মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কারক হলো গায়রে মুকাল্লিদ,, মুকাল্লিদগণ নয়। বাদশাহ মুযাফফর আদ্দীন আবু সাঈদ কাওকাবুরী ও তার দরবারি আলেম আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মিলে মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কার করেছিলেন।
.
তিনি মিলাদের প্রথা চালু করেছিলেন তাও বছরে এক রবিউল আওয়াল মাসের বার তারিখে।
.
তার রেফারেন্স হচ্ছে,,
দারুল উলূম দেওবন্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা রশীদ আহমাদ গাংগুহী (রহ.)'র ফাতাওয়ার কিতাব— ফাতাওয়ায়ে রশীদিয়া, পৃষ্ঠা ২৪৫
.
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১৩; পৃ. ১৯০; তারীখে ইবনে খাল্লিকান, ৪র্থ খণ্ড; পৃ. ১১৮—১১৯
.
সিয়ারু আ’লামিন নুবালা; খণ্ড ২০; পৃ. ৩৩৬; প্রকাশনায়ঃ মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ; প্রথম সংস্করণঃ ১৪২২ হি.
.
এখানে আরেকটা কথা বলা বাহুল্য যে,, শুধু কাওকাবুরীর দোষ দেয়া যায় না; সাথে তার দরবারি আলেমেরও দোষ দিতে হবে। সেই দরবারি আলেম-ই ত এইটার বৈধতা দিয়েছে।
.
সেই দরবারি আলেমের নাম আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া।
.
আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মীলাদ মাহফিলের বৈধতা ব্যাখ্যা করে ‘‘আত তানবীর ফী মওলিদিল বাশীরিন নাজীর’' (যার অর্থঃ নবীজীর মীলাদ মাহফিলের নূর) নামক কিতাব লিখে। যার ফলে বাদশাহ কাওকাবুরী তাকে এক হাজার দিনার পুরষ্কার প্রদান করে।
.
উক্ত সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত দলিল-প্রমানাদির আলোচনা আপনাদের সমীপে নিম্নে পেশ করা হলো,,,
.
ইতিহাস পরিষ্কার সাক্ষী দেয়, মীলাদের প্রচলন করেছে লা-মাযহাবী। কোনো মাযহাবী নয়।
.
ইতিহাসের কিতাব থেকেই তা প্রমাণ করবো, ইনশাআল্লাহ।
.
এর আগেও বলেছি, আজ আবারও বলছি, সুন্নীদের মাঝে প্রথম মীলাদের আবিষ্কার করেছে, সাহিবুল ইবরিল (ইরাকের ইবরিলের শাসনকর্তা), আল মুযাফফর আবূ সাঈদ ইবনে যাইনুদ্দীন আলী আল কাওকাবুরী। জন্ম ৫৪৯ হিজরী সনে এবং ইন্তেকাল ১৪ ই রমযান, জুমু‘আর রাত ৬৩০ হিজরীতে। তিনি এবং তার দরবারী আলেম শায়খ আবুল খাত্তাব উমর ইবনে দাহিয়া (মৃ. ৬৩৩ হি.) মিলে প্রচলিত মীলাদ চালু করেছে সুন্নীদের মাঝে।
.
এর পূর্বে সর্বপ্রথম তা আবিষ্কৃত হয়, মিসরের ইসমাঈলীয় শিয়াদের হতে। সেটা লম্বা ইতিহাস। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা তাকী উদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে আলী আল মাকরিযী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত কিতাব ‘‘আল খিতাত’' এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। আল খিতাত কিতাবটির কায়রো থেকে ১৯৯৭ সনে প্রথম সংস্করণ বের হয়।
.
এছাড়াও আল্লামা মুহাম্মাদ ইবনে বাখীত আল মূতী (রহ.) তাঁর ‘‘আহসানুল কালাম’' কিতাবে তাছাড়াও আল্লামা আলী মাহফূয (রহ.)ও এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
.
সেটা ছিল প্রথম আবিষ্কার। কিন্তু সুন্নীদের মাঝে প্রথম আবিষ্কার করে, ইবরিলের শাসনকর্তা- আল মুযাফফর এবং তার দরবারী আলেম আবুল খত্তাব মিলে। এ বিষয়ে সকল ঐতিহাসিকগণ একমত। আল্লামা ইবনে কাছীর (রহ.), আল্লামা ইবনে খাল্লিকান (রহ.), আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.), আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ.) সবাই একমত।
.
আল্লামা ইবনে কাছীর (রহ.) তাঁর বিখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ, যা সকলের নিকট এক বাক্যে গ্রহণযোগ্য ‘‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’' কিতাবের ১৩ নং খণ্ডে ১৯০ পৃষ্ঠায়, আল মুযাফফর আবূ সাঈদ ইবনে যাইনুদ্দীন আলী আল কাওকাবুরী সম্পর্কে আলোচনায় লিখেছেন,
.
ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻌﻤﻞ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺍﻟﺸﺮﻳﻒ ﻓﻲ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ
ﻭﻳﺤﺘﻔﻞ ﺑﻪ ﺍﺣﺘﻔﺎﻻ ﻫﺎﺋﻼ . ﻭﻛﺎﻥ ﻣﻊ ﺫﻟﻚ ﺷﻬﻤﺎ ﺷﺠﺎﻋﺎ ﻓﺎﺗﻜﺎ ﺑﻄﻼ ﻋﺎﻗﻼ ﻋﺎﻟﻤﺎ ﻋﺎﺩﻻ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃﻛﺮﻡ ﻣﺜﻮﺍﻩ . ﻭﻗﺪ ﺻﻨﻒ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺍﺑﻦ ﺩﺣﻴﺔ ﻟﻪ ﻣﺠﻠﺪﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺍﻟﻨﺒﻮﻱ ﺳﻤﺎﻩ : ( ﺍﻟﺘﻨﻮﻳﺮ ﻓﻲ ﻣﻮﻟﺪ ﺍﻟﺒﺸﻴﺮ ﺍﻟﻨﺬﻳﺮ ) ، ﻓﺄﺟﺎﺯﻩ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﺑﺄﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ، ﻭﻗﺪ ﻃﺎﻟﺖ ﻣﺪﺗﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﻓﻲ ﺯﻣﺎﻥ ﺍﻟﺪﻭﻟﺔ ﺍﻟﺼﻼﺣﻴﺔ، ﻭﻗﺪ ﻛﺎﻥ ﻣﺤﺎﺻﺮ ﻋﻜﺎ ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﺍﻟﺴﻴﺮﺓ ﻭﺍﻟﺴﺮﻳﺮﺓ . ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺴﺒﻂ : ﺣﻜﻰ ﺑﻌﺾ ﻣﻦ ﺣﻀﺮ ﺳﻤﺎﻁ ﺍﻟﻤﻈﻔﺮ ﻓﻲ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻤﻮﺍﻟﺪ ﻛﺎﻥ ﻳﻤﺪ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺴﻤﺎﻁ ﺧﻤﺴﺔ ﺁﻻﻑ ﺭﺃﺱ ﻣﺸﻮﻱ، ﻭﻋﺸﺮﺓ ﺁﻻﻑ ﺩﺟﺎﺟﺔ، ﻭﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺯﺑﺪﻳﺔ، ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ﺃﻟﻒ ﺻﺤﻦ ﺣﻠﻮﻯ، ﻗﺎﻝ : ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺤﻀﺮ ﻋﻨﺪﻩ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺃﻋﻴﺎﻥ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﺍﻟﺼﻮﻓﻴﺔ ﻓﻴﺨﻠﻊ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻭﻳﻄﻠﻖ ﻟﻬﻢ ﻭﻳﻌﻤﻞ ﻟﻠﺼﻮﻓﻴﺔ ﺳﻤﺎﻋﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﻈﻬﺮ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻔﺠﺮ، ﻭﻳﺮﻗﺺ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻣﻌﻬﻢ، ﻭﻛﺎﻧﺖ ﻟﻪ ﺩﺍﺭ ﺿﻴﺎﻓﺔ ﻟﻠﻮﺍﻓﺪﻳﻦ ﻣﻦ ﺃﻱ ﺟﻬﺔ ﻋﻠﻰ ﺃﻱ ﺻﻔﺔ، ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺻﺪﻗﺎﺗﻪ ﻓﻲ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﻟﻘﺮﺏ ﻭﺍﻟﻄﺎﻋﺎﺕ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﺮﻣﻴﻦ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ، ﻭﻳﺘﻔﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﺮﻧﺞ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﺧﻠﻘﺎ ﻣﻦ ﺍﻷﺳﺎﺭﻯ . ﺣﺘﻰ ﻗﻴﻞ ﺇﻥ ﺟﻤﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﺳﺘﻔﻜﻪ ﻣﻦ ﺃﻳﺪﻳﻬﻢ ﺳﺘﻮﻥ ﺃﻟﻒ ﺃﺳﻴﺮ، ﻗﺎﻟﺖ : ﺯﻭﺟﺘﻪ ﺭﺑﻴﻌﺔ ﺧﺎﺗﻮﻥ ﺑﻨﺖ ﺃﻳﻮﺏ - ﻭﻛﺎﻥ ﻗﺪ ﺯﻭﺟﻪ ﺇﻳﺎﻫﺎ ﺃﺧﻮﻫﺎ ﺻﻼﺡ ﺍﻟﺪﻳﻦ، ﻟﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻌﻪ ﻋﻠﻰ ﻋﻜﺎ - ﻗﺎﻟﺖ : ﻛﺎﻥ ﻗﻤﻴﺼﻪ ﻻ ﻳﺴﺎﻭﻱ ﺧﻤﺴﺔ ﺩﺭﺍﻫﻢ ﻓﻌﺎﺗﺒﺘﻪ ﺑﺬﻟﻚ ﻓﻘﺎﻝ : ﻟﺒﺴﻲ ﺛﻮﺑﺎ ﺑﺨﻤﺴﺔ ﻭﺃﺗﺼﺪﻕ ﺑﺎﻟﺒﺎﻗﻲ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺃﻥ ﺍﻟﺒﺲ ﺛﻮﺑﺎ ﻣﺜﻤﻨﺎ ﻭﺃﺩﻉ ﺍﻟﻔﻘﻴﺮ ﺍﻟﻤﺴﻜﻴﻦ، ﻭﻛﺎﻥ ﻳﺼﺮﻑ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﺛﻼﺛﻤﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ، ﻭﻋﻠﻰ ﺩﺍﺭ ﺍﻟﻀﻴﺎﻓﺔ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺳﻨﺔ ﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ
.
সংক্ষেপে কিছুটা অনুবাদ উল্লেখ করছি,
.
অর্থাৎ ‘‘সে রবীউল আউওয়াল মাসে মীলাদ মাহফিলের আয়োজন করতো। বাদশাহ’র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শায়খ আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া মীলাদ মাহফিলের বৈধতা ব্যাখ্যা করে ‘‘আত তানবীর ফী মওলিদিল বাশীরিন নাজীর’' (যার অর্থঃ নবীজীর মীলাদ মাহফিলের নূর) নামক কিতাব লিখে। যার ফলে উক্ত বাদশাহ তাকে এক হাজার দিনার পুরষ্কার প্রদান করে। উক্ত বাদশাহ’র কোনো কোনো ঈদে মীলাদুন্নবী’র অনুষ্ঠানে পাঁচ হাজার ভূনা মাথা, দশ হাজার মুরগী এবং ত্রিশ হাজার হালুয়া বা মিষ্টির পাত্র থাকতো। …………’’
.
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ১৩; পৃ. ১৯০; তারীখে ইবনে খাল্লিকান, ৪র্থ খণ্ড; পৃ. ১১৮—১১৯]
.
ইমাম যাহাবী (রহ.) লিখেছেন,
.
ﻭﻗﺎﻝ ﺳﺒﻂ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ ﻛﺎﻥ ﻣﻈﻔﺮ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻳﻨﻔﻖ ﻓﻲ
ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﻟﺪ ﺛﻼﺙ ﻣﺎﺋﺔ ﺃﻟﻒ ﺩﻳﻨﺎﺭ
.
অর্থাৎ ‘‘ইমাম আল জাওযী বলেন, মুযাফফর উদ্দীন প্রতি বছর মীলাদ মাহফিলের জন্য তিন লাখ দীনার খরচ করতো।’'
.
[সিয়ারু আ’লামিন নুবালা; খণ্ড ২০; পৃ. ৩৩৬; প্রকাশনায়ঃ মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ; প্রথম সংস্করণঃ ১৪২২ হি.]
.
প্রমাণ হলো যে কে এই মীলাদ মাহফিলের আবিষ্কারক। এ বার প্রমাণ করবো, সে লা-মাযহাবী, মাযহাব অস্বীকারকারী ছিল।
.
আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ বসরী (রহ.) বলেন,
ﻛﺎﻥ ﻣﻠﻜﺎ ﻣﺴﺮﻓﺎ ﻳﺄﻣﺮ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﺃﻥ ﻳﻌﻤﻠﻮﺍ ﺑﺎﺳﺘﻤﺒﺎﻃﻬﻢ ﻭﺇﺟﺘﻬﺎﺩﻫﻢ ﻭﺃﻥ ﻻ ﻳﺘﺒﻌﻮﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﺣﺘﻰ ﻣﺎﻟﺖ ﺇﻟﻴﻪ ... ﺍﻟﺦ
.
অর্থাৎ ‘‘সে ছিল অপব্যয়ী বাদশাহ। সে তার সময়ের আলেমদের নিজেদের ইস্তিমবাত এবং ইজতেহাদ করে আমল করার নির্দেশ দিতো এবং তাদের যেকোনো মাযহাব অমান্য করার নির্দেশ দিতো; এ অবস্থায় কিছু স্বার্থান্বেষী আলেম ও ফুদ্বালার একটি দল তার প্রলোভনে আটকে পড়ে। তার কথা মতো, রবীউল আউওয়াল মাসে জশনে জুলূস, ঈদে মীলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। সেই সর্বপ্রথম এই বিদ‘আত আবিষ্কার করেছিল।’’
.
আল্লামা মুইযুদ্দীন হাসান আল খোয়ারিজমী (রহ.) তাঁর ‘‘আল কওলুল মু’তামাদ’’ কিতাবেও উল্লেখ করেছেন।
.
এ বার দেখি, তার দরবারী আলেম শায়খ আবুল খাত্তাব ইবনে দাহিয়া কেমন ছিলেন?
.
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) লিখেছেন,
.
ﻛﺜﻴﺮ ﺍﻟﻮﻗﻴﻘﻪ ﻓﻲ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺴﻠﻒ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﺧﺒﻴﺚ ﺍﻟﻠﺴﺎﻥ ﺃﺣﻤﻖ ﺷﺪﻳﺪ ﺍﻟﻜﺒﺮ ﻗﻠﻴﻞ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻓﻲ ﺃﻣﻮﺭ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻣﺘﻬﺎﻭﻧﺎ
.
অর্থাৎ ‘‘সে ইমামগণের এবং পূর্ববর্তী সালাফে সালেহীন আলেমগণের সাথে বেআদবী করতো। সে ছিল অশ্লীল ভাষী, অহংকারী, নির্বোধ, দ্বীন সম্পর্কে সংকির্ণমানা এবং অলস।’'
.
[লিসানুল মীযান; খণ্ড ৪; পৃ. ৩৯৬; বৈরূত থেকে প্রকাশিত।]
.
কাওকাবুরী সম্পর্কে আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ বসরী (রহ.) বলেন,
ﻛﺎﻥ ﻣﻠﻜﺎ ﻣﺴﺮﻓﺎ ﻳﺄﻣﺮ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺯﻣﺎﻧﻪ ﺃﻥ ﻳﻌﻤﻠﻮﺍ ﺑﺎﺳﺘﻤﺒﺎﻃﻬﻢ ﻭﺇﺟﺘﻬﺎﺩﻫﻢ ﻭﺃﻥ ﻻ ﻳﺘﺒﻌﻮﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﺣﺘﻰ ﻣﺎﻟﺖ ﺇﻟﻴﻪ ... ﺍﻟﺦ
অর্থাৎ ‘‘সে ছিল অপব্যয়ী বাদশাহ। সে তার সময়ের আলেমদের নিজেদের ইস্তিমবাত এবং ইজতেহাদ করে আমল করার নির্দেশ দিতো এবং তাদের যেকোনো মাযহাব অমান্য করার নির্দেশ দিতো’’
.
সুতরাং বুঝা গেলো, মীলাদ-কিয়ামের উদ্ভাবক ছিল মাযহাব বিদ্বেষী, লা-মাযহাবী এবং গাইরে মুকাল্লিদ। তাহলে লা-মাযহাবীরা এত উঁচু গলায় চিল্লায় কেন?
.
আমার কিছু কথা:-
এটা পরিষ্কার যে মিলাদ ক্বিয়ামের আবিষ্কার করে বাদশাহ মুযাফফর কাওকাবুরী। এটা জঘন্যতম বিদআত। কারন,,আল্লাহ যেদিন দ্বীন ইসলাম সাকসেসফুল করেছিলেন সেদিন এই প্রথাটি সেই দ্বীন ইসলামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাই এটা ইসলামে নব আবিষ্কৃত প্রথা আর ইসলামে নব আবিষ্কৃতই বিদাত আর প্রতিটা বিদাতই পথভ্রষ্টতা আর পথভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম! তাহলে যারা আজ উচ্চ গলায় মিলাদ ক্বিয়াম জোড়ালোভাবে পালনের তাগিদ দিবে তারা বিদাতি। আর তারাই পথভ্রষ্ট আর তাদের পথভ্রষ্টাতার পরিণাম কি হবে জানেন? তাদের পথভ্রষ্টতার পরিণাম হবে জাহান্নাম।
আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন,
"শুনে রেখ! হাউজে কাউছারের কাছে তোমাদের সাথে আমার দেখা হবে। তোমাদের সংখ্যার আধিক্য নিয়ে আমি গর্ব করব। সেই দিন তোমরা আমার চেহারা মলিন করে দিওনা। জেনে রেখ! আমি সেদিন অনেক মানষু কে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাব। কিন্তু তাদের অনেককে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হবে। আমি বলব : হে আমার প্রতিপালক! তারা তো আমার প্রিয় সাথী-সঙ্গী, আমার অনুসারী। কেন তাদের দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে? তিনি উত্তর দিবেন : আপনি জানেন না যে, আপনার চলে আসার পর তারা ধমের্র মধ্যে কি কি নতুন বিষয় আবিস্কার করেছে। (ইবনে মাজাহ)
অন্য এক বর্ণনায় আছে এর পর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তাদের উদ্দেশে বলবেন :দূর হও! দূর হও!!
.
মিলাদ ক্বিয়াম নবি সা. থেকে শুরু করে সাহাবী,তাবেয়ী,ইমাম মুজতাহিদ, আমাদের আকাবিরগণ কেউই পালন করেন নি ও এর প্রচলনও করেন নি।
আর যে বাদশাহ মিলাদ ক্বিয়ামের প্রচলন ঘটাইছে সেকি শরিয়ত প্রণেতা!?
সুতরাং, বুঝতে পারচেন কি, যারা মিলাদ ক্বিয়াম করেন তারা আসলে কার অনুসরন ও কাকে খুশি করার জন্য মিলাদ ক্বিয়াম করেন??
.
অতএব,,এই জঘন্যতম বিদাত হতে বিরত থাকিতে আমি সকল মুসলমান ভাই-বোনদেরকে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
[ Writing : Mustak Hasan ]
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!