Tuesday, July 25, 2017

তাবলীগ জামাতে ৩ দিন, ৪০ দিন, ৩ চিল্লা এগুলি বিদআত নয় তার কয়েকটি প্রমাণ।

হযরত বারা রাঃ বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. ইয়ামান প্রদেশে তাবলীগের উদ্দেশ্যে হযরত খালীদ ইবনে ওয়ালিদ রা. পাঠান। আমিও তাঁদের সাথে ছিলাম। আমরা দীর্ঘ ৬মাস যাবত সেখানে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ অনবরত করে চলেছিলাম, কিন্তু তাদের কেউ তখনো আমাদের দাওয়াত কবুল করছিলো না। অতপর হযরত আলী রা. কে রাসূল সা. আমীরের দায়িত্ব দিয়ে খালীদ রাযিয়াল্লাহু কে ফিরে যেতে বলেন এবং তাঁর সাথে যারা ফিরতে চায় তারা ফিরতে পারবে আর যারা থেকে যেতে চায় তারা থাকতে পারে। আমি হযরত আলী রা. এর সাথে আরো সময় বাড়িয়ে নিলাম।
অতপর, আলী রা. আমাদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করলেন। পরে আমরা কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম, এরপরে তিনি আমাদের মাঝে এগিয়ে এসে রাসূল সা. এর দাওয়াতনামা পড়ে শুনালেন। সাথে সাথে হামদান
গোত্রের সবাই একই সাথে ইসলাম কবুল করে নিলেন।
এই খুশির সংবাদ লিখে হযরত আলী রা. রাসূল সা. নিকট পত্র পাঠালেন। যখন রাসূল সা. উক্ত পত্রখানি পড়লেন, তখন সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। অতপর, মাথা উঠিয়ে বললেন, হামদান গোত্রের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হামদান গোত্রের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
অন্য রেওয়াতে আছে, উক্ত জামাত নিয়ে হযরত আলী রা. ৪ মাস পর ফিরে এলেন, বিদায় হজ্বের সময়। অতএব, উভয় আমীরের নেতৃত্বে আমাদের সময়
অতিবাহিত হলো, প্রায় ১ বৎসর। (দালায়েলুন
নাবাবিয়্যাহ লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১৩২, হায়াতুস
সাহাবাহ, ১ম খ, পৃষ্ঠাঃ ১৭৯/ ১৪০, বুখারী শরীফ ২য়
খন্ড, কিতাবুল মাগাজী।
২.
হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ এর নেতৃত্বে জামাত। ১ম হিজরীর রবিউল আউয়াল মাস থেকে ছয় মাস
পর্যন্ত নাজরান ও ইয়ামেনে অবস্থান করেন।
{বুখারী-২/৬২৩, তাবারী-৩/১২৬, ইবনে
খালদুন-১/৮২৮}
৩.
হযরত আলী রাঃ এর নেতৃত্বে ১ম হিজরীতে চার মাসের সফর হামাদানও ইয়ামেনে। {বুখারী-২/৬২৩,
তাবারী-৩/১৩১-১৩২, ইবনু সাআদ-২/১৬৯-১৭২}
৪.
হযরত জারীর বিন আব্দুল্লাহ রাঃ এর নেতৃত্বে বাজীলাহ ও ইয়ামানে ২ মাসের সফর। {তাবারী-৩/১৫৮, ইবনে সাআদ-২/২৬৬, ইবনে খালদুন-১/৮৪৫}
৫.
হযরত জারীর বিন ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ এর নেতৃত্বে বাজীলাহ ও ইয়ামানে ২ মাসের সফর। {ইবনে খালদুন-২/৮৪৫, তাবারী-৩/১৭৮, বুখারী-২/৬২৫।
৬.
হযরত তামীমে দারী রাঃ এর নেতৃত্বে লাখম উপগোত্রে ৪০ দিনের সফর। {ইবনে সাআদ-১/৩৪৩-৩৪৪, মাজমূআত-৪২-৪৩}

হযরত যায়দ বিন ওহাব রাঃ থেকে বর্ণিত। হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন, সত্যবাদীরূপে স্বীকৃত রাসূল সাঃ আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপকরণ নিজ নিজ মাতৃগর্ভে ৪০ (চল্লিশ) দিন পর্যন্ত বীর্যরূপে অবস্থান করে, এরপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। অনুরূপভাবে ৪০(চল্লিশ) দিন অবস্থান করে। এরপর তা মাংসপিন্ডে পরিণত হয়ে [আগের মত ৪০(চল্লিশ) দিন] থাকে। এরপর আল্লাহ তাআলা ফিরিশতা প্রেরণ করেন। আর তাকে চারটি বিষয় নির্দেশ দেয়া হয়। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২০৮, ৩০৩৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৪৩}
উক্ত হাদীসটিতে লক্ষ্য করুন। মানুষের শারিরিক গঠনপ্রণালীর এক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় পরিবর্তিত হতে সময় নির্দিষ্ট হল ৪০দিন। অর্থাৎ এক সূরত থেকে আরেক সূরতে পরিবর্তন হয় ৪০দিনে। এভাবে তিনটি স্তর পেরোতে হয় ৪০দিন করে করে। এবং এভাবে ১২০ দিন পার হবার পর ওই শিশুর মধ্যে প্রান সঞ্চার করা হয়। এর দ্বারা আশা করা যায় যে, ৪০দিনে একটি ব্যক্তির মানসিক পরিবর্তন হতে পারে।
সর্বশেষ বলতে চাই, তাবলীগের চল্লিশ দিনের চিল্লা বিদআত হলে প্রথমে বিদআত হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্সের দলীলহীন সময়সীমা নির্ধারণ। সেসব যদি বিদআত না হয়, তাহলে চল্লিশ দিনের আলাদা বৈশিষ্ট সম্বলিত হাদীসে পাকে দলীল থাকা সত্বেও চিল্লা কি করে বিদআত হয়?


শেয়ার করুন

0 Comments:

একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!