Tuesday, December 6, 2016

ঈদে মিলাদুন নবী সা. ও ইসলাম

মুহা. উবায়দুল্লাহ আসআদ সিলেট আসছে ১২ ই রবিউল আউয়াল, রেজভীগংরা   পালন করবে "ঈদে মিলাদুন নবী"   বিপুল উৎসাহ ও উতকন্ঠার  মধ্য দিয়ে।  সাথে "  ওরসুন নবীর  অনুষ্ঠানের নামে  নানান  বদমাইশি ।

কেউ আবার এসব আয়োজন কে  নবীপ্রেমের আলামত আখ্যাও দিয়ে থাকেন!  নাউযুবিল্লাহ

*নবী সা: কে মহব্বত করতেই হবে,  তা ঈমানের   শর্ত। তাঁর সুন্নাত , তররিকার প্রতি আন্তরিকতা থাকতেই হবে।  সহীহ বুখারি ১৪ নংহাদিস,
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: فوالذي نفسي بيده لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده وولده
  নবী সা. বলেন - আল্লাহর শপথ! তোমাদের কেহ পরিপুর্ণ মু'মিন হতে পারবেনা,  যথক্ষন না  আমি তার নিকট তার সন্তান, পিতা- মাতা ও সমস্ত লোকদের থেকে মহব্বতের পাত্র না হব।

*অন্য হাদিসে  বলেন- কেহ মু'মিন হতে পারবেনা,  যথক্ষন না সে তার খাহেশ কে আমার আনীত বিষয়ের বশিভুত করবেনা।

*তবে প্রশ্ন হল,  প্রচলিত  নিয়মে  রবি. আ. এর ১২ তারিখকেই নির্দৃষ্ট করে  "ঈদে মিলাদুন নবী"  পালন করা,  এজন্য জসনে জুলুসের আয়োজন করা, বিষেস খানার ব্যবস্থা  বা শুভেচ্ছা বিনিময় করা বা জাজল্যমান কোটি টাকা ব্যয়ে মাহফিলের ব্যবস্থা,  বা নবী সা. এর ঈসালে সওয়াবের জন্য তিলাওয়াত করা,  বা গুরু ছাগল জবাই   করা, ইত্যাদি
কুরআন - হাদিসে পাওয়া যায়  ???
অথবা  সাফল্যের সাক্ষ্যপ্রাপ্ত তিন সুনালী যুগ (সাহাবা, তাবেঈন তাবে তাবেঈন)এ  পাওয়া যায়?

*অবশ্য পাওয়া যায়নি এমনকি "ঈদে মিলাদুন নবী " এর নাম মাত্র  কোন কিতাবের বারান্দায় পাওয়া দুরহ।
দ্বীনে ইসলাম  মানুষের খাহেশ   কামনা- বাসনার  উপর নির্ভরশীল নয়,  আবার কোন কাজ কোটি
মানুষও করলে  সুন্নাত হয়না,  দ্বীন হয় না।  যথক্ষন তা শরিয়ত সমর্থিত হবেনা। 
শরিয়ত অসমর্থিত এমন কাজকে সওয়াব মনে করাকে   বিদআত বলে,  যা সরাসরি আল্লাহ ও রাসুলের বিদ্রোহাচরণ।

*শরিয়তের ৪ টি দলিলের কোথাও এর নাম গন্দ্ব ও পাওয়া যায়না,  কুরআনের ৬৬৬৬ টি আয়াত ও হাদিসের হাজারও কিতাব,  সাহাবায়ে  কেরামের ১০০ বছরের স্বর্ণযুগ,  তাবেঈদের ৭০ বছরের সোনালী যুগ,  তাবে তাবেঈদের  গৌরবমণ্ডিত  ৩০ বৎসরে কোথাও পাওয়া যায়নি যে,  ঐসব রাসুল প্রেমিকরা  "ঈদে মিলাদ " নামে নতুন একটি ঈদ উদযাপন করেছেন!  বা তা তাদের মস্তিষ্কে উঁকি মারেনি।

*নবী  সা. মক্কীজীবনের ১৩ বৎসরে নিজের জন্মদিনের ঈদ  করেছেন?
মদনী জীবনে ১বার হলেও  করেছেন?   
রাসুলের প্রেমে মতয়ারা সৈনিক যারা ছিলো রাসুলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ  তারা কোন আয়োজন করেছেন? 
*কোথায় আবু দাজানা রা. উহুদের যুদ্বে মাহবুব কে বাচাতে নিজের শরির চালুনি বানিয়ে শাহাদতের অমিয়সুধা পান করেছেন,।
* কোথায় ঐ ১৪ প্রমিক যারা উহুদের যুদ্বে পিয়ারকে রক্ষা করতে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন! 
*কই মালিক খুদরি রা. যিনি উহুদে মাহবুবের রক্ত চুষে পান করেছেন?
*কোথায় তালহা রা. যিনি নিজ শরির দ্বারা  মাহবুবকে  বাঁচাতে ৭০টির অধিক তীর নিজের শরীরের বরণ করেছেন?
*আব্দুল্লাহ্ বিন  যায়েদ  রা. যিনি  পিয়ার সা. এর ইন্তিকালের শোকে মুহ্যমান হয়ে দোয়া করেছিলেন, “হে আল্লাহ্! আমাকে অন্ধ করে দাও, যেন,
এই চোখ দিয়ে প্রিয়নবীর পরে আর কাউকে দেখতে না হয়।
*অন্যএকজন মহিলা যিনি স্বামী, পিতা ভাইয়ের শাহাদত হওয়া স্বত্বেও বলেছিলেন, 
"হে  আল্লাহর রাসুল আপানাকে পাওয়ার কারণে  আমি যেকোন বিপদ সহ্য করতে রাজি!

*খুবাইব রা. কে যখন শুলিবিদ্বকরে শহিদ করা হচ্ছে,  আবু সুফিয়ান বলল,  তুমি কি চাও তোমার স্থলে মুহাম্মদ সা. আনা হোক?   জবাব আসল,  আল্লাহর কসম!  আমি নিরাপদে থাকবো আর আমার পিয়ারের পায়ে ও কোন খোসা হোক তা সহ্য করতে পারবনা। 
শুনে আবু সুফিয়ান মন্তব্য করল,  আল্লাহর কসম! মুহাম্মদ সা. র সাথীরা যেভাবে তাঁকে ভালবেসে,  আর কেউ নিজেদের নেতা এমন ভালবেসেনা!! 

* উম্মে আইমান রা. নবীজির প্রস্রাব পান কররছেন
* আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের তাঁর রক্ত নিজের পেটে দাফন কররলেন।
* ৬হিজরি হুদাইবিয়ায়   সুহাইল মন্তব্য করলেন.
আল্লাহর কসম!  দুনিয়ায় বহু রাজা বাদসা দেখেছি
তবে মুহাম্মদ সা. র সাথীদের  মত দেখিনি!!
*ওয়াইস করনী  নামক নবীপ্রেমিক, যিনি মাহবুব সা. তিরোধরনের শোকে নিজের 'ছানায়া দাঁত 'ভেঙ্গে দিলেন ( শা'রানীকৃত 'তাবক্বাত)
* ওমর রা. বলেন,  হে আল্লাহর রাসুল সা. আপনাকে নিজের জান ব্যতিত সবকিঠু থেকে বেশী মহব্ব ত করি  ,  বললেন,  না ওমর তুমি পুরিপুর্ণ মু'মিন হতে পারবেনা যথক্ষন  তোমার জান থেকেও আমি  পিয়ার হবনা!   ওমর বলেন, জ্বী এখন আমার প্রাণের চেয়েও বেশী আপনাকে ভালবাসি।
* আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা. যিনি মাহবুব সা. এর প্রতিটি কদমে কদমে চলার চেষ্টা করতেন,  হজ্জে যেই স্থানে মাহবুব দাড়িয়েছেন, নামায পড়েছেন। 
তিনি ও এমন করতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
*আনাস রা. বলেন, আল্লাহর কসম  সাহাবারা কোন দিন এতখুশি হননি, যতখুশি হয়েছেন  মাহবুব সা. এর বাণী ---- মর্ম: যার সাথে যার মহব্বত, তার সাথে তার কিয়ামত।

*ইতিহাসে প্রেম-প্রিতির এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া দুরহ! 
তাহলে এসব নবীপ্রেমিক প্রাণোৎস্বর্গ সাহাবায়ে কেরাম  মাহবুবের প্রেমের জ্বালায় প্রেম-প্রিতি প্রদর্শনের নিদরদর্শন স্বরুপ
"ঈদে মিলাদুন নবী" পালন করেছেন?  বা তাদের হাশিয়ায়ে খেয়ালে "নতুন ঈদ" উঁকি মেরেছে? 

* তাবেঈরা যারা নবীপ্রেমিক হিসাবে আরো বাড়িয়ে ছিলো,  কারণ এইমাত্র মাহবুব চলেগেলেন,  হতবাগা মোরা সামন্যর জন্যই  দর্শন হাসেল হলনা।
তাহলে "প্রমাস্পদের নমুনা স্বরুপ" ঈদ করেছেন?   করেন নাই।   মাহবুবের অন্যন্য পাগল  ওয়াইস করনী রাহ.   তিনি  ইয়েমনবাসীকে নিয়ে "ঈদে মিলাদ " করেছেন?   করেন নি।

মাযহাবের ইমামরা এই ঈদ পালন করেছেন? 
করেন নি।
এবিষয়ে ইমাম মালিক রাহ. বলেন, এই উম্মতের পরবর্তী যুগকে ঐ পন্থায় সংশোধন করা যাবে যে পন্থায় প্রথম যুগ সংশোধন হয়েছিল।
( ইবনে তাইমিয়া, ইক্তিযাউস্.. মুস্তাক্বীম-৩৬৭)

তাহলে এই "ঈদে মীলাদুন নবী" কোথা থেকে আসল?
একেই বলে বিদআত  রাসুলে মাজবুব সা. বলেন
ائشة رضي الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من أحدث في أمرنا هذا ما ليس فيه فهو رد
"যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনে এমন   নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে যা তাতে নেই,  তাহলে তা পরিত্যাজ্য।
সহিহ  বুখারি ২৬৯৭
আল্লাহ তায়ালা আমাদের বুঝার তাওফীক দান করুন। আমীন#
............. চলবে, চলবে, চলবে।


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!