কল্মি শাক:
স্তন্যদুগ্ধজনক, শুক্রবর্ধক ৷ বায়ুনাশক, কফজনক, ও বলবর্দক | অর্থাৎ রক্ত-প্রবৃত্তিরোধক,মূর্চ্ছা, তৃষ্ণা, দাহ ও ঘর্ম প্রশমক, বাত দূরকারক, পুষ্টিপ্রদ ও শ্রেম্মাজনক |
আমাদের দেশে প্রসূতির স্তন্যদগ্ধ বৃদ্ধির জন্যে কল্মীর ঝোল খেতে দেয়া হয় ৷ হিষ্টিরিয়া রোগী ও মন্তিষ্ক-বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির পক্ষে কলমীশাক বিশেষ উপকারী ৷ বসন্ত রোগের প্রথমেই এ শাকের রস পান করালে বসন্তের গুটিগুলো শীঘ্রই বেরিয়ে পড়ে এবং এ রোগের বিষ কেটে যায়, এ শাকের রস পান করলে যে কোন ফৌড়া শীঘ্রই পেকে যায় ! তবে যাদের শরীরে ফোড়া, খাস বা পাচড়া থেকে পুঁজ পড়তে থাকে, তাদের পক্ষে কল্মীশাক নিষিদ্ধ ৷ কারণ, এতে পুঁজ আরও বেড়ে যায় ও তাড়াতাড়ি শুকাতে চায়না ৷
কবিরাজী ও হাকীমী শাক্তে বলা হয়: আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত কল্মীলাক খেলে নানা রকমের রোগ উৎপন্ন হয়, সুতরাং ঐ সময়ে এ শাক না খাওয়া উচিত !
আবার বাসী কল্মীশাক, বিশেষ ক্ষতিকর, সেজেন্য এ শাক টাটকা তুলে অন্প আঁচে রান্না করে খাওয়া উচিত ৷ এক দিনের শাক একদিনেই খাওয়া যুক্তিসংগত
কবিরাজী শাস্ত্র মতে কলমীশাক প্লীহা, রক্তপিত্ত ও অর্শ রোগে বিশেষ উপকারী এবং বায়ু, পিত্ত ও কফ ত্রিদোষ নিবারন করে ৷ কলমীশাকের ডগা এক ছটাক মাত্রায় রস পান করলে বিষ নষ্ট হয় ও বিষ কেটে যায় ৷
আর্সেনিক ও আফিং এর বিষে: এ দু'টি বেশি পরিমাণে খেয়ে শরীরের বিষক্রিয়ায় রোগী যদি বমি করতে শুরু করে, তবে ৩৫ থেকে ৭০ মিলিটার পরিমাণ এ শাকের রস খাওয়ালে বিষক্রিয়া বিনষ্ট হয়ে যায় ৷ তখন রোগীর মৃত্যু- আশঙ্কা থাকে না৷ সনে ফুসকা রোগে কলমীশাকের পাতা ভালভাবে বেটে সেটা গরম করে সুনে লাগাতে হয় ৷ ফুসকা পেকে গেলে, তবে কলমীপাতার রস দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে ৷ তিন থেকে চারদিনের মধ্যে স্তনের ফুলা কমবে এবং শক্ত ভাবটা নরম হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে ৷ তাছাড়া বসে যাওয়া দুধ তরল হয়ে বেরিয়ে আসবে ৷
ফোঁড়ার মুখ না হলে: ফৌড়া পেকে ভিতরে পুঁজ জমে আছে ৷ কিন্তু ফৌড়ার মুখ না হওয়ায় পুঁজ বের হতে পারছে না ৷ ফলে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে | এরকম ক্ষেত্রে পুঁজ বসতে শুরু করলে কষ্ট চর্তুগুণ বেড়ে যায় ৷ কলমীশাকের ডগা ও শিকড় বেটে ফৌড়ার ওপর পুরু করে লাগিয়ে দিলে মুখ হয়ে পুঁজ-রক্ত বের হয়ে যাবে।
তরল বীর্য ও স্বপ্নদোষ: এ শাকের রস ৩ চামচ এবং অশ্বগন্ধার মূলের গুড়া দেড় গ্রাম গরুর এক কাপ দুধে মিশিয়ে রাতে শোবার সময় একবার করে খেলে বীর্য গাঢ় হবে এবং স্বপ্নদোষও বন্ধ হবে৷
প্রসৃতি মহিলাদের বা মেয়েদের স্নায়বিক দুর্বলতায়: দীর্ঘদিন রোগ ভোগের পর অথবা সন্তান প্রসব হলে মহিলাদের শরীর সাধারণ ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে ৷ আবার কোন কোন ক্ষেত্রে স্নায়বিক দুর্বলতাও দেখা দেয় ৷ কল্মী-কাণড ও পাতা বেটে তার রস ২০ মিলি লিটার এক কাপ ঠাণ্ডা দুধ ও এক চামচ মিসরীর গুঁড়া মিশিয়ে রাজ সকালে একবার করে খেলে স্নায়বিক ও সাধারণ দুর্বলতা, উভয় ক্ষেত্রেই উপকার পাওয়া যায় ৷ তরে নিয়ম করে অন্ততঃ দু'সপ্তাহ খেতে হবে৷
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!