Saturday, May 13, 2017

সহীহ ওয়ালাদের সহীহ ধোঁকাবাজি ও মিথ্যাচরন

সাধারন মানুষকে ধোঁকাদিতে পারবে কোন হক্কানি আলেমকে নয়। হাদিসের সনদ উল্লেখ করনি ধোঁকাবাজি ধরাপড়বে বলে। আসলে দুষতো তোমাদের না দুষহল তোমাদের প্রতারক শায়েখদের। তোমার দেওয়া হাদিসের মান একটু জেনে নেই

মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাইলের রেওয়ায়েত

তাঁর বিবরণ অনুযায়ী সুফিয়ান ছাওরী রাহ., আসেম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে নামায পড়লাম … তিনি তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর বুকের উপর রাখলেন।

সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

أخبرنا أبو طاهر، نا أبو بكر، نا أبو موسى، نا مؤمل، نا سفيان، عن عاصم بن كليب، عن أبيه، عن وائل بن حجر قال : صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، ووضع يده اليمنى على يده اليسرى على صدره.

-সহীহ ইবনে খুযায়মা ১/২৭২, হাদীস : ৪৭৯

উক্ত হাদীসের রাবী মুআম্মাল বিন ইসমাঈল সম্পর্কে ইমাম বুখারী রহঃ বলেন-

مؤمل بن اسماعيل العدوى مولى آل الخطاب وقيل مولى بني بكر أبو عبدالرحمن البصري نزيل مكة.الخ

وقال البخاري منكر الحديث

অনুবাদ-মুআম্মাল বিন ইসমাঈর আল আদাবী আলুল খিতাবের মাওলা ছিলেন, কারো মতে বনী বকরের মাওলা ছিলেন। তিনি মক্কায় আগত। ইমাম বুখারী রহঃ বলেন, তিনি ছিলেন মুনকারুল হাদীস!। {তাহজীবুত তাহজীব, রাবী নং-৬৮১}

আরো দেখুন

১-তাহজীবুল কামাল, রাবী নং-৬৩১৯

২-খুলাসাতু তাহজীবু তাহজীবিল কামাল-১/৩৯৩

৩-জিকরু মান তাকাল্লামা ফিহী ওয়াহুয়া মুআসসিকুন, রাবী নং-৩৪৭

৪-সিয়ারু আলামিন নুবালা, রাবী নং-৯

৫-লিসানুল মীযান, রাবী নং-৪৯৮৭

৬-মাগানিয়াল আখইয়ার, রাবী নং-২৪১৯

৭-মিযানুল ইতিদাল, রাবী নং-৮৯৪৯

এবার দেখে নিন ইমাম বুখারী রহঃ মুনকারুল হাদীস কাদের বলেন?

ونقل ابن القطان أن البخاري قال: كل من قلت فيه منكر الحديث فلا تحل الرواية عنه.

ইবনে কাত্তান রহঃ বর্ণনা করেন, নিশ্চয় বুখারী রহঃ বলেছেন, যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে আমি “মুনকারুল হাদীস” বলি তার থেকে বর্ণনা করা জায়েজ নয়। {মীযানুল ইতিদাল-১/৬}

ইমাম বুখারী রহঃ এর মতে তিনি যাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন তার থেকে বর্ণনা করা জায়েজই নয়। আর ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে বলেছেন মুনকারুল হাদীস। মানে ইমাম বুখারী রহঃ এর মতানুসারে মুআম্মাল বিন ইসমাঈল থেকে হাদীস বর্ণনা কারা জায়েজ নয়।

শায়খ আলবানীও সিলসিলাতুয যয়ীফার অনেক জায়গায় মুআম্মাল বিন ইসমাঈল কে জয়ীফ বলেছেন এবং তাঁর সম্পর্কে ইমামগণের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন।
দেখুন : সিলসিলাতুয যয়ীফা ১/১৩১; ২/২৪৬, ৩/১৭৯; ৩/২২৭; ৪/৪৫৫ ইত্যাদি।

আলবানী সাহেব বলছেন হাদীসটির সনদ জঈফ। সেই সাথে এটি ত্রুটিপূর্ণ। মুআম্মাল বিন ইসমাঈল সাহেবের মুখস্ত শক্তি ছিল খুবই দুর্বল। এত কিছুর পরও নাকি হাদীস সহীহ!!!

বর্ণনাকারী মুনকার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। সনদ দুর্বল। তারপরও হাদীস সহীহ? বাহ! একেই বলে বিচার মানি তালগাছ আমার। দুর্বল স্মৃতিশক্তির দুর্বল বর্ণনাকারীর জঈফ হাদীস নাকি আবার সহীহ।

এ বিষয়ে আসলে আমাদের কিছুই বলার নেই। আল্লাহ তাআলা হক বুঝার ক্ষমতা কারো কাছ থেকে কেড়ে নিলে আমরা শত চেষ্টা করেও তাদের হেদায়াতের আলোয় আনার ক্ষমতা রাখি না।

মুফতী মাহফুজুর রহমান


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!