ধতির উদ্ধৃতিতে তাঁরা মানুষকে এরই মৌখিক বা কর্মগত তালীম দিতেন। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, আমরা তাঁদের শাগরিদদের কাছ থেকে রাফয়ে ইয়াদাইন না-করাই পেয়েছি, করা নয়। এ বাস্তবতাকেই ইমাম মুহম্মাদ ইবনুল হাসান রাহ. (১৩২-১৮৯হি.) এভাবে ব্যক্ত করেছেন:
جَاءَ الثبت عَن عَليّ بن ابي طَالب وَعبد الله بن مَسْعُود، أنهما لَا يرفعان فِي شَيْء من ذَلِك إلا فِي تَكْبِيرَة الِافْتِتَاح، فعلي ابْن ابي طَالب وَعبد الله بن مَسْعُود كَانَا أعْلَم برَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ واله وَسلم من عبد الله عمر، لِأَنَّهُ قد بلغنَا أَن رَسُول الله وَسلم صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: إذا أقيمت الصَّلَاة فليلني مِنْكُم أولو الاحلام والنهى ثمَّ الَّذين يَلُونَهُمْ ثمَّ الَّذين يَلُونَهُمْ، فَلَا نرى أن أحدا كَانَ يتَقَدَّم على أهل بدر مَعَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وآله وَسلم إذا صلى، فنرى أن أصحاب الصَّفّ الأول وَالثَّانِي أهل بدر وَمن أشبههم فِي مَسْجِد الْمُسلمين، وأن عبد الله بن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا ودونه من فتيانهم خلف ذَلِك فنرى عليا وَابْن مَسْعُود رَضِي الله عَنْهُمَا وَمن اشبههما من أهل بدر أعْلَم بِصَلَاة رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ واله وَسلم، لأنهم كَانُوا أقْرب إليه من غَيرهم وأنهما أعرف بِمَا ياتي من ذَلِك وَمَا يدع.
অর্থাৎ ‘আলী ইবনে আবী তালিব ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে নির্ভরযোগ্য খবর এসেছে যে, এঁরা নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কোথাও দুই হাত ওঠাতেন না। আর এঁরা দুজনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর চেয়ে বেশি অবগত ছিলেন। আমাদের কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ ইরশাদ পৌঁছেছে যে, তোমাদের মধ্যে যারা অধিক জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান তারা আমার কাছে দাঁড়াবে। এরপর যারা তাদের পরের স্তরের, এরপর যারা তাদের পরের স্তরের।

এজন্য আমরা মনে করি না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামাযে অন্য কেউ বদরী সাহাবীদের চেয়ে অগ্রবর্তী হত। আমরা বরং মনে করি, মুসলমানদের মসজিদে প্রথম ও দ্বিতীয় কাতারস্থ ছিলেন আহলে বদর ও তাঁদের সমপর্যায়ের সাহাবীগণ। আর আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ও যুবক সাহাবীগণ দাঁড়াতেন এর পিছনে।
সুতরাং আমরা মনে করি, আলী ইবনে আবী তালিব রা., আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. ও তাঁদের অনুরূপ অন্যান্য বদরী সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায সম্পর্কে অধিক অবগত ছিলেন। কারণ এঁরা অন্যদের চেয়ে তাঁর অধিক নিকটবর্তী ছিলেন এবং তিনি কী করতেন কী করতেন না সেটা বেশি বুঝতেন।’Ñকিতাবুল হুজ্জা আলা আহলিল মাদীনা, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান ১/৯৪-৯৫

কথা দীর্ঘ হয়ে গেল। আমি মূলত আরয করছিলাম, ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর উপরিউক্ত বক্তব্য থেকে বড় বড় সাহাবীর বাসস্থান কূফায় সাহাবা-যুগ থেকে রাফয়ে ইয়াদাইন না-করার আমলগত তাওয়াতুর (কর্মধারা) যেমন প্রমাণিত হচ্ছে, তেমনি এ-ও প্রমাণিত হচ্ছে যে, ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর দৃষ্টিতে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. ও অন্যান্য সাহাবী কর্তৃক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায-পদ্ধতির বরাতে রাফয়ে ইয়াদাইন না-করার তালীম দেওয়া ছিল একটি মীমাংসিত বাস্তবতা ।
তো বিষয়বস্তুর দিক থেকে আলোচিত হাদীসটির বিশুদ্ধতা ও প্রামাণিকতা তাবেয়ী-যুগে একটি স্বতঃসিদ্ধ বাস্তবতা ছিল, যার প্রতিধ্বনি আমরা ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর এ বক্তব্যে শুনতে পাই।
সনদগত দিক থেকেও অনেক মুহাদ্দিস একে ‘সহীহ’ বলেছেন। আর বিষয়বস্তুর দিক থেকে এ কর্মগত মুতাওয়াতির এবং খাইরুল কুরূনে একে কর্মগত ও মৌখিক উভয়ভাবে সহীহ বলা হয়েছে। তা সত্তে¡ও কিছু সংখ্যক হাদীস বিচারক কর্তৃক এর উপর কিছু সনদগত আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে, যার স্পষ্ট ও দলীলভিত্তিক উত্তর বিদ্যমান ছিল। এবং বড় বড় মুহাদ্দিসগণ সেসব উত্তর উপস্থাপনও করেছেন। আর  কেউ কেউ তো এমন কিছু আপত্তি-ও করেছে, যা একেবারে ‘লাহনে জালী’র অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর হাকীকতও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
নিয়ম হল কোনো শাস্ত্রীয় আপত্তির যুক্তিসঙ্গত ও সন্তোষজনক জবাব এসে গেলে আর তার পুনরাবৃত্তি করা যায় না। আর ‘লাহনে জালী’র পুনরাবৃত্তির তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু বর্তমানে ফিকহে ইসলামী ও মুজতাহিদ ইমামদের প্রতি একধরনের শত্রæতা পোষণকারী একটি দল আছে, যারা হাদীস অনুসরণের অনুসৃত ও মাসনূন তরীকা ছেড়ে দিয়ে এক নবআবিষ্কৃত পন্থায় তা অনুসরণ করছে। এদের মধ্যে যাদের জরহ-তাদীল ও ইলালুল হাদীস শাস্ত্রের নিয়মনীতি ও পরিভাষাগুলো শাস্ত্রজ্ঞদের সাহচর্যে থেকে শেখার সুযোগ হয়নি, তারা কখনো শুধু তরজমার উপর ভিত্তি করে, কখনো নিজের বা অন্যের অপরিপক্ব সমঝের উপর নির্ভর করে ‘লাহনে জালী’সহ ঐ সব আপত্তি এভাবে পেশ করছে, যেন তারা কোনো কীর্তি আঞ্জাম দিচ্ছে! অথচ এ কীর্তি নয়, নিছক না-ইনসাফি ও যুলুম।
মুনাসিব মনে হচ্ছে, যুক্তিসঙ্গত ও সন্তোষজনক জবাব থাকা সত্তে¡ও যে আপত্তিগুলোর কিংবা ‘লাহনে জালী’র যে বিষয়গুলোর খামোখা পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে, তার আংশিক সম্পর্কে নমুনাস্বরূপ কিছু পর্যালোচনা করা যায়।
এক. ইমাম আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহ.-এর নামে চালানো আপত্তি
‘জামে তিরমিযী’তে উদ্ধৃত আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহ.-এর একটি বক্তব্য ভুল বুঝে কেউ কেউ এ আপত্তি করেছে যে, তিনি এই হাদীসকে অপ্রমাণিত বলেছেন। অথচ পাঠকগণ দেখেছেন, আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহ. নিজেই এ হাদীসের একজন রাবী। তিনি সুফিয়ান ছাওরী রাহ. থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। সুনানে নাসায়ী’র বরাতে আমরা তা উল্লেখ করেছি। 

‘জামে তিরমিযী’তে আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহ.-এর বক্তব্যটি সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। তবু তাতে যা কিছু আছে আগে তা দেখুন:
وقال عبد الله بن المبارك: قد ثبت حديث من يرفع، وذكر حديث الزهري، عن سالم، عن أبيه، ولم يثبت حديث ابن مسعود أن النبي صلى الله عليه وسلم لم يرفع إلا في أول مرة.
অর্থাৎ ইবনুল মুবারক রাহ. বলেন, যারা রাফয়ে ইয়াদাইন করেন, তাদের (দলীল-উপস্থাপনের) হাদীস প্রমাণিত। এ কথা বলে তিনি ইবনে উমর রা. এর হাদীসের আলোচনা করেছেন। (এবং বলেছেন) ইবনে মাসউদ রা.-এর মাধ্যমে বর্ণিত এ হাদীস প্রমাণিত নয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমবার ছাড়া আর কোথাও রাফয়ে ইয়াদাইন করেননি ।Ñজামে তিরমিযী, ইবনে উমর রা.-এর হাদীস (২৫৫)-এর আলোচনা
লক্ষণীয়! এখানে ইবনুল মুবারক রাহ. এ কথা বলেননি, রাফয়ে ইয়াদাইন না-করা বিষয়ক সমস্ত হাদীস অপ্রমাণিত। আর না এ কথা বলেছেন, রাফয়ে ইয়াদাইন না-করা বিষয়ে ইবনে মাসউদ রা.-এর মাধ্যমে বর্ণিত কোনো হাদীস প্রমাণিত নয়। এখানে তিনি একটি বিশেষ রেওয়ায়েত সম্পর্কে আপত্তি করেছেন। তা হল, কোনো কোনো রাবী ইবনে মাসউদ রা.-এর বরাতে তাঁর এই মৌখিক হাদীস বর্ণনা করেছে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কোথাও হাত ওঠাননি।’ ইবনে মাসউদ রা.-এর মাধ্যমে বর্ণিত এই মৌখিক হাদীস সম্পর্কেই ইবনুল মুবারক রাহ. বলেছেন, এটি প্রমাণিত নয়। যদিও বিভিন্ন মুহাদ্দিসের মতে একেও অপ্রমাণিত বলা সঠিক না।
কিন্তু আলোচিত হাদীসটি, যাতে ইবনে মাসউদ রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায দেখানোর লক্ষ্যে নামায পড়েছেন এবং তাতে তিনি (ইবনে মাসউদ রা.) শুধু প্রথম তাকবীরের সময় দুই হাত উঠিয়েছেন, অন্য কোথাও ওঠাননিÑ এর ব্যাপারে ইবনুল মুবারক রাহ. অপ্রমাণিতের হুকুম আরোপই করেননি। বরং তিনি নিজে সুফিয়ান ছাওরী রাহ. থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
মুহাদ্দিসগণের সাধারণ নীতি হল, কোনো বিষয়ে যদি একাধিক হাদীস থাকে, যার মধ্যে কিছু সহীহ, কিছু সহীহ নয়, তাহলে তারা যেটা সহীহ নয় সেটাকে সহীহ নয়ই বলেন। এর অর্থ এই না যে, এ বিষয়ক সকল হাদীসকে তারা সহীহ নয় বলছেন।
ইবনুল মুবারক রাহ.-এর বক্তব্যটি আরো বিশদভাবে ‘সুনানে কুবরা’ বায়হাকীতে (২/৭৮) বর্ণিত হয়েছে। সেখানে তিনি রাফয়ে ইয়াদাইনের প্রাধান্য উল্লেখ করা সত্তে¡ও এ কথা বলেছেন, وَأَرَاهُ وَاسِعًا অর্থাৎ আমি হাত ওঠানো, না-ওঠানো দুটোকেই প্রশস্ত মনে করি।

তো ইবনুল মুবারক রাহ.-এর মতে যখন হাত না-ওঠানোরও সুযোগ আছে, তাহলে বোঝা গেল তাঁর কাছে এ পদ্ধতিও কোনো না কোনো হাদীস বা আছার দ্বারা প্রমাণিত।
এর পরও যদি কেউ খামোখা এ পীড়াপীড়ি করে যে, ইবনুল মুবারক রাহ. আলোচিত হাদীস সম্পর্কেই বলেছেন, এটি প্রমাণিত নয়, তাহলে আদবের সাথে আমরা এ কথাই আরয করব যে, এটি ইবনুল মুবারক রাহ.-এর দৃষ্টিতে প্রমাণিত না হলেও তাঁর উস্তায সুফিয়ান ছাওরীর দৃষ্টিতে প্রমাণিত। এমনভিাবে তাঁর উস্তাযদের উস্তাযুল আসাতিযা তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ীর দৃষ্টিতেও প্রমাণিত।[3]

ইমাম ইবনে দাকীকুল ঈদ রাহ. (৭০২হি.)-এর ভাষায়, যদি ধরেও নেওয়া হয়, এটি ইবনুল মুবারক রাহ.-এর মতে প্রমাণিত নয়, তবে এই সনদের তাহকীক করতে কী সমস্যা? এরপর তিনি সনদের তাহকীক পেশ করেছেন এবং দেখিয়েছেন, তাতে অপ্রমাণিত হওয়ার কিছুই নেই। Ñদেখুন: নাসবুর রায়াহ ১/৩৯৫
এ হাদীসে কি ثم لم يعد বাক্য নেই?
অনেক জোরেশোরে এ আপত্তি করা হয় যে, এ হাদীসে ثم لم يعد বাক্যটি সহীহ নয়। এটি কোনো রাবীর ভুল কিংবা তার নিজের পক্ষ থেকে বাড়ানো।
আপত্তির উদ্দেশ্য সম্ভবত এই যে, আলোচিত হাদীসটি দ্বারা রাফয়ে ইয়াদাইন না-করা প্রমাণিত হওয়া এ বাক্যটির উপর নির্ভরশীল। সুতরাং এটি যখন সহীহ নয় তখন এর দ্বারা দলীল পেশ করাও ঠিক হবে না। অথচ এ কথা সঠিক নয় যে, এ হাদীসে ثم لم يعد বাক্যটি সহীহ না, বরং তা নিঃসন্দেহে সহীহ। এ সত্তে¡ও যদি ধরে নেওয়া হয়, এটি সহীহ নয় তবু হাদীসটির বাকি অংশ থেকে সে কথাই প্রমাণিত হয়, যা প্রমাণিত হয় ثم لم يعد বাক্যটি থেকে।
ثم لم يعد
বাক্যটি কেন সহীহ নয়? কে তা বাড়িয়েছে? এ সম্পর্কে দারাকুতনী রাহ.-এর বক্তব্যের সারসংক্ষেপ এই যে, (তাঁর ধারণামতে) ওকী রাহ.-এর শাগরিদ হিম্মানী (যিনি যয়ীফ) এ বাক্যটি বর্ণনা করেন। তাঁর ছিকা শাগরিদ আহমদ ইবনে হাম্বল, আবু বকর ইবনে আবী শাইবা ও ইবনে নুমাইরের বর্ণনায় তা নেই। এমনিভাবে (তাঁর ধারণামতে) সুফিয়ান ছাওরী রাহ.-এর  শাগরিদদের মধ্যে আবু হুযায়ফা (দারাকুতরী রাহ.-এর মতে যার বর্ণনায় অনেক ভুল হয়েছে)[4]  এ বাক্যটি বর্ণনা করেন। তাঁর ছিকা শাগরিদ মুআবিয়া ইবনে হিশামের বর্ণনায় তা নেই।[5]
দারাকুতনী রাহ. পরিষ্কার বলেছেন, এ হাদীসের সনদ সহীহ। তাঁর আপত্তি শুধু এই যে,  ثم لم يعد বাক্যটি মাহফূয নয়...।
وَإِسْنَادُهُ صَحِيحٌ، وَفِيهِ لَفْظَةٌ لَيْسَتْ بِمَحْفُوظَةٍ... ৬[6]
এখানে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, ইমাম দারাকুতনীর মতে এ হাদীসের সনদ সহীহ। কিন্তু যেহেতু তাঁর ধারণা অনুযায়ী ثم لم يعد বাক্যটি ওকী থেকে হিম্মানী আর সুফিয়ান ছাওরী থেকে আবু হুযায়ফা বর্ণনা করেন, তাই একে তিনি সহীহ বলতে প্রস্তুত নন, নতুবা মূল হাদীসটি তাঁর মতে সহীহ। ইমাম আবুল হাসান ইবনুল কাত্তান রাহ. (৬২৮হি.) ‘বায়ানুল ওয়াহামি ওয়ালঈহাম’ কিতাবে (৩/৩৬৫-৩৬৭) দারাকুতনী রাহ.-এর বক্তব্যের এ মর্মই বুঝেছেন। তিনি নিজেও এবং ‘অন্যান্যদের’ উদ্ধৃতিতে বলেছেন, এ হাদীস সহীহ। আপত্তি  শুধু ثم لم يعد বাক্যটি নিয়ে।
অথচ ওকীর ছিকা শাগরিদদের মধ্যে যুহাইর ইবনে হারব, যিনি বড় হাফিযুল হাদীস ছিলেন, তাঁর থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ثم لم يعد বাক্য আছে।[7]  একারণে এ ধারণা সঠিক নয় যে, ثم لم يعد বাক্যটি হিম্মানীর একার বর্ণনা। এমনিভাবে সুফিয়ান ছাওরীর ছিকা শাগরিদদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহ.-এর মত ইমাম ও হাফিযুল হাদীস তাঁর থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ثم لم يعد বাক্য আছে।[8]
তাই এ ধারণাও সঠিক নয় যে, এটি আবু হুযায়ফার একার বর্ণনা। সুতরাং দারাকুতনী রাহ.-এর আপত্তির ভিত্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী এ হাদীস ثم لم يعد বাক্যসহই সহীহ।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, দারাকুতনী রাহ. যে বলেছেন, ওকীর শাগরিদ আহমদ ইবনে হাম্বল, আবু বকর ইবনে আবী শাইবা ও  ইবনে নুমাইরের বর্ণনায় ثم لم يعد বাক্য নেই, তাঁদের বর্ণনায় তাহলে কী আছে? ইমাম আহমদের বর্ণনা তাঁর ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে আর আবু বকর ইবনে আবী শাইবার বর্ণনা তাঁর ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে বিদ্যমান আছে। উভয়ের বর্ণনায় স্পষ্টভাবে এ কথা আছে,  فلم يرفع يديه    إلامرة অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায দেখানোর সময় শুধু একবার দুই হাত উঠিয়েছেন।’[9]
শুধু একবার ওঠানোর অর্থ এটাই যে, দ্বিতীয়বার আর ওঠাননি। আর  ثم لم يعد বাক্যের অর্থও তাই। এতে অতিরিক্ত কিছু নেই।
ওকী রাহ.-এর শাগরিদ ইমাম হান্নাদের বর্ণনা প্রবন্ধের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে স্পষ্টভাবে আছে, فلم يرفع يديه إلا في أول مرة অর্থাৎ ‘শুধু প্রথমবার দুই হাত উঠিয়েছেন।’ এর অর্থও এটাই যে, আর কোথাও ওঠাননি। ওকীর শাগরিদ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল আলআহমাসী, মাহমূদ ইবনে গায়লান ও উসমান ইবনে আবী শাইবাও তাঁর থেকে একই কথা বর্ণনা করেছেনÑ
فلم يرفع يديه إلا في أول مرة
অর্থাৎ ‘তিনি শুধু একবার দুই হাত উঠিয়েছেন।’ এর অর্থ এ ছাড়া আর কী যে, তিনি আর কোথাও হাত ওঠাননি।[10] (চলবে ইনশাআল্লাহ)


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!