Wednesday, June 28, 2017

দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হতে যেতে চান?

কওমি মাদরাসায় পড়ে আর দেওবন্দ পড়ার স্বপ্ন নেই এমন ছাত্র খুবই কম। তবে সবাই স্বপ্ন পূরণে সফল হয় না সেই রকম হিম্মতের সাথে চেষ্টা না করার দরুন। বিশ্বখ্যাত এই কওমি বিদ্যাপীঠে অনেকেই আসা, ভর্তি হওয়াসহ অন্যান্য তথ্যাদি জানতে উদগ্রীব থাকে। নিচে সংক্ষেপে কিছু তথ্যাদি উল্লেখ করা হল---

আসার পন্থা:
১. সম্ভব হলে ১বছর মেয়াদি একটা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে নিন।
(যেহেতু মোদির দেশ) তাই এক্ষেত্রে যদ্দূর সম্ভব আগেভাগে ভিসার এপ্লাই করাই ভালো। মিথ্যা, ধোকা বা কারচুপির আশ্রয় নিয়ে ভিসা নেওয়া জায়েয হবে না। আহলে ইলম ও ওয়ারিছীনে নবীর জন্য এরূপ করা চরম অশোভনীয় ও অবাঞ্ছনীয়। মনে রাখবেন, দারুল উলূম দেওবন্দে পড়া বা ভর্তি হওয়া শরীয়তের ফেকহী দৃষ্টিতে মুস্তাহাবও নয়। আবার এমনও নয় যে, সেখানের জ্ঞান এ দেশে হাছিল করা যায় না। সেখানে যাওয়া ও ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হওয়া মানে হলো ব্যক্তির একটি আবেগ ও তামান্না পূরণ হওয়া। অতএব এর জন্য মিথ্যা, ধোকা বা কারচুপির আশ্রয় নেওয়া আদৌ জায়েয হবে কি ?? আহলে ইলম ও ওয়ারিছীনে নবীর জন্য এরূপ করা বেড়ায় ধান খাওয়ার মতো হবে। কারণ তারাই তো ইসলামের রক্ষক ও পাহারাদার। যাহোক যারা শরয়ী মাসআলা ঠিক রেখে আসবেন তারা নিচে লক্ষ্য করুন।

২. আসার ক্ষেত্রে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে প্লেইনে আসাই ভালো ।এক্ষেত্রে স্মরণ করে ভিসাতে ‘বাই-এয়া’ অপশন দিতে ভুলবেন না। আর ট্রেনে আসলে কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস দিয়ে দুদিনে সাহারানপুর চলে আসতে পারেন। আর সাহানপুর থেকে আবার ট্রেনে দেওবন্দ।
স্মরণ রাখবেন! ইন্ডিয়ায় চলাফেরার একমাত্র বাহন ট্রেন। তাই অযথা বাস খোঁজলে অতিরিক্ত পেরেশানিতে ভুগতে হবে।
৩. আসার ক্ষেত্রে আবার কলকাতায় এসে ট্রেনের টিকিট কাটতে UP যাবো বলবেন না! অন্যথায় দুই স্টেটের একি মিনিং হওয়ার কারনে উত্তরা প্রদেশ না এসে আন্দ্রা প্রদেশ চলে যাবেন। তাই পরিস্কার বলবেন উত্তরা প্রদেশ “সাহারানপুর” যাবো।
৪. আসার সময় যতটুকু সম্ভব সামান কম আনুন। যাতে ইমেগ্রেশনে ঝামেলা পোহাতে না হয়।
৫. আসার সময় স্মরণ করে কলকাতায় এসে একটা সিম কিনে নিন। অন্যথায় বিপদাপদে সাথি ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না আর দেওবন্দ আসার আগ পর্যন্ত সিমও কিনা সম্ভব হবে না।
→কখন আসবেন?
সম্ভব হলে শা’বানের ভেতরেই আসা ভালো। যেহেতু আসার পর বাংলাদেশী ছাত্রদের কিছুটা ভেতরগত ঝামেলা পোহাতে হয়। তাছাড়া থাকার (পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়) জন্য সিটের সুবিধারও একটা ব্যাপার আছে।
→এডমিশন পরিক্ষার্থীর সংখ্যা?
প্রায় পাঁচহাজার। প্রর্যায়ক্রমে প্রতিবছর তা বাড়ে।
→নেবে?
৪৫০জন। (এর মধ্যেও আবার দেশ ও স্টেইটভিত্তিক কোটা এবং তাকাবুল তো আছেই)
কি কি কিতাব পরীক্ষা নেয়া হয়?
১. মিশকাত
২. হেদায়া ৩-৪
৩. শরহু নুখবাতিল ফিকার
৪. শরহুল আকাঈদ
৫. সিরাজি।
(সব লিখিত)
→পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে?
১. উত্তরপত্র ফুল আরাবীতে দিন।
২. উর্দূ এবং আরাবী সুন্দর খতে লিখুন।
আর বেশি করে শেষ রাত্রিতে তাহাজ্জুদ পড়ে মাওলার দরবারে অশ্রু বিসর্জন দিন। স্মরণ রাখবেন! যোগ্যতাবলে কখনো কিছু হয় না যদি মাওলার রেজা না থাকে। আর দেওবন্দ’র ইতিহাস তো জানা আছেই।
→পরীক্ষা শুরু?
১০ই শাওয়াল। প্রতি পরীক্ষার আগে একদিন খালি আছে।
→রেজাল্ট!
পরীক্ষা শেষ হয়ার ১০দিন পর।
→একান্ত দাখেলা না পেলে?
এই নিয়ত এখনি বাদ দিন। কেনো হবে না? মাওলা তো আছেন ই। অশ্রুর বন্যা ভাসিয়ে দিন।
→একটা ছাত্রের জন্য দেওবন্দ কর্তৃক সুবিধাদি!

১. ভর্তি, কিতাব,থাকা-খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি।
২. মাসে ২০০ রুপি বৃত্তি।
৩. শীতে কম্বল। পুরাতন ছাত্রদের জন্য আদিকালের ঐতিহ্য ধরে রাখতে লেমটন’র জ্বালানি তৈল এবং ঝাড়ু’র টাকা।
৪. একটা সিট।একটা আলমারি।


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!