মসজিদে নোয়াখালী থেকে তাবলীগ জামায়াত আসছে। তাঁদের সাথে একজন নওমুসলিম আছেন। কাফিয়াতে পড়াশোনা করেন।
Al Amin Ansari
আসরের পর খুব কৌতূহল নিয়ে বললাম; আব্দুর রহমান ভাই! আপনি কিভাবে কার দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করলেন? একটু শুনতে চাই!
তিঁনি মিষ্টি একটি হাসি দিয়ে বললেন; আমার এক বন্ধু আছে। ওর নাম আব্দুর রহীম। সে আমার আগেই মুসলমান হয়ে যায়। আর আমার অবস্থা এমন ছিলো যে, আমার বাড়িতে কোনো মুসলমান আসলে, সে চলে যাবার পর আমি তার বসার স্থানকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতাম। কেননা আমি মনে করতাম। একজন মুসলমান বসার কারণে আমার বাসার এ জায়গাটা অপবিত্র হয়ে গেছে। সেসময় আমার অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। এবং আমি এতটাই মন্দ ছিলাম যে, মুসলমানদের দেখলেই রাগ উঠতো।
আমার বন্ধু আব্দুর রহীম মুসলমান হবার পর, এই খবর গোপন রেখেই আমার কাছে মাঝেমধ্যে ইসলাম ধর্মের বিষয়াদি বর্ণনা করতো। সে আমাকে বলতো! ইসলামের ঐ বিধানটা কত সুন্দর। ঐ জিনিসটা কত চমৎকার। প্রথমপ্রথম এসব আমার কাছে খারাপ লাগলেও আস্তে আস্তে খুব ভালোলাগতো শুরু করলো। আমি চিন্তা করে দেখতাম ঠিকই তো! তখনি আমি চুপিচুপি ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করতে আরম্ভ করলাম। সর্বশেষ আমি দেখলাম, এটাই আসল ও সত্য ধর্ম। আমার দিলের পরিবর্তন আসলো। আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া।
আব্দুর রহীম আমার অবস্থা বুঝতে পেরে একদিন এসে বললো; দোস্ত! চল্ আমরা মুসলমান হয়ে যাই। এটা শুনতেই আমার মন খুশিতে ভরে উঠলো। আমি আব্দুর রহীমকে বললাম; আমি তোকে এটা বলবো- বলবো করে ভাবছিলাম। কিন্তু, ভয়ে বলতে পারিনি। এরপর আমরা দু'জন এক মাওলানার কাছে যেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম। মুসলমান হবার পর তিঁনি আমার নাম রাখলেন আব্দুর রহমান আর বন্ধুর নাম রাখলেন আব্দুর রহীম।
ইসলাম গ্রহণের পরে আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে নামাজ পড়তে আরম্ভ করলাম। মাঝেমধ্যে জামাতে সালাত আদায় করতে বহুদূর চলে যেতাম। এর কিছুদিন পরই রমজান মাস চলে আসলো। আমরা কৌশলে রমজানের রোজাও রাখলাম। তখন এতটাই ভালোলাগা কাজ করছিলো যে, ভাষায় প্রকাশ করার মত না।
অতঃপর একদিন আব্দুর রহীম আমাকে বললো; দোস্ত! একটা কথা বলবো? আমি সরলমনে বললাম; বল, সে হামদ পাঠ করে বললো; আমি তোর অনেক আগেই মুসলমান হয়ে গিয়েছিলাম। আমি চাই নাই আমার প্রিয়তম বন্ধু অমুসলিম থেকে জাহান্নামি হয়ে যাক। তাই তোকে এভাবে কৌশলে দাওয়াত দিয়েছি। ওর কথা শুনতেই আমার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। মনেমনে বললাম; এটাই তো আসল বন্ধুর পরিচয়,এবং তখন এটাও জানলাম। আমরা যে হুজুরের কাছে মুসলমান হয়েছিলাম। সে মাওলানার কাছেই আব্দুর রহীম আরো কয়েকমাস আগেই মুসলমান হয়েছে। এবং তখনি ওর নাম আব্দুর রহীম রাখা হয়েছিলো।
আব্দুর রহমান ভাইয়ের কথা শুনে মনেমনে বললাম; একজন অমুসলিম মুসলমান হয়ে তাঁর বন্ধুকে দাওয়াত দিয়ে মুসলমান বানাচ্ছে। আর আমরা মুসলমান হয়ে কোনো অমুসলিমকে দাওয়াত দিচ্ছি না। কোনোমতে গা বাঁচিয়ে আরও বলে বেড়াই। মুসলমানদেরকেই ঠিক করতে পারতেছিনা অমুসলিমকে কি দাওয়াত দিবো?
অথচ এক ইয়াহুদীর লাস দেখে রাসুল ( সা.) দাঁড়িয়ে গিয়ে ছিলেন। তিঁনি আফসোস করেছিলেন। আমি থাকা অবস্থায় একজন উম্মত ঈমান হারা হয়ে বিদায় নিলো।
তাই, দাওয়াতের কাজ ব্যাপকভাবে সবখানে হওয়া চাই। রাব্বে কারীম সেই তাওফিক দান করুন।
(ঘটনা আজ থেকে ৪ বছর আগের। এমনি এক পবিত্র রমজানে...। যখন মুন্সীগন্ঞ্জ সদরে পশ্চিম দেওভোগ শাহি মসজিদে তারাবী পড়াইতাম।
ReplyDeleteallah tala tader ka kobul koren