Tuesday, June 4, 2019

আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী হাফিঃ এর রমজান।


জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহতামীম ও শায়খুল হাদীস আকাবের ও আসলাফের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি আল্লামা কাসেমী হাফিঃ  শায়েখ জাকারিয়্যা ( রহঃ) এর জা-নশীন  মুফতি মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী ( রহঃ) এর অন্যতম খলিফা।

আল্লামা কাসেমী হাফিঃ  পুরো রমজানটাই ইতিকাফে কাটান।জাতীয় কোনো সংকট কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে  মসজিদ থেকে বের হলেও দ্রুত মসজিদে ফিরে আসেন।রমজানে সাধারণত সাক্ষাত প্রদান করেন না এবং কথাও বলেন না।

পুরো মসজিদে  ইতিকাফকারীদের পদভারে মুখরিত তবে আলেম উলামার সমাগম বেশী থাকে। সাধারণ লোক থাকে কম। বিভিন্ন মাদ্রাসার মুহাদ্দিস,  মুহতামিম,শায়খুল হাদীস, মুদাররিস, সদ্য ফারেগ তরুণ আলেমগণ সব চেয়ে বেশী ভীড় জমান।

রমজানের শুরু থেকে মসজিদে তারাবীহ এর নামাজের জন্য দুই জন অবিজ্ঞ হাফেজ নিযুক্ত আছেন যারা খুবই ধীরে ধীরে তারতিলের সাথে তারাবীহ আদায় করেন।
প্রায় দেড়/দুই  ঘন্টা লেগে যায় এই তারাবীতে।নামাজের পর সুরা ইয়াসিনের আমল, দরুদ ও সালাতও সালাম পাঠের আমল।

 বার্ধেক্যজনিত অসুস্থতার  কারণে একেবারে দুর্বল।লান্সের সমস্যার কারনে প্রচন্ড কাশি আবার পায়েও তাঁর বড় সমস্যা  ঠিকমত দাড়াতে পারেন না।তবুও কখনও বসে নামাজ পড়েন না এই দুর্বল বৃদ্ধ মানুষটি, ইবাদতে কখনো দুর্বল হননি। এই পরিণত বয়সেও যেন যুবককেও হার মানান।

এরপর কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়ার পর আবার শুরু হয় গভীর রাত পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত এরপর আরেকটু বিশ্রাম নিয়ে তাহাজ্জুদ এর নামাজ শুরু করেন। তাহাজ্জুদ নামাজে লম্বা ক্বেরাত, লস্বা রুকু ও সেজদা।কখনো কখনো পা গুলো ফুলে যায় আর তখনই খুশীতে আত্মহারা কারণ  আজ আরেকটি সুন্নাত আদায় হয়েছে।

তাহাজ্জুদ শেষ করে সেহেরী করেন যৎ সামান্য। শুধু সুন্নাত পালনের জন্যই সেহেরীতে শরীক হন।সেহেরী শেষ করে ফজরের নামাজের সময় হলে, জামাতে নামাজ আদায় করে ঘুমোতে যান। তবে সবাই নয়। কিছু সংখ্যক ইশরাক পড়ে ঘুমাতে যান।

সকাল ৯ টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকেন সবাই। মুলত এটাই বিশ্রামের সময়। আর বাকী অন্য সময়  ইবাদতে মশগুল তাকেন।সকালে ঘুম থেকে উঠে তালীম শুরু হয়। বিভিন্ন কিতাবাদী তালীম করা হয়। একজন পড়েন, আর বাকী সাথীরা শুনেন। মাঝে মাঝে শায়েখ নিজে কথা রাখেন।

এক দেড় ঘন্টা তালীমের পর কোরআন তেলাওয়াতে লেগে যান সবাই। জোহর পর্যন্ত কুরআনুল কারীমের তেলাওয়াত হয়। অনেকে বিভিন্ন কিতাবাদী মুতাআলা করেন।

বাদ জোহর জিকিরের আমল। সম্মিলিত ভাবে বসে নিজ নিজ আসনে জিকির করেন তবে সমশ্বরে নয়।

জিকির শেষ করে আবার তেলাওয়াত। আসর পর্যন্ত চলে।  আসরের পর আবার তালিমের মজলিস। বয়ান শেষ হলে আবার তেলাওয়াতে, ব্যক্তিগত আমল ও দোয়ায় মশগুল হয়ে যান সকলে ইফতার পর্যন্ত।

ইফতারের সময় অনেকে লম্বা দুআ করেন। দুআয় অনেক পরিবর্তন হয়ে যায় মজলিস।

মাগরীবের পরে আওয়াবীনের আমল। সেখানেও কুরআন শুনতেন।  ইতিকাফের সাথীরা দুই তিন জন করে আওয়াবীন এ কুরআন শুনেন। আওয়াবীন শেষ হলে তারাবীর জন্য সবাই তৈরী হোন।

রমজানের প্রতিটি মুহূর্তকে গনীমত মনে কদর করেন যেন অযথা সময় নস্ট না হয়ে।শায়েখ জাকারিয়্যা রহঃ এবং মুফতি মাহমুদ হাসান গঙ্গুহী রহঃ এর মজলিসের সৃতিচারণ করে নিজেকে আকাবের ও আসলাফের রঙে রাঙাতে কোন কসুর করেন না।

আল্লাহ আমাদের কেও তাওফিক দিন। আমিন।

শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!