"জিহাদ মানে “পবিত্র যুদ্ধ” বলা ভুল।জিহাদ অর্থ চেষ্টা করা।তাই কাফের_বেদ্বীন এবং শয়তানের লড়াইও জিহাদ।এজন্য বলা যায়, কাফেররাও জিহাদ করে এবং শয়তানও জিহাদ করে।যদি কোন চাকুরিজীবি চেষ্টা করে, ভাল কাজ দিয়েই করুক বা খারাপ কাজ দিয়েই করুক, সেটাই হল জিহাদ।"
(দ্রষ্টব্যঃ ডা জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়ম নং ২, পৃষ্ঠা নং ৬৭!! প্রকাশনায়: পিস পাবলিকেশন বাংলা বাজার ঢাকা)
পর্যালোচনা
জিহাদ ইসলামের একটি পরিভাষা -যা মুসলমানদের উপর আরোপিত মহান আল্লাহর হুকুমবিশেষ বা ইবাদত। তার শাব্দিক অর্থ চেষ্টা করা হলেও পারিবার্ষিক ভাবে যে কারো কোনরূপ চেষ্টাকে জিহাদ বলা হয় না, বরং ইসলামের পরিভাষায় জিহাদের অর্থ হল- জান, মাল,যবান, শরীর ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহ তালার পথে ইসলামের শত্রুদের সাথে লড়াই করে সামর্থ ও শক্তি ব্যয় করা।ইসলামে জিহাদ বলতে এটাকেই বুঝায়।
(প্রমানের জন্য দেখুনঃ বাদায়ি'উস সানায়ি, ৯ম খন্ড,পৃঃ ৯৭/ ফতহুল বারী ৬ষ্ট খন্ড, পৃঃ ২/ আল ইক্বনা,২য় খন্ড, পৃঃ ৬১/ নাইলুল আওতার লিশ শাওখানী, ৫ম খন্ড, পৃঃ ৬/ আল মুগনী লি-ইবনি কুদামাহ, ১৩ খন্ড, পৃহ ১০ প্রভৃতি)
সুতরাং কাফিরদের যুদ্ধ বা শয়তানের লড়াই কিংবা কোন চাকুরীজীবীর চেষ্টা-প্রচেষ্টা ইত্যাদি বুঝাতে "জিহাদ" শব্দ কিছুতেই প্রয়োগ হতে পারে না। কেননা এসব কাজ ইসলামের পরিভাষায় জিহাদ বলে গণ্য নয়।
উদাহরণ সরূপ "#হজ্জ" এর শাব্দিক অর্থ ইচ্চা করা, কিন্তু ইসলামের পরিভাষা অনুযায়ী যে কোন কিছুর ইচ্চা করাকে "হজ্জ" নামে অভিহিত করা যায় না। তাই কেউ বাজারে যাওয়ার ইচ্ছা করলে বলতে পারবে না আমি বাজারের "হজ্জ" করছি।
বরং ইসলামের পরিভাষায় ইহরাম বেঁধে পবিত্র কাবা বাইতুল্লাহর তওয়াফ, উকূফে আরাফাহ ইত্যাদি নির্ধারিত ইবাদত করাকেই বলা হয় "হজ্জ"।
অন্য কোন কিছু কে হজ্জ বলা হয় না।
তেমনিভাবে "#সালাত"(নামাজ) শব্দের শাব্দিক অর্থ দোয়া বা প্রার্থনা। ইসলামের পরিভাষায় যে কারো কোনরূপ প্রার্থনাকে "সালাত" বলা যাবে কি? উত্তরটা হবে অবশ্যই"সালাত" বলা যাবে না। তাই হিন্দুরা প্রার্থনা করলে, হিন্দুরা "সালাত" আদায় করছে বলা যাবে না।
অনুরূপভাবে #সাওম শব্দের শাব্দিক অর্থ বিরত থাকা। কিন্তু ইসলামের পরিভাষা অনুযায়ী যে কোন বিরত থাকাকে "সাওম" বলা যায় না। তাই ইসরাঈল ফিলিস্তীনে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকলে বলা যাবে না যে,ইসরাঈল "সওয়াম" পালন করেছে। ঠিক তেমনিভাবে #জিহাদ শব্দের শাব্দিক অর্থ চেষ্টা করা হলেও ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় তা ↑উপরে বর্নিত নির্দিষ্ট অর্থেই ব্যবহৃত হবে। তাই যে কারো কোন রূপ চেষ্টা বুঝাতে জিহাদ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না করলে ভুল হবে।
প্রমান: আল্লাহতা'লার বানী---
انفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার।
- সূরা আত-তাওবা আঃ নঃ ৪১।
আল্লাহতা'লা আরো বলেন
لَـكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ جَاهَدُواْ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ وَأُوْلَـئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ وَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُون
কিন্তু রসূল এবং সেসব লোক যারা ঈমান এনেছে, তাঁর সাথে তারা যুদ্ধ করেছে নিজেদের জান ও মালের দ্বারা। তাদেরই জন্য নির্ধারিত রয়েছে কল্যাণসমূহ এবং তারাই মুক্তির লক্ষ্যে উপনীত হয়েছে।
-সূরা আত-তাওবা আঃ নং ৮৮।
(প্রমানের জন্য আরো দেখুনঃ জামে তিরমিজি হাঃ নং ২৬১৬/ ফাতহুল বারী ৬ষ্ট খন্ড, ২য় পৃঃ/ বাদায়ি'উস সানায়ী, ৯ম খন্ড, পৃঃ ৯৭)
কিন্তু জাকির ইহুদি খৃষ্টানদের লড়াইকে এবং শয়তানের অপকর্মকেও জিহাদ আখ্যা দিয়ে ইসলামের পবিত্র জিহাদ বিধানের মাহাত্ম্যকে ক্ষুণ করেছে।
প্রশ্ন জাগে জাকির কি ইসলামের জিহাদ বিধান নিয়ে মষ্করা করতে চেয়েছে?
তা না হলে কেন সে কোন চাকুরীজীবীর খারাপ কাজের চেষ্টাকেও "জিহাদ বলে আখ্যায়িত করল! এতে তো চুরি,ডাকাতি,সুদ,ঘুষ যেনা-ব্যভিচার ইত্যাদির চেষ্টাও তার দৃষ্টিতে জিহাদ বলে পরিগণিত হবে। নাওজুবিল্লাহ
এটা ইসলামের পবিত্র জিহাদের পরিভাষাকে অবমাননা ও বিকৃত করার ভয়ংকর প্রয়াস। যা করে ডাঃজাকির মারাত্মক গোমরাহী ও কুফুরী করেছে।
হে আল্লাহ তোমার দেয়া নির্দিষ্ট বিধানের ভিতর থেকে আমল করার তওফিক দান করুন।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!