সকল ভেদাভেদ ভুলে এক কালিমার ভিত্তিতে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক, হেফাজতে ইসলামের আমীর শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।
তিনি বলেন, ইসলামের পাঁচটি ভিত্তি যথা- কালিমা, নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত মুসলমানগণ পরিপূর্ণভাবে মেনে চলছে না। এই পাঁচটি ভিত্তি পরিপূর্ণভাবে মেনে চললে মুসলমানদের ইহ ও পরকালীন জীবন হবে পরিপূর্ণ শান্তির জীবন। এই পাঁচটি ভিত্তি মনেপ্রাণে পরিপূর্ণভাবে মেনে চলতে পারলে কোন মুসলমান অন্যায়, অপরাধ, চুরি, ডাকাতি, ঘুষ, মদ, জুয়া, জেনা-ব্যভিচার, মারামারি, হানাহানি, অপরের সম্পদ লুটপাটের মতো অপরাধে জড়াবে না। সঠিক উপায়ে যাকাত আদায় করলে সমাজে কোন ফকীর-মিসকীন ও গরীব থাকবে না। ইসলামের সকল বিধানই মানব কল্যাণের জন্যে। আজকে আমরা ইসলামকে না মেনে শান্তি খুঁজি। অথচ ইসলামেই রয়েছে প্রকৃত শান্তির চাবিকাঠি।
আজ (শুক্রবার) এশিয়ার অন্যতম বিখ্যাত ও প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, তাক্বওয়া তথা খোদা ভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অপরদিকে আল্লাহ্র ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে জুলুম-অত্যাচার, অপরের অধিকার হরণ, জেনা-ব্যভিচার, খুন-খারাবিসহ অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারো পক্ষে শরীয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা, কোন অন্যায়, অপকর্ম, সন্ত্রাসে লিপ্ত হওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাক্বওয়া, আর এই তাক্বওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মুসলমানগণ নানাভাবে পর্যুদস্ত ও নির্যাতিত হচ্ছে। মুসলমানদেরকে এই দুর্দশা থেকে রেহাই পেতে পূর্ণাঙ্গ তাক্বওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানী শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী অভিযোগ করে বলেন, আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের অনৈক্য আর নিজ ধর্মের মধ্যে কতিপয় গোমরাহ মতবাদ ও ধর্মবিরোধীর কারণেই ইসলাম নির্মুলবাদি ভোগবাদিরা নিজেদের স্বার্থে এটাকে কাজে লাগাচ্ছে। ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। আর ইসলামী শিক্ষায়ও কোন প্রকার সন্ত্রাসের স্থান নেই।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, আল্লামা তফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, আল্লামা মুফতী নূর আহমদ, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা মুফতী মুজাফফর আহমদ, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, ড. মাওলানা আফম খালেদ হোসেন, মাওলানা সলীম উল্লাহ, মাওলানা মুফতী জসীম উদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী, মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা সৈয়দুল আলম আরমানী, মাওলানা আজিজুল হক আল-মাদানী, মাওলানা নোমান ফয়জী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী প্রমুখ।
0 Comments:
একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই!