মসজিদের ইমাম ও খতিবগণ প্রত্যেক এলাকার দ্বীনী যিম্মাদার। ইতিবাচক কাজের পাশাপাশি হেকমতের সাথে সকল ফেতনার মোকাবেলা করাও তাদের বড় দায়িত্ব। এর জন্য কিছু প্রস্তুতি নেয়া আবশ্যক। যেমন,
.
👉১) মতপার্থক্যপূর্ণ মাসআলার দলিল ভালোভাবে বুঝে নেওয়া এবং যেহেনে হাজির রাখা। সাধারণ মুসল্লিদের সামনে তা সহজ ও বলিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করা।
.
👉২) দলিলসমৃদ্ধ নির্ভযোগ্য পুস্তিকা মুসল্লিদের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া।
.
👉৩) পূর্বের যামানায় ‘আহলে হাদীস’ মানে ছিলো হাদীস-বিশারদ মুহাদ্দিস, যারা সদাসর্বদা হাদীসের চর্চা-গবেষণায় ব্যাপৃত থাকতেন। তাঁরা ইজমা এবং কিয়াসকেও শরীয়তের দলিল গণ্য করতেন।
.
কিন্তু বর্তমানে হাদীস চর্চা করুক বা না করুক, যে ব্যক্তি মাযহাবের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের মন মতো হাদীস মানে, ইজমা-কিয়াস অস্বীকার করে, বিভিন্ন মাসআলায় আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ (কোরআন-সুন্নাহ ও জামাআতে সাহাবার সমন্বিত মত ও পথের অনুসারীগণ)-এর আকিদা-আমলের বিরোধিতা করে সে-ই আহলে হাদীস!
.
👉৪) হাদীস শরীফে ‘উগলূতাত’ করতে (উল্টাপাল্টা অবান্তর প্রশ্ন করে কাউকে পেরেশানিতে ফেলে দিতে) নিষেধ করা হয়েছে। আহলে হাদীস ভায়েরা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর অনুসারীদেরকে ‘উগলূতাত’-এর মাধ্যমে পেরেশান করে থাকে। আপনি তাদের ‘উগলূতাত’ সম্পর্কে সজাগ থাকুন।
.
যেমন তারা প্রশ্ন করে, নবীযুগে কি চার মাযহাব হানাফী মালেকী ইত্যাদি ছিলো? আপনি বলুন, সিহাহ সিত্তাহ সহীহ বোখারী সহীহ মুসলিম ইত্যাদি কি নবীযুগে ছিলো? আসলে হাদীস তো নবীযুগেরই, সংকলকের নাম হিসাবে বলা হয় সহীহ বোখারী সহীহ মুসলিম ইত্যাদি। ঠিক তেমনি মাযহাব ও ফিকহ নবীযুগ থেকে ছিলো। তবে সংকলনের হিসাবে বলা হয় হানাফী মালেকী ইত্যাদি।
.
কখনো তারা প্রশ্ন করে ফিকহ মানেন না কি হাদীস মানেন? আপনি বলুন, ফিকহ মানা এবং হাদীস মানা একই কথা। কারণ ফিকহ তো হাদীসে বর্ণিত মাসআলারই সুবিস্তৃত ও সুবিন্যস্ত সংকলন! আর ফিকহ মানাই হাদীস মানার সরল পথ।
.
অনেক সময় প্রশ্ন করে, আপনি মুসলমান না হানাফী! আপনি বলুন, আপনি ফরিদপুরী না বাংলাদেশী? অর্থাৎ যে ফরিদপুরী সে অবশ্যই বাংলাদেশী। দুয়ের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। তেমনি যিনি হানাফী তিনি অবশ্যই মুসলমান। এদুয়ের মধ্যেও কোনো বিরোধ নেই। যাইহোক তাদের এজাতীয় ‘উগলূতাত’-এর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
.
👉৫) আপনি স্মরণ রাখুন, নবীজীর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী এই উম্মতের জমহুর আলেম-উলামা ও তাঁদের অনুসারীগণ কখনো বাতিল বিষয়ের উপর এক মত হবে না। - (মুসনাদে আহমদ ২৭২২৪)
.
বরং কেয়ামত পর্যন্ত সব যুগে ধরাবাহিকভাবে তাঁদের হকের উপর বিদ্যমান হওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত থাকবে। - (সহীহ বোখারী ৭৩১১)
.
লা-মাযহাবী মতবাদের অতীত ধারাবাহিকতা যেমন নেই তেমনি তাদের সঙ্গে আগের ও সমকালের অধিকাংশ স্বীকৃত আলেম-উলামার সমর্থনও নেই।
.
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে বুঝার তাওফীক দান করুন। আমীন।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!