Wednesday, July 26, 2017

অনেককেই দেখছি আল-আকসা মসজিদ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে ডোম অফ দ্যা রক এর ছবি দিয়ে দিচ্ছে,

মূলত এই দুইটি আলাদা স্থাপনা।

১।ডোম অফ দ্যা রক (উপরের হলুদ গম্বুজ) ঃ এই স্থাপনাটি মুসলিম বিশ্বে সচরাচর আল আকসা মসজিদ হিসেবে পরিচিত হলেও এ স্থাপনাটির সুনির্দিষ্ট আরবী নাম قبة الصخرة‎ (Qubbat As-Sakhrah), ইংরেজিতে Dome of the Rock, বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় ‘পাথরের (উপর নির্মিত) গম্বুজ’। ৬৯১ খ্রিষ্টাব্দে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ববাহী বিবিধ কারণে পুরনো জেরুজালেমের পবিত্র ‘টেম্পল মাউন্ট’ (Temple Mount – আরবী الحرم الشريف al Haram ash-Sharif – The Noble Sanctuary) চত্বরের কেন্দ্রস্থলে এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন।
👉১১৮৭ সালের ২ অক্টোবর সুলতান সালাউদ্দিন জেরুজালেম জয় করেন। কুব্বাত আস সাখরাকে পুনরায় মুসলিম স্থান হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এর চূড়ায় স্থাপিত ক্রুশকে সরিয়ে সেখানে ইসলামী চাঁদ স্থাপন করা হয়। নিচে পাথরের চারপাশে কাঠের আবরণ দেয়া হয়। সালাউদ্দিনের ভাতিজা আল মালিক আল মুয়াজ্জাম ঈসা ভবনের পুনর্গঠনের দায়িত্ব পালন করেন।

২।আল-আকসা মসজিদ( নিচের ধূসর রং এর গম্ভুজ)  ঃ জেরুজালেমের টেম্পল মাউন্ট চত্বরে উপরোল্লিখিত ‘ডোম অফ দ্য রক’ স্থাপনাটির ২০০ মিটার দক্ষিণে রয়েছে ধূসর সীসায় (lead) আচ্ছাদিত গম্বুজবিশিষ্ট একটি মসজিদ যা সুনির্দিষ্টভাবে ‘মসজিদ আল-আকসা’ নামে পরিচিত। দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা:) ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম বিজয়ের পর পবিত্র পাথরের দক্ষিণে একটি ছোট মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক এই মসজিদটির পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেন যার কাজ শেষ হয় ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর ছেলে আল-ওয়ালিদের শাসনামলে। কালের পরিক্রমায় বহুবার মসজিদটি সংস্কার ও পুনর্গঠন করা হয় – যোগ করা হয় গম্বুজ, মিম্বর, মিনারত।

👉অনুসন্ধানী প্রতিবেদনঃ  মসজিদুল আকসা, মুসলমানদের প্রথম কিবলা। এটি জেরুজালেমে অবস্থিত। এই মসজিদটি মুসলমানদের অনেক আবেগের একটি বিষয়। কিন্তু এটাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা চলছে!!! বর্তমানে গুগলে সার্চ দিলে মসজিদুল আকসা নামে যে স্বর্ণালী রঙ্গের মসজিদটি রয়েছে তা আসলে সত্যিকারের মসজিদুল আকসা নয়। এটির নাম Dome of the Rock (ডোম অব দি রক)। আরেক টি নাম 'আল শাখরা(Al Sakhrah) মসজিদ'। এর কারন, ইহুদিরা নতুন প্রজন্মকে আল আকসা মসজিদ সম্পর্কে দ্বিধাবিভক্ত করতে চায়। তারা এই মসজিদ সম্পর্কে মানুষকে জানতে দিতে চায়না।মুস্লিমদের চোখের সামনে থেকে আল আসকা মসজিদ মুছে ফেলার একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত - যাতে আমরা মুসলিম রাও না জেনে প্রতিনিয়ত প্রচারনা চালাচ্ছি।

→ এখন আসুন জানি, কেন ইহুদীদের এই চেষ্টাঃ
ইহুদীবাদীরা দাবি করছে, কথিত সোলায়মানের মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর আলআকসা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। কাজেই এটি ধ্বংস করে পুনরায় সেখানে সোলায়মানের মন্দির স্থাপন করতে হবে। ইহুদীবাদীদের এ দাবির কিন্তু ঐতিহাসিক কোন সত্যতা পাওয়া যায় নি। মসজিদুল আকসা এমন একটি প্রাচীন পবিত্র স্থান যা গোটা মানবজাতির সম্পদ।
শুধু আল আকসা মসজিদ নয়, ইসরাইল বাইতুল মোকাদ্দাস বা জেরুজালেমের সকল মুসলিম ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংসের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
বাইতুল মোকাদ্দাসের ইসলামী পরিচিতি মুছে ফেলার লক্ষ্যে ইহুদীবাদীরা সেখানকার বহু মসজিদ ও মুসলিম স্থাপনা ধ্বংস করে সেখানে ইহুদী উপাসনালয় নির্মান করেছে। গত কয়েক বছরে শহরটিতে 'তাওরাতের পার্ক' নামে বহু পার্ক তৈরি করা হয়েছে। ইহুদীবাদীরা কয়েক মাস আগে বাইতুল মোকাদ্দাসের বহু পুরনো একটি মুসলিম কবরস্থান ধ্বংস করেছে। ঐ কবরস্থানে বিশ্বনবী (সাঃ) এর বেশ কয়েকজন সাহাবীর কবর ছিলো।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইহুদিরা পরিকল্পনা করেছে এক সময় তারা আসল মসজিদটিকে ধ্বংস করবে আর এটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তারা আল শাখরা মসজিদ কে দেখিয়ে বলবে মসজিদের কিছু করা হয়নি।

একটু অসতর্কতার জন্য আপনার কান্না কাফেরদের জন্য হাসিঁ ঠাট্টার বস্তুতে পরিনত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

পরিশেষে রাব্বে কারীম, এর কাছে দোয়ার দরখাস্থ হে আমাদের রব আপনি নির্যাতিত নিপিড়িত অসহায় ফিলিস্তিনী মুসলমানদের সাহায্য করুন। আর আল-আকশা মসজিদকে হিফাজত করুন। (আমিন)


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!